Advertisement
০৫ অক্টোবর ২০২৪
পুণের মাঠে বেন ‘স্ট্রোকস’ থামানোর অগ্নিপরীক্ষা বিরাট বাহিনীর
Team India

স্পিন জুটি ব্যর্থ, ফেরানোর দাবি উঠছে চহালকে

কুলদীপ যাদব এবং ক্রুণাল পাণ্ড্যকে দেখে মনেই হচ্ছে না, বিন্দুমাত্র সমস্যাও তাঁরা তৈরি করতে পারছেন বলে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২১ ০৬:৪০
Share: Save:

যদি আপনি বিরাট কোহালি হন, দেশের মাটিতে স্পিনারদের নামের পাশে এই তথ্য রাতের ঘুম চলে যাবে। কী সেই তথ্য? না, ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে চলতি সিরিজে দু’টি ওয়ান ডে ম্যাচে ৩৫ ওভারে ২৮৩ রান গলিয়েছেন। ওভার প্রতি রান দিয়েছেন ৮.০৯। উইকেট মাত্র একটি। দেখে গুলিয়ে যাবে, খেলা কোথায় হচ্ছে, দেশে না বিদেশে?

কুলদীপ যাদব এবং ক্রুণাল পাণ্ড্যকে দেখে মনেই হচ্ছে না, বিন্দুমাত্র সমস্যাও তাঁরা তৈরি করতে পারছেন বলে। সুনীল গাওস্কর তো বলেই দিয়েছেন, ক্রুণাল ব্যাট হাতে দারুণ করছেন। কিন্তু পঞ্চম বোলার হিসেবে তাঁকে ভাবা করা যায় না। গাওস্করের মতে, ‘‘পাণ্ড্য ভাইরা মিলে দশ ওভার করতে পারে। ক্রুণালকে দিয়ে একা দশ ওভার করানো যাবে, এমন ভাবা যাচ্ছে না। তাই যুজ়বেন্দ্র চহালের মতো বোলারকে আনতে হবে।’’ বীরেন্দ্র সহবাগের মতো কেউ কেউ সওয়াল করছেন, যুজ়বেন্দ্র চহাল কী দোষ করলেন যে, মাত্র একটা ম্যাচে মার খেতেই তাঁকে ব্রাত্য করে দেওয়া হল? সহবাগের ঝাঁঝালো প্রশ্ন, কে এল রাহুল তো ম্যাচের পর ম্যাচ রান না পেলেও খেলে যান। তা হলে বোলারদের ক্ষেত্রে অন্য নিয়ম কেন?

শুধু স্পিনার নয়, ভারতের পেস বিভাগকেও এলোমেলো দেখাচ্ছে। নতুন বলে ভুবনেশ্বর কুমার ছাড়া কাউকে তেমন ভয়ঙ্কর দেখাচ্ছে না। যশপ্রীত বুমরা, মহম্মদ শামি নেই। প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ বা শার্দূল ঠাকুর নতুন বলে প্রভাব ফেলতে পারছেন না। ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীরা একমত হবেন একটি বিষয়ে। চহালকে আজ, রবিবারের কার্যত ‘ফাইনাল’ ম্যাচে প্রথম একাদশে আনতেই হবে। না হলে এই ইংল্যান্ড ব্যাটিংকে থামানো যাবে না। দ্বিতীয় ওয়ান ডে-তে জনি বেয়ারস্টো, বেন স্টোকসরা কুড়িটি ছক্কা মেরেছেন। সেখানে ভারতীয়রা মেরেছিলেন ১৪টি ছক্কা।

আর শুধু কি বোলিং নিয়েই চিন্তা থাকছে? ব্যাটিং নীতিও তো কপালে ভাঁজ ফেলার মতো। ইংল্যান্ড শুরু থেকেই অতি আগ্রাসী ভঙ্গি নিচ্ছে। তাদের দুই ওপেনার জেসন রয় এবং জনি বেয়ারস্টো ভয়ডরহীন, বিধ্বংসী ব্যাটিং করেন। তাঁরা দু’জনে মিলে ওপেনিং জুটিতে ১৩টি শতরানের জুটি গড়েছেন, যা ইংল্যান্ডের ওয়ান ডে ক্রিকেটে রেকর্ড। তিন নম্বরে রয়েছেন বেন স্টোকস। যিনি শুক্রবারের ম্যাচে ১১ বলে ৪৯ রান করেন। তা-ও এক রানের জন্য সেঞ্চুরি পাননি স্টোকস, যা তিনি প্রয়াত বাবাকে উৎসর্গ করতে চেয়েছিলেন। সেই অপূর্ণতাই না ফের খুঁচিয়ে তোলে অলরাউন্ডারকে।

সেখানে ভারতীয় ব্যাটিং এখনও পুরনো আমলের অতি সাবধানতা নীতি নিয়ে চলছে। মাইকেল ভন বলেছেন, ভারতের ৪০ ওভার পর্যন্ত ঝুঁকি না নিয়ে ব্যাট করার প্রবণতা ২০২৩ সালের বিশ্বকাপ গলিয়ে দিতে পারে হাত থেকে। নিজেদের দেশের মাঠেই সেই বিশ্বকাপ খেলবে ভারত। প্রত্যেকটি ম্যাচেই শেষের দিকে ঋষভ পন্থ, হার্দির পাণ্ড্য, ক্রুণাল পাণ্ড্যরা ঝড় তুলে ভাল জায়গায় স্কোর পৌঁছে দেবেন, এমন ভাবাটাও বিলাসিতা। এক দিন তাঁদের ব্যাট না চললেই কিন্তু তিনশো পার করবে না দল।

ইংল্যান্ড এবং ভারতের ইনিংসের তুল্যমূল্য বিচার করলে দেখা যাবে, প্রথম তিরিশ ওভার পর্যন্ত সব সময় রানের গতিতে এগিয়ে বেয়ারস্টোরা। তার কারণ, তাঁরা প্রথম থেকেই রান তোলার দিকে নজর দেন। যাতে পরের দিকে আস্কিং রেট বেড়ে গিয়ে প্রবল চাপ না তৈরি হয়। অইন মর্গ্যান অধিনায়ক হওয়ার পর থেকেই এই রণনীতি নিয়ে ব্যাটিং করে চলেছে ইংল্যান্ড। এ ভাবেই তারা বিশ্বকাপ জিতেছে। কোহালির দলের কাছে সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ, স্টোকসদের ঝড় থামানো। তার জন্য প্রথম একাদশে পরিবর্তন লাগবে। যেমন কুলদীপের জায়গায় চহাল খেলবেন বলে আশা করা যায়। কুলদীপকে ভীষণই ছন্দহীন দেখাচ্ছে। ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, এত সাড়া জাগিয়ে উঠে আসা কুল-চা জুটিকে আর কখনও একসঙ্গে দেখা যাবে কি না? যা পরিস্থিতি, যুগলবন্দি দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা কম। ক্রুণাল পাণ্ড্য ব্যাট হাতে প্রথম ম্যাচে সকলকে চমকে দিলেও স্পিনার হিসেবে দাগ কাটতে ব্যর্থ। রবীন্দ্র জাডেজার বিকল্প তিনি কোনও মতেই নন। কোহালিদের দেখতে হবে, পাণ্ড্যদের বড় ভাইকে খেলিয়ে যাওয়া হবে না কি ওয়াশিংটন সুন্দরকে আনা হবে? তুলনায় ইংল্যান্ডের আদিল রশিদ এবং মইন আলিকে নিয়ে তৈরি স্পিন জুটিকে বেশি ধারালো দেখাচ্ছে। ইয়র্কার বিশেষজ্ঞ বাঁ হাতি টি নটরাজনই বা কোথায়? তাঁকে কি শুধুই রিজার্ভ বেঞ্চে বসিয়ে রাখার জন্য দলে নেওয়া হয়েছে?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE