যুযুধান: কিবুকে (বাঁ দিকে) বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন না সুব্রত। ফাইল চিত্র
ডুরান্ড কাপ দিয়ে মরসুম শুরু হচ্ছে। এবং সেটা মিনি ডার্বি দিয়েই। এ রকম ঘটনা কলকাতা ফুটবলে কখনও ঘটেনি।
যুবভারতীতে তাই শুক্রবার চমকপ্রদ এক লড়াইয়ের মঞ্চ হাজির বাংলার ফুটবলে। মোহনবাগানের কোচ হিসেবে প্রথমবার মাঠে নামছেন কোনও স্প্যানিশ। সঙ্গে চার স্পেনের ফুটবলার। সবুজ-মেরুনের কিবু ভিকুনার বিরুদ্ধে আবার মহমেডান কোচ হিসাবে থাকবেন সুব্রত ভট্টাচার্য। কোচ এবং ফুটবলার হিসেবে যিনি অতীতে মোহনবাগানকে অসংখ্য ট্রফি দিয়েছেন। বুধবার অনুশীলনের পরে এই তথ্য টিম ম্যানেজমেন্টের এক সতীর্থের কাছ থেকে জেনে কিবু অবাক হয়েছেন। ‘‘তাই না কি! এই ক্লাবে খেলেছেন উনি। ওঁকে তো দেখতে হবে,’’ বলে হেসেছেন শিল্টন পালদের কোচ। কিবু যখন হাসছেন, তখন রেড রোডের পাশে মহমেডান মাঠে অনুশীলন করাচ্ছেন সুব্রত। সেখান থেকে বেরিয়ে দু’বারের জাতীয় লিগ জয়ী কোচের মন্তব্য, ‘‘মোহনবাগানে স্প্যানিশ কোচ রয়েছে তো কি হয়েছে। বিদেশি কোচ কোথায় কি করেছে, সব জানা আছে। ও সব নিয়ে আমি ভাবছি না। কিবু কেমন কোচ, সেটা ম্যাচেই বুঝে নেব। খেলবে তো ছেলেরা। পরিকল্পনা ঠিক থাকলেই সফল হওয়া যায়।’’
দুই প্রধানে এ বার স্প্যানিশ কোচ। মহমেডান বিদেশি কোচ থেকে সরে এসে সফল বঙ্গসন্তানের উপর ভরসা রেখেছে এ বার। ফলে স্প্যানিশ বনাম বঙ্গ কোচের মগজাস্ত্রের লড়াই দেখতে যে যুবভারতীতে ভালই দর্শক আসবেন, বলাই যায়। বুধবার থেকেই টিকিট কেনার লম্বা লাইন পড়েছে।
বিদেশি বাছাইয়ের ক্ষেত্রে এ বার চমক দিয়েছে মোহনবাগান। তাদের চার বিদেশিই আবার একই দেশের— স্পেনের, এটা কখনও হয়নি মোহনবাগানে। কোচ কিবু বুধবারও বুঝতে দেননি চার জনের মধ্যে কোন তিনজনকে খেলাবেন। পেটের গন্ডগোলের জন্য ফ্রান মোরান্তা অনুশীলন করেননি। চোট সত্ত্বেও সকালে পুরো সময় মাঠে বল পায়ে ছিলেন সালভো চামোরো। এ দিনই সই করা ফ্রান গনসালেস ও জোসেবা বেতিয়াও নিজেদের অন্যদিনের মতোই তৈরি করছেন মাঠে নামার জন্য। কিবু ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে সবাইকে খেলালেও সেখানেই ইঙ্গিত দিয়েছেন, চামোরো খেলছেনই। রিয়াল মাদ্রিদ ‘বি’ দলে খেলে আসা এবং দলের সব চেয়ে নজরকাড়া স্প্যানিশ গনসালেসও প্রথম একাদশে থাকবেন। বাকি একটি পজিশন নিয়ে ফ্রান ও মোরান্তার মধ্যে লড়াই হবে। সবুজ-মেরুন কর্তারা বহু দিন পরে মরসুম শুরুর ম্যাচ থেকেই চার বিদেশি এনে দিয়েছেন কোচকে। যা পারেনি ইস্টবেঙ্গল। তাদের তিন বিদেশি এ দিন সই করলেও লিগের প্রথম ম্যাচ খেলতে পারবেন না। চতুর্থ বিদেশিকেও এখনও শহরে আনতে পারেনি লাল-হলুদের ফুটবল দল পরিচালকরা।
ডুরান্ডে কিবুর দলের প্রথম প্রতিপক্ষ মহমেডানও তিন জনের বেশি বিদেশি সই করাতে পারেনি এখনও। তাদের তিন বিদেশির কেউই স্প্যানিশ নন। তিন জনেই এ দেশে কোনও না কোনও দলে খেলেছেন গত বছর। আইভরি কোস্টের স্ট্রাইকার আর্থার কোশি গত বছর ছিলেন গোকুলম এফসিতে। ডিফেন্ডার করিম ওমোলোজা ছিলেন মিনার্ভা পঞ্জাবে। উগান্ডার মুদে মুসা গতবার খেলেছিলেন কেরল লিগে। তাদের আইভরি কোস্টের স্ট্রাইকার চার্লস আচা বসে রয়েছেন, প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র না আসায়।
স্প্যানিশরা কেমন খেলবেন, তা দেখতে উদগ্রীব মোহনবাগান সমর্থকেরা। তিকিতাকার সুঘ্রাণ নেওয়ার আশায় টিকিট কাটতে শুরু করেছেন তাঁরা। আর সাদা-কালো শিবির আশা করছে, তাদের তিন আফ্রিকাজাত ফুটবলার বিপক্ষ দলের পাসিং ফুটবল স্তব্ধ করে দেবে।
দুই দলেই পুরানো-নতুন মিলিয়ে প্রচুর জুনিয়র ফুটবলারের উপস্থিতি। মোহনবাগানের গোলকিপার দেবজিৎ মজুমদার বিয়ের পরে সোমবারই যোগ দিয়েছেন অনুশীলনে। তাঁকে কিবু প্রথম একাদশে রাখবেন কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। শেখ ফৈয়াজ, আজহারউদ্দিন মল্লিক, শিল্টন ডি’সিলভা, পি ব্রিটো, সুহেররা থাকতে পারেন দলে। কিবু এ দিন অনুশীলনের আগে টিম মিটিং করেছেন। খোঁজ নিয়েছেন প্রতিপক্ষ সম্পর্কে। আর সুব্রত বললেন, ‘‘মোহনবাগানের খেলা দেখিনি। আমাদেরও ওরা জানে না। ফলে বুঝে শুনে খেলতে হবে।’’
বাংলায় এ বার প্রথম ডুরান্ড হচ্ছে। বুধবার শুরু হয় টিকিট বিক্রি। যুবভারতীতে আজ বৃহস্পতিবার টিকিট বিক্রি হবে। দেশের সবচেয়ে পুরানো এবং ঐতিহ্যশালী এই প্রতিযোগিতায় তিন প্রধান, আইএসএল ও সেনা দল খেলছে। উদ্বোধন শুক্রবার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy