যুগলবন্দি: তিরন্দাজি বিশ্বকাপে জোড়া সোনা স্বামী-স্ত্রী অতনু ও দীপিকার। স্ত্রী-ই প্রেরণা, বলছেন অতনু। টুইটার
গুয়াতেমালায় অনুষ্ঠিত তিরন্দাজি বিশ্বকাপে ভারতীয়দের জয়জয়কার অব্যাহত। রবিবার মহিলাদের দলগত রিকার্ভ বিভাগে সোনা জয়ের পরে সোমবার অতনু দাস ও তাঁর স্ত্রী দীপিকা কুমারি ব্যক্তিগত বিভাগেও সোনা জিতলেন। যার ফলে তিরন্দাজি বিশ্বকাপে এ পর্যন্ত সেরা ফল ভারতীয়দের। তিনটি সোনা-সহ ভারতীয়দের পদকের সংখ্যা চারটি।
বিশ্বের প্রাক্তন এক নম্বর মহিলা তিরন্দাজ দীপিকার এটি বিশ্বকাপ থেকে তৃতীয় সোনা জয়। অন্য দিকে, তাঁর স্বামী, বঙ্গসন্তান অতনু পুরুষদের ব্যক্তিগত রিকার্ভ ফাইনালে জিতে এই প্রথম বিশ্বকাপ থেকে সোনা পেলেন। এই পারফরম্যান্সের সৌজন্যে দীপিকা ও অতনু দু’জনেই চলতি মরসুমের তিরন্দাজির বিশ্বকাপ ফাইনালের জন্য যোগ্যতা অর্জন করেছেন।
এ দিন, সাইয়ের তরফে টুইট করে জানানো হয়, ‘‘বিশ্বকাপ থেকে তৃতীয় সোনা ও সব মিলিয়ে মহিলাদের ব্যক্তিগত বিভাগে রিকার্ভে ইভেন্টে বারোটি পদক পেয়েছেন দীপিকা। অন্য দিকে, বিশ্বকাপ থেকে ব্যক্তিগত রিকার্ভ ইভেন্টে প্রথম ব্যক্তিগত সোনার পদক পেয়েছেন অতনু।’’
দু’বছর সম্পর্কের পরে গত বছর জুনে ঝাড়খণ্ডের মেয়ে দীপিকাকে বিয়ে করেন বাংলার ছেলে অতনু।
বিশ্বকাপ থেকে তাঁদের দু’জনের এই সোনার সাফল্যের পরে অতনু বলেন, ‘‘আমরা দু’জনে একসঙ্গে সফর করি, অনুশীলন করি, প্রতিযোগিতায় নামি। এ বার প্রতিযোগিতাতেও দু’জনে একসঙ্গে জিতছিও। আমরা দু’জনেই পারস্পরিক পছন্দের ব্যাপারে ওয়াকিবহাল।’’ যোগ করেন, ‘‘আমার এই সাফল্যের পিছনে দীপিকার অবদান অনেকটা। আমি ভাবতাম দীপিকার মতো ছন্দে আমি পৌঁছতে পারছি না। যা দেখতে পেলেই রেগে যেত দীপিকা। তার পরে বুঝিয়ে বলত, আমার সময় আগে এসেছে। তোমার সময়ও আসবে। পরিশ্রম করে যাও।’’
উল্লেখ্য, বিশ্বকাপে রিকার্ভ বিভাগে এটি ভারতীয়দের সেরা পারফরম্যান্স। দলগত বিভাগে একটি সোনা ও ব্যক্তিগত বিভাগে জোড়া সোনা। ২০০৯ সালে ক্রোয়েশিয়ায় জয়ন্ত তালুকদারের ব্যক্তিগত রিকার্ভ ইভেন্টে সাফল্যের পরে পুরুষদের ব্যক্তিগত ইভেন্টে এটি সেরা সাফল্য বিশ্বকাপ তিরন্দাজির মঞ্চে। এ ছাড়াও রবিবারেই মিক্সড রিকার্ভ বিভাগে অতনু ও অঙ্কিতা ভকত জুটি ৬-২ ফলে হারিয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে। যার ফলে ব্রোঞ্জ পান ভারতীয়েরা।
মহিলাদের ব্যক্তিগত রিকার্ভ বিভাগে তৃতীয় বাছাই দীপিকা ফাইনালে হারান মার্কিন তিরন্দাজ অষ্টম বাছাই ম্যাকেঞ্জি ব্রাউনকে। ম্যাচের ফল দীপিকার পক্ষে ৬-৫ (৯-৯)। তার আগে সেমিফাইনালে মেক্সিকোর প্রতিযোগী আলেজান্দ্রা ভ্যালেন্সিয়াকে ৭-৩ হারান দীপিকা।
ফাইনালে বিশ্বের ছয় নম্বর মহিলা তিরন্দাজ দীপিকা প্রথমে ৩-১ এগিয়ে থাকলেও ব্রাউন তৃতীয় ও চতুর্থ সেটে সমতা ফিরিয়ে আনেন। শেষে পর্যন্ত ফাইনালে জেতার পরে দীপিকার প্রতিক্রিয়া, ‘‘হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সময় হৃদস্পন্দনের শব্দে স্নায়ুর চাপ বেড়ে যাচ্ছিল। দীর্ঘদিন পরে ফাইনালে খেললাম। তবে এই ফাইনাল আমাকে আত্মবিশ্বাসের শীর্ষে থেকে ভাল পারফরম্যান্স করতে সাহায্য করেছে।’’
ভারতীয় দলে আরও স্মরণীয় মুহূর্তটি আসে অতনুর ব্যক্তিগত রিকার্ভ বিভাগে জয়ের পরে। যে ফাইনালে দীপিকার স্বামী অতনু ৬-৪ হারান স্পেনের তিরন্দাজ ড্যানিয়েল কাস্ত্রোকে। এর আগে বিশ্বকাপে অতনুর সেরা পারফরম্যান্স ছিল ২০১৬ সালে অ্যান্টালিয়ায় ব্রোঞ্জ প্লে-অফে চতুর্থ হওয়া।
এ বারের ফাইনালে কাস্ত্রোর বিরুদ্ধে প্রথম তিন সেটে পিছিয়ে থাকার পরে পরের দুই সেটে বিপক্ষকে পিছিয়ে দেন তিনি। অতনুর কথায়, ‘‘অবিশ্বাস্য অভিজ্ঞতা। স্বপ্ন সত্যি হল অবশেষে। বিশ্বকাপ থেকে প্রথম সোনার জন্য প্রবল পরিশ্রম করেছি। এ বার তার মূল্য পেলাম। দারুণ লাগছে। কারণ, বিশ্বকাপ থেকে প্রথম ব্যক্তিগত সোনার পদক পেলাম।’’ যোগ করেছেন, ‘‘শেষের দিকে, তির ছোড়ার সময়ে অতীত বা ভবিষ্যতের কথা মাথায় রাখিনি। বাস্তবে পা রেখেই এগিয়েছিলাম। নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। সামনেই অলিম্পিক্স। তার জন্য ঠিক রাস্তাতেই এগোচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy