ভরসা: টেস্ট সিরিজে বুমরাই সেরা অস্ত্র অধিনায়ক কোহালির। ফাইল চিত্র
ক্রিকেট জীবনে তাঁদের দু’জনের দ্বৈরথ ছিল সব চেয়ে চর্চিত বিষয়। কে ভুলতে পারবে ২০০১-এর সেই বিখ্যাত সফর। এবং ইডেনে টস করার সময় অস্ট্রেলীয় অধিনায়ককে দাঁড় করিয়ে রেখে দেওয়া ভারত অধিনায়কের রণনীতি?
অবসরের পরে এখন স্টিভ ওয় এবং সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় কিন্তু পুরনো সে সব টক্কর ভুলে বন্ধু। সম্প্রতি ভারত-অস্ট্রেলিয়া ওয়ান ডে সিরিজের সময়ে ওয়াংখেড়েতে দু’জনকে পাশাপাশি বসে খেলা দেখতে দেখা গিয়েছে। এ বার সৌরভের দিনরাতের টেস্টের ঘোষণাকে স্বাগত জানালেন স্টিভ। বলে দিলেন, ভারত যে এই চ্যালেঞ্জটা গ্রহণ করছে, তা খুবই প্রশংসনীয়। মনে করিয়ে দিতেও ভোলেননি যে, অস্ট্রেলিয়ায় দিনরাতের টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতার স্বাদই অন্য রকম।
বার্লিনে একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে স্টিভ বলেছেন, ‘‘এটা দারুণ খবর। দুর্দান্ত একটা ম্যাচ হতে চলেছে। অস্ট্রেলিয়ায় দিনরাতের টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা কেউ ভুলতে পারবে না। দুর্দান্ত পরিবেশ থাকে।’’ এখানেই না থেমে যোগ করছেন, ‘‘অবশ্যই এটা একটা নতুন চ্যালেঞ্জ এবং এই প্রজন্মের সেরাদের সামনে সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার সুযোগ।’’ সৌরভের মতোই তাঁর মত, টেস্ট ক্রিকেটকে রক্ষা করার জন্য দিনরাতের ম্যাচ গুরুত্বপূর্ণ। ‘‘যদি দিনরাতের টেস্টে কেউ সেঞ্চুরি করে বা পাঁচ উইকেট নেয়, তা হলে তার নাম ইতিহাসে জায়গা করে নেবে,’’ বলছেন স্টিভ, ‘‘আসলে কী ভাবে ম্যাচটাকে দেখতে চাইছি, সেটাই মানসিকতা ঠিক করে দেয়। আমি কী চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছি? নাকি বড্ড কঠিন মনে হচ্ছে?’’ বিশ্বের সর্বকালের অন্যতম সেরা অধিনায়ক দ্রুত যোগ করছেন, ‘‘আমি নিশ্চিত, ভারত এটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখবে। বিশ্ব ক্রিকেটের জন্য খুবই ভাল খবর যে, অস্ট্রেলিয়ায় এসে ভারত দিনরাতের টেস্ট খেলতে রাজি হয়েছে। আমি নিজেও খুব খুশি হয়েছি শুনে।’’
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ফিরছেন নেমার, চনমনে সালাহরা
সৌরভ রবিবারই ঘোষণা করেছেন, অস্ট্রেলিয়ায় বছরের শেষের সফরে দিনরাতের টেস্ট খেলবে ভারতীয় দল। একই সঙ্গে বোর্ড প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, দেশের মাঠেও নিয়মিত ভাবে দিনরাতের টেস্ট আয়োজন করা হবে। এখন পর্যন্ত যে ক’টি দিনরাতের টেস্ট হয়েছে, তাতে পেসারদের প্রাধান্য দেখা গিয়েছে। স্টিভ স্বাগত জানাচ্ছেন, ‘‘ফাস্ট বোলারেরা যে বিশেষ সুবিধা পাচ্ছে, সেটা এক দিক থেকে ভালই। অস্ট্রেলিয়ায় মানুষ দিনরাতের টেস্ট দেখতে চায় কারণ কখনওই চোখ সরিয়ে নেওয়া যায় না। প্রত্যেক বলেই যেন কিছু না কিছু ঘটতে পারে।’’ পেসারদের সুবিধা পাওয়া নিয়ে যোগ করছেন, ‘‘বোলারদের বাড়তি সুবিধা দিলেও ভাল ব্যাটসম্যান ঠিকই রান করতে পারে। আমার মনে হয়, বোলারেরা বেশি সুবিধা পেলে খেলাটার ভারসাম্যের দিক থেকেও ভাল। বিশেষ করে যখন পরিবেশে পরিবর্তন হচ্ছে বা পরিস্থিতি কঠিন, তখন ব্যাটসম্যানকেও উইকেট আগলানোর দিকে মন দিতে হয়।’’
ভারতীয় পেস আক্রমণ সম্পর্কেও উচ্ছ্বসিত স্টিভ। বলে দিচ্ছেন, ‘‘দেশের মাটিতে সেরা বোলিং আক্রমণ ভারত। আর অস্ট্রেলিয়ায় খেলা হলে অপ্রতিরোধ্য অস্ট্রেলীয় বোলিং।’’ যশপ্রীত বুমরাকে নিয়েও প্রশংসা শোনা যায় তাঁর গলায়, ‘‘অসাধারণ এক প্রতিভা। ভারতীয় দলের সম্পদ বুমরা। বিরাট কোহালি খুবই ভাগ্যবান যে, ওর মতো বোলার পেয়েছে।’’ প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক আরও বলেছেন, ‘‘গত আঠারো মাসে ভারত খুব ভাল ফল করেছে। বাইরে গিয়েও জিতেছে। আমি মনে করি না, বিদেশের মাঠে জেতা ওদের পক্ষে খুব কঠিন হবে।’’ তাঁর আরও পর্যবেক্ষণ, ‘‘এখনকার দিনে নিরপেক্ষ আম্পায়ার রয়েছে। নিয়মিত ভাবে ক্রিকেটারেরা ভ্রমণ করছে। তাই সব রকম পরিবেশ, পরিস্থিতিতে মানিয়ে নেওয়ার অভিজ্ঞতা ওদের থাকে। বিশ্বের সর্বত্র পিচের চরিত্রও যেন প্রায় একই রকম। খুব বেশি পার্থক্য দেখা যায় না। আমার মনে হয় পুরো ব্যাপারটাই মানসিক। বিরাট নিশ্চয়ই ওর টিমকে বলছে, শুধু অস্ট্রেলিয়া বলেই অন্য দেশ ভাবতে যাব কেন?’’ স্টিভ মনে করেন, বিশ্বের সর্বত্র বিশাল সংখ্যক দর্শক উপস্থিতি বিদেশের মাঠে ভারতকে বিরল সুবিধা দিয়ে যায়। ‘‘যে কোনও দেশেই ভারত যখন খেলে, গ্যালারিতে ওদের দর্শকদেরই সংখ্যাধিক্য থাকে। এমনকি অস্ট্রেলিয়াতে খেলা হলেও অস্ট্রেলীয়দের থেকে ভারতীয় দর্শকেরা সংখ্যায় বেশি থাকে। ভারতকে দেখে মনে হয়, সর্বত্রই যেন ওরা ঘরের মাঠে খেলছে,’’ মন্তব্য স্টিভের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy