মহড়া: আইজল ম্যাচের প্রস্তুতিতে ক্রোমার সঙ্গে টনদোম্বা। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
সন্মুগম বেঙ্কটেশ এবং স্ট্যানলি রোজারির মধ্যে আশ্চর্য মিল।
দুই কোচেরই রণনীতি গতি ঝড়ে প্রতিপক্ষকে উড়িয়ে দেওয়া। আগের ম্যাচে বেঙ্কটেশের চালে ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে চমকে দিয়েছিলেন ইন্ডিয়ান অ্যারোজের তরুণ ফুটবলারেরা। আজ, শুক্রবার কল্যাণী স্টেডিয়ামে পরীক্ষা স্ট্যানলির আইজল এফসির। তবে এ বার ইস্টবেঙ্গল কোচ মারিয়ো সতর্ক। গতির বিরুদ্ধে গতিকে অস্ত্র করেই দলকে জয়ের সরণিতে ফেরাতে মরিয়া তিনি।
কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার মহড়ায় বৃহস্পতিবার সকালে যুবভারতী সংলগ্ন মাঠে মারিয়ো শুরু করলেন রিলে রেস দিয়ে! ফুটবলারদের ছ’টি দলে ভাগ করে দেন। চার কোণে চারটি দল। মাঠকে মাঝামাঝি দু’ভাগে বিভক্ত করা সেন্টার লাইনে যেখানে গিয়ে সাইড লাইনে মিশেছে, সেখানে আরও দু’টি দল দাঁড়িয়ে রয়েছে। ব্যাটনের বদলে আনসুমানা ক্রোমা, খাইমে সান্তোস কোলাদোদের হাতে রয়েছে ফুটবল। মারিয়ো বাঁশি বাজানোর সঙ্গে সঙ্গেই প্রচণ্ড গতিতে দৌড়ে এসে বল ক্রোমারা তুলে দিলেন মাঠের মাঝখানে সাইড লাইনের ধারে দাঁড়ানো সতীর্থদের হাতে। তিনি আবার বল তুলে দিলেন আর এক প্রান্তে অপেক্ষারত ফুটবলারদের হাতে। এর পরে শুরু হল হাতের বদলে বল পায়ে দৌড়ে গিয়ে পাস দেওয়া।
মিনিট কুড়ি মহড়ার পরে তৃপ্ত মারিয়ো যখন ম্যাচ অনুশীলন শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তখনই ঘটে গেল বিপর্যয়। দেখা গেল ডান পায়ের গোড়ালি হাত দিয়ে চেপে ধরে মাঠে পড়ে আছেন খুয়ান মেরা গঞ্জালেস। যন্ত্রণায় কুঁকড়ে রয়েছে মুখ। মাঠে দৌড়ে গেলেন ফিজিয়ো। উৎকণ্ঠা নিয়ে সতীর্থেরাও চলে এলেন। আইসপ্যাক বেঁধে দিলেন স্পেনীয় তারকার পায়ে। কিন্তু মাঠে আর নামতে পারলেন না মেরা। খোঁড়াতে খোঁড়াতে মাঠের বাইরে গিয়ে বরফের বাক্সে গোড়ালি ডুবিয়ে বসে থাকলেন। যদিও মাঠ ছাড়ার সময়ে মেরা বললেন, ‘‘আমার চোট গুরুতর নয়। আইজলের বিরুদ্ধে খেলতে কোনও সমস্যা হবে বলে মনে হয় না।’’
এই মরসুমে বিবর্ণ ইস্টবেঙ্গলে মেরাই একমাত্র ব্যতিক্রম। আইজলের বিরুদ্ধে অগ্নিপরীক্ষার আগে দলের সেরা মিডফিল্ডার চোট পেয়ে অনুশীলন না করে মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে লাল-হলুদ শিবিরে। এই মুহূর্তে দলের যা বেহাল অবস্থা, কোচ মারিয়োর মতো ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদেরও এক মুহূর্ত স্বস্তিতে থাকার উপায় নেই।
অ্যারোজের বিরুদ্ধে লাল কার্ড দেখে আগেই ছিটকে গিয়েছেন স্ট্রাইকার মার্কোস খিমেনেস দে লা এসপারা মার্তিন। তাঁর পরিবর্তে আইজলের বিরুদ্ধে শুরু থেকে খেলার সম্ভাবনা প্রবল ক্রোমার। তাঁর সঙ্গী হতে পারেন আলেসান্দ্রো মেনেন্দেসের কোচিংয়ে ‘ব্রাত্য’ হয়ে যাওয়া বিদ্যাসাগর সিংহ। তাঁর গতিকে কাজে লাগিয়েই আইজলকে হারাতে চান তিনি। এ ছাড়াও প্রথম একাদশে ফেরার সম্ভাবনা প্রবল আর এক বিদেশি কাশিম আইদারার। চোটের কারণে বিদেশিহীন অ্যারোজের বিরুদ্ধে তিনি খেলতে না পারায় প্রবল চাপে পড়ে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গলের রক্ষণ। কারণ, স্পেনীয় ডিফেন্ডার একেবারেই ছন্দে নেই। যুবভারতীতে আই লিগের পরের ম্যাচগুলোয় ক্রেসপিকে লাল-হলুদ জার্সিতে দেখা যাবে কি না, নির্ভর করছে শুক্রবারের পারফরম্যান্সের উপরেই।
আইজলের বিরুদ্ধে লড়াই অবশ্য আরও কঠিন ইস্টবেঙ্গলের। স্ট্যানলির দলের ফুটবলারদের অধিকাংশই অভিজ্ঞ। শুধু তাই নয়। ছ’জন বিদেশির সকলেই সুস্থ। আইজল কোচ বলছিলেন, ‘‘এই মুহূর্তে খুব একটা ভাল জায়গায় নেই ইস্টবেঙ্গল। আগের ম্যাচের ভুল শুধরে নিয়ে ছেলেরা অনেক আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছে। ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া ওরা।’’ তিনি যোগ করেন, ‘‘মাত্র দু’জন বিদেশি নিয়ে আই লিগে অভিযান শুরু করেছিলাম। এই ছয় বিদেশিকে আরও আগে পেলে লিগ টেবলে ভাল জায়গায় থাকতাম।’’
শুক্রবার আই লিগে: ইস্টবেঙ্গল বনাম আইজল এফসি (কল্যাণী, বিকেল ৫.০০, ডি স্পোর্টস চ্যানেলে)।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy