Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Rohit Sharma and Hardik Pandya

কেন গেল রোহিতের নেতৃত্ব, মুম্বইয়ের কাঁধে বন্দুক রেখে গুলি চালাল কি বোর্ড? সব অঙ্ক টি২০ বিশ্বকাপের?

আগামী বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। সেই দলে রোহিত, কোহলিদের পরিকল্পনায় রাখছে না ভারতীয় বোর্ড। আইপিএলে অধিনায়ক রোহিত সাফল্য পেলে চাপ বাড়ত। তাই কি ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে সিদ্ধান্ত?

picture of Rohit Sharma

রোহিত শর্মা। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৮:৩৩
Share: Save:

প্রথম সুযোগেই বিড়াল মারল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড!

সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দিল রোহিত শর্মাকে। বোর্ডের ইচ্ছা কার্যকর করল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স কর্তৃপক্ষ, এমনই মনে করছেন অনেকে। নীতা অম্বানিদের কাঁধে বন্দুক রেখে আইপিএলে প্রাক্তন করে দেওয়া হল অধিনায়ক রোহিতকে।

এক দিনের বিশ্বকাপের পর পরই খবর ছড়িয়ে পড়েছিল আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও ভারতকে নেতৃত্ব দেবেন রোহিত। ভারতীয় বোর্ডের একটি অংশ থেকে সেই খবর ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। ক্রিকেট মহলে তা নিয়ে চর্চা শুরু হতেই মুখ খুলেছিলেন বোর্ড সচিব জয় শাহ। গত শনিবার মহিলাদের আইপিএলের নিলামের পর জয় পরিষ্কার বলে দিয়েছিলেন, ২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে রোহিতকে অধিনায়ক করা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। জয় বলেছিলেন, ‘‘টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে বেশ কয়েক মাস সময় আছে। তার আগে ঘরের মাঠে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজ় রয়েছে। আইপিএল আছে। বিশ্বকাপ নিয়ে ভাবার সময় এখনও আসেনি। রোহিত নেতৃত্ব দেবে এমন কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে থাকার ব্যাপারেও রোহিতকে আশ্বাস দেওয়া হয়নি।’’

বোর্ড সচিবের ইঙ্গিত ছিল খুব স্পষ্ট এবং নির্দিষ্ট। সামনের দিকে তাকাতে চাইছেন তিনি। ৩৬ বছরের রোহিতকে নিয়ে ২০ ওভারের পরিকল্পনা করতে চাইছেন না বোর্ড সচিব। শুধু রোহিত নন, বিরাট কোহলিও আর ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের টি-টোয়েন্টির পরিকল্পনায় নেই।

কথায় বলে বুদ্ধিমানদের জন্য ইশারাই যথেষ্ট। জয়ের ইশারা বুঝতে অসুবিধা হয়নি মুম্বইয়ের। গুজরাত টাইটান্স থেকে মসৃণ ভাবে হার্দিক পাণ্ড্যের মুম্বইয়ে চলে যাওয়ার মধ্যেও কি বোর্ডের ‘হাত’ রয়েছে? প্রশ্ন ছিল। আছে। শুক্রবার মুম্বই রোহিতকে সরিয়ে হার্দিককে অধিনায়ক ঘোষণা করায় সেই প্রশ্ন আরও বড় হয়েছে।

বোর্ড মানে জয়। তিনিই ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রথম এবং শেষ কথা। যাঁরা জয়কে চেনেন, তাঁরা জানেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ছেলে সবার কথা শোনেন। সবার মতামতকে গুরুত্ব দেন। সবাইকে শ্রদ্ধা করেন। কিন্তু সিদ্ধান্ত নিজে নেন। নিজে যেটা ঠিক ভাবেন, সেটাই করেন। মুম্বইয়ে বোর্ডের সদর দফতরে খুব একটা যান না। আমদাবাদে নিজের অফিস থেকেই অধিকাংশ সময় পরিচালনা করেন ভারতীয় ক্রিকেট। যেমন চান তেমন চালান। তেমন চলে ভারতীয় ক্রিকেট।

বিশ্বকাপের পর হঠাৎ করেই শোনা গিয়েছিল, গুজরাত কর্তৃপক্ষের সঙ্গে হার্দিকের মতবিরোধ তীব্র। বরোদার অলরাউন্ডার সেখানে থাকতে চান না। গুজরাতও নাকি রাখতে চায় না। তবু হার্দিকের মতো অলরাউন্ডারকে কেনার জন্য একমাত্র আগ্রহী হয়েছিল মুম্বই! সেখানেও নাটক ছিল। ক্রিকেট মহলকে কিছুটা বিস্মিত করেই গুজরাত ধরে রেখেছিল হার্দিককে। পরের দিনেই হাতবদল! অথচ এই হার্দিকের নেতৃত্বেই প্রথম বছরেই গুজরাত আইপিএল চ্যাম্পিয়ন। দ্বিতীয় বছরে রানার্স। মধুচন্দ্রিমা থেকে বিচ্ছেদের পথে ছিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ঠাসা সূচি। এশিয়া কাপ, বিশ্বকাপের মতো প্রতিযোগিতা।

রোহিত আইপিএলের সফলতম অধিনায়ক। মুম্বইকে পাঁচ বার চ্যাম্পিয়ন করেছেন। সদ্য শেষ হওয়া বিশ্বকাপে ভারতকে ফাইনালে তুলেছেন। নিজে রান করেছেন। প্রায় নিখুঁত নেতৃত্ব দিয়েছেন। সাফল্যের সময়ই তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হল! হয়তো তাঁকে মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে, আইপিএলের গত দু’টি মরসুমে মুম্বইয়ের ব্যর্থতা। রোহিতের রান না পাওয়া। পেশাদার দুনিয়ায় ব্যর্থদের জায়গা নেই। অতীত ভাঙিয়ে চলে না। যতই তুমি ৫০ ওভারের ক্রিকেটে ফর্মে থাকো।

হার্দিক ভারতীয় দলকে বেশ কিছু টি-টোয়েন্টি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন। সাফল্য পেয়েছেন। অন্য দিকে, অতিরিক্ত ক্রিকেট এড়াতে ৩৬ বছরের রোহিত মাঝেমধ্যেই ২০ ওভারের ক্রিকেট এড়িয়ে চলেন। সামনের দিকে তাকিয়ে মুম্বই হয়তো তাই হার্দিককে অধিনায়ক ঘোষণা করেছে। ইতিবাচক সিদ্ধান্ত। ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের জন্যও।

রোহিতকে সরতেই হত। ভারত বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হলেও সরতে হত। কারণ বোর্ড সচিব তাঁকে আগামী বিশ্বকাপের দলে রাখার আশ্বাস দেননি। সে জন্যই গুজরাত থেকে মুম্বইয়ে আনা হয়েছে তুলনায় তরুণ হার্দিককে। তিনিও টি-টোয়েন্টিতে সফল অধিনায়ক। তা হলে দায়িত্বে কেন নয়? কখনও না কখনও তো সামনে তাকাতেই হয়। সিনিয়রদের সরে যেতে হয়।

রোহিতের নেতৃত্বে মুম্বই ২০২৪ সালে আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেলে চাপ পড়ে যেত বোর্ড। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলের নেতৃত্ব তাঁকেই দিতে হত। না হলে সমালোচনার মুখে পড়তে হত বোর্ড কর্তাদের। সুতরাং প্রথম সুযোগেই বিড়াল মারার পরিকল্পনা। সেটাও মুম্বইয়ের কাঁধে বন্দুক রেখে।

ভারতীয় ক্রিকেটে রোহিত-কোহলি যুগ শেষের দামামা কি বেজেই গেল?

অন্য বিষয়গুলি:

IPL 2024 Captain BCCI Jay Shah Mumbai Indians
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy