ফুরফুরে: চেন্নাই সুপার কিংসের অনুশীলনের ফাঁকে রায়না ও ধোনি। টুইটার
এক দিকে মাস্টার। অন্য দিকে ছাত্র। ভারতীয় ক্রিকেটে কিংবদন্তি ও তাঁর উত্তরসূরির দ্বৈরথ আজ, শনিবার। মহেন্দ্র সিংহ ধোনি বনাম ঋষভ পন্থ।
গত বার রানার্স হয়েছিল দিল্লি ক্যাপিটালস। এ বারে চোটের কারণে অধিনায়ক শ্রেয়স আয়ার নেই। তার জায়গায় অধিনায়ক করা হয়েছে ঋষভ পন্থকে। আর আইপিএলে অধিনায়ক হিসেবে প্রথম ম্যাচেই মহেন্দ্র সিংহ ধোনির মুখোমুখি পন্থ। সেই ধোনি, যিনি স্নেহশীল অগ্রজের মতো শিখিয়ে গিয়েছেন তাঁকে।
যে কারণে পন্থও ম্যাচের আগে বলে ফেলেছেন, ‘‘মাহি ভাইয়ের সঙ্গে টস করতে যাওয়াটা একটা অন্য রকম অনুভূতি হতে চলেছে।’’ ২০১৯ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের পরে আর ভারতের হয়ে খেলেননি ধোনি। গত আইপিএলের শুরুতেই তিনি জানিয়ে দেন, অবসর নিয়ে ফেলেছেন। তার পরেও ধোনির উত্তরসূরি নিয়ে জলঘোলা চলেছিল। একেবারেই নিশ্চিত ছিল না পন্থের জায়গা। অস্ট্রেলিয়ায় সাদা বলের ক্রিকেটে বাদ পড়েন। কিন্তু টেস্ট সিরিজে দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন ঘটান। তার পর থেকে এমনই স্বপ্নের ছন্দে রয়েছেন তিনি যে, কেউ আর কিংবদন্তি ধোনির অভাবের কথাও মুখে আনছেন না। মনে করা হচ্ছে, ঋষভ পন্থের জয়যাত্রা শুরু হয়ে গিয়েছে।
এ বারে সেই কিংবদন্তির সঙ্গেই মুখোমুখি দ্বৈরথ। অধিনায়কত্বের অভিজ্ঞতা বা প্রজ্ঞায় ধোনির সঙ্গে তুলনাই হয় না ঋষভের। কিন্তু ব্যাটসম্যান ঋষভ টেক্কা দিতে পারেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসৃত ধোনিকে। কারও কারও মত, প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট থেকে বাইরে থাকা ধোনির বিপক্ষে যেতে পারে। সেখানে ঋষভ রয়েছেন স্বপ্নের ছন্দে। যা ধরছেন, তা-ই সোনায় পরিণত হচ্ছে। যা আগে বলা হত ধোনি সম্পর্কে। পন্থের অস্ত্রশালাও বেশ সজ্জিত। শিখর ধওয়ন, পৃথ্বী শয়ের মতো ভারতীয় ব্যাটসম্যানেরা রয়েছেন। তিনি নিজে একা ম্যাচ ঘুরিয়ে দিতে পারেন ব্যাট হাতে। অশ্বিনের মতো অভিজ্ঞ স্পিনার রয়েছেন। অক্ষর পটেলের করোনা ধরা পড়ায় খেলতে পারবেন না কিন্তু অমিত মিশ্র মোটেও খারাপ পরিবর্ত নয়।
তবে বড় ধাক্কা, দুর্ধর্ষ ফাস্ট বোলিং বিভাগকে প্রথম ম্যাচে না পাওয়া। কাগিসো রাবাডা এবং অনরিখ নখিয়া— দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ফাস্ট বোলার নিয়মিত ভাবে ঘণ্টায় দেড়শো কিলোমিটার গতি তুলতে পারেন। কিন্তু ভারতে এসে পৌঁছনোর পরে তাঁদের নিভৃতবাসে থাকতে হবে। প্রথম ম্যাচে তাই উমেশ যাদব, ইশান্ত শর্মা, ক্রিস ওক্সদের নিয়েই নামতে হবে দিল্লিকে।
ধোনির আবার সব চেয়ে বড় সমস্যা, নিরপেক্ষ কেন্দ্রে খেলা হচ্ছে বলে তিনি চেন্নাই দুর্গে খেলতে পারছেন না। ফলে নিজেদের সুবিধা মতো ঘূর্ণি পিচে প্রতিপক্ষকে ফেলতে পারবেন না। বরং ওয়াংখেড়েতে পেসাররা সাহায্য পেতে পারে। ধোনির পেস বোলিং বিভাগ বলতে দীপক চাহার এবং শার্দূল ঠাকুর। যাঁদের অস্ত্র গতি নয়, সুইং। জশ হেজ্লউড সরে দাঁড়ানোয় লুনগি এনগিডির উপর ভরসা করতে হবে।
ব্যাটিং বিভাগে ধোনি, অম্বাতি রায়ডু, সুরেশ রায়নারা উচ্চ মানের ক্রিকেট থেকে দূরে রয়েছেন। বয়স্ক ক্রিকেটারের সংখ্যা বেশি চেন্নাইয়ের দলে। ধোনির সেই শট নেওয়ার ক্ষমতা আগের মতো নেই, গত আইপিএলেই দেখা গিয়েছে। এখন ‘ফিনিশার’ হিসেবে রবীন্দ্র জাডেজা, স্যাম কারেনদের তুলে আনার চেষ্টা হচ্ছে। মইন আলিকে মোটা টাকায় কেনা হয়েছে। রায়নার প্রত্যাবর্তন মনোবল বাড়াবে।
তবু যত নজর সেই ধোনির উপরেই। মুম্বইয়ে গিয়ে অনেক আগে থেকে শিবির করেছেন। নিজেকে তৈরি করেছেন, যাতে আমিরশাহির মতো শূন্য হাতে ফিরতে না হয়। ওয়াংখেড়েতে নামবেন তিনি, যেখানে বিখ্যাত সেই ছক্কা মেরে বিশ্বকাপ জিতিয়েছিলেন। পুরোপুরি ফুরিয়ে যাননি, প্রমাণ করার মরিয়া চেষ্টা করবেন ধোনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy