উৎসর্গ: আলেসান্দ্রোর মুখ লাগানো সেই জার্সি নিয়ে ফুটবলারেরা। ছবি: টুইটার।
চেন্নাই সিটি ০ • ইস্টবেঙ্গল ২
মারিয়ো রিভেরা দলে যোগ দেওয়ার আগেই টানা তিন ম্যাচে হারের ধাক্কা কাটিয়ে জয়ের সরণিতে প্রত্যাবর্তন ইস্টবেঙ্গলের। নেপথ্যে মার্কোস খিমেনেস দে লা এসপারা মার্তিন-খাইমে সান্তোস কোলাদো যুগলবন্দি। ৮ ম্যাচে ১১ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবলের চতুর্থ স্থানে উঠে ফের খেতাবি দৌড়ে ঢুকে পড়ল ইস্টবেঙ্গল।
গত রবিবার মোহনবাগানের বিরুদ্ধে ডার্বিতে হারের পর থেকেই নাটকীয় ভাবে পরিস্থিতি বদলে যেতে শুরু করে লাল-হলুদ শিবিরে। মার্কোসকে নিয়ে বাড়তে থাকা ক্ষোভের আবহে পদত্যাগ করেন কোচ আলেসান্দ্রো মেনেন্দেস গার্সিয়া। দেশে ফিরে গেলেও পুরনো দলের ম্যাচের দিকে নজর ছিল তাঁর। ইস্টবেঙ্গলের জয়ের পরে আলেসান্দ্রো টুইট করেন, ‘‘আগের মতো আবারও বলছি, আমরা দুর্দান্ত দল। একটা পরিবারের মতো। সঙ্গে রয়েছেন প্রাণোচ্ছ্বল সমর্থকেরা। তোমাদের সকলের জন্য আমি গর্বিত। ধন্যবাদ। এ ভাবেই ইস্টবেঙ্গল প্রত্যেক মুহূর্তে আনন্দে মেতে উঠুক।’’ জয়ের পরে ড্রেসিংরুমে প্রাক্তন কোচের মুখ লাগানো একটি জার্সি নিয়ে ছবিও পোস্ট করেছেন ফুটবলারেরা টুইটারে।
গত বারের আই লিগ চ্যাম্পিয়ন চেন্নাই সিটি এফসির বিরুদ্ধে শনিবার কোয়েম্বত্তূরে সহকারী কোচ বাস্তব রায় প্রথম একাদশে পিন্টু মাহাতোর জায়গায় খেলান ব্রেন্ডন ভানলালরেমডিকাকে। আর গোলে লালথুয়ামাওয়াইয়া রালতের পরিবর্তে মিরশাদ মিচুকে। এই দু’টি পরিবর্তনই বদলে দিয়েছিল ইস্টবেঙ্গলকে। খুয়ান মেরা গঞ্জালেস, খাইমে সান্তোস কোলাদোর সঙ্গে জুটি বেঁধে আক্রমণে ঝড় তুললেন ব্রেন্ডন। মাঝমাঠে বিপক্ষের আক্রমণ থামানোর দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নিলেন লালরিনডিকা রালতে ও কাশিম আইদারা। এই পরিস্থিতিতে ম্যাচের ১৪ মিনিটেই নিজেদের পেনাল্টি বক্সের মধ্যে বল বিপন্মুক্ত করতে গিয়ে হাতে লাগান চেন্নাইয়ের আনন্দরাজ। পেনাল্টি থেকে অবিশ্বাস্য ভাবে চেন্নাই গোলরক্ষক নাউসেত সান্তানার হাতে বল মারেন কোলাদো। একের বিরুদ্ধে এক পরিস্থিতিতে গোলরক্ষকের গায়ে মারেন ব্রেন্ডনও। আর এক বার ফাঁকা গোলের উপর দিয়ে বল উড়িয়ে দেন কোলাদো। প্রথমার্ধেই অন্তত ৩-৪ গোলে এগিয়ে যেতে পারত ইস্টবেঙ্গল।
দ্বিতীয়ার্ধেও এক ছবি। কোলাদোর শট শরীর শূন্যে ভাসিয়ে বাঁচান চেন্নাই গোলরক্ষক। ব্রেন্ডনের একটি গোল বাতিল হয় অফসাইডে। আর এক বার তাঁর শট লাগে পোস্টে। এর পরে আর ক্রোমাকে রিজার্ভ বেঞ্চে বসিয়ে রাখার ঝুঁকি নেননি বাস্তব। ৬৬ মিনিটে ব্রেন্ডনকে তুলে লাইবিরীয় স্ট্রাইকারকে নামান তিনি। আরও চাপ বাড়ে চেন্নাই রক্ষণে। ৬৮ মিনিটে গোল করে ইস্টবেঙ্গলকে এগিয়ে দেন মার্কোস। ৭৬ মিনিটে কোলাদোকে পেনাল্টি বক্সের মধ্যে ফাউল করেন চেন্নাইয়ের জিষ্ণু বালাকৃষ্ণন। মাঠে হাজির প্রায় সাত হাজার দর্শককে অবাক করে ফের পেনাল্টি নিতে এগিয়ে যান কোলাদো। এ বার আর ভুল করেননি স্পেনীয় স্ট্রাইকার। ম্যাচের সেরাও হন তিনি।
ডার্বির পরে মার্কোস-কোলাদোকে নিয়েই ক্ষোভ বাড়ছিল লাল-হলুদ সমর্থকদের মধ্যে। শুক্রবার গোল করেই সমালোচনার জবাব দিলেন মার্কোস ও কোলাদো। ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার প্রাক্তন কোচ আলেসান্দ্রোকে উৎসর্গ করে কোলাদো বলেন, ‘‘পেনাল্টি নষ্ট খেলারই অঙ্গ। তাই আমি উদ্বিগ্ন নই। আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ দলের জয়।’’ উচ্ছ্বসিত বাস্তব বললেন, যাবতীয় কৃতিত্ব ফুটবলারদের। ওরা খেলতে না পারলে কোচেদের কোনও মূল্য নেই।’’ কী ভাবে বদলে গেল ইস্টবেঙ্গল? বাস্তব বলছেন, ‘‘ফুটবলারদের বলেছিলাম, চাপমুক্ত হয়ে ফুটবল উপভোগ করতে।’’
চেন্নাইকে হারিয়ে লিগ টেবলে চতুর্থ স্থানে উঠে আসার পরেই লাল-হলুদ সমর্থকেরা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করে দিয়েছেন। বাস্তব সতর্ক। বললেন, ‘‘এখনও অনেক ম্যাচ বাকি। এই মুহূর্তে পরের ম্যাচের প্রতিপক্ষ ইন্ডিয়ান অ্যারোজকে নিয়েই ভাবছি।’’
ইস্টবেঙ্গল: মিরশাদ মিচু, কমলপ্রীত সিংহ (আভাস থাপা), মেহতাব সিংহ, আশির আখতার, অভিষেক অম্বেকর, ব্রেন্ডন ভানলালরেমডিকা (আনসুমানা ক্রোমা), কাশিম আইদারা, লালরিনডিকা রালতে (টনদোম্বা সিংহ), খুয়ান মেরা গঞ্জালেস, খাইমে সান্তোস কোলাদো ও মার্কোস খিমেনেস দে লা এসপারা খিমেনেস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy