কেকেআরের অন্যতম কর্ণধার শাহরুখ খান। —ফাইল চিত্র।
কলকাতা নাইট রাইডার্সের মুম্বই জুটির কাছে পিছিয়ে পড়ল দিল্লি জুটি। কী আর করবেন মালিক শাহরুখ খান? দিল্লির ছেলের রুটি-রুজি তো মুম্বইয়েই!
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ঝুঁকি নিতেই হয়। কিন্তু আইপিএল নিলামের আগে ঝুঁকি নিতে পারল না কলকাতা নাইট রাইডার্স। অধিনায়ক বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে রক্ষণশীল সিদ্ধান্ত নিলেন নাইট কর্তৃপক্ষ। দলকে সাফল্যের রাস্তায় ফেরানোর জন্য মেন্টর করে গৌতম গম্ভীরকে আনা হলেও, প্রথম বড় সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রেই গুরুত্ব পেল না তাঁর তত্ত্ব।
গত বার নেতৃত্ব দেওয়া নীতীশ রানাই অধিনায়ক থাকবেন? না কি চোট সারিয়ে ফিরে আসা শ্রেয়স আয়ারকে নেতৃত্ব ফিরিয়ে দেওয়া হবে? এটাই ছিল নিলামের আগে কেকেআর শিবিরের সব থেকে বড় প্রশ্ন। ছিল কিছুটা জটিলতাও।
গম্ভীর চেয়েছিলেন নীতীশকেই অধিনায়ক রাখতে। শ্রেয়সকে দায়িত্ব থেকে দূরে রাখতে প্রাক্তন অধিনায়কের যুক্তি ছিল, দলের সেরা ব্যাটারকে খোলা মনে, চাপমুক্ত হয়ে খেলতে দেওয়ার সুযোগ দেওয়া। তাতে সাফল্যের সম্ভাবনা বেশি। আপাত ভাবে ব্যাটার শ্রেয়সের সেরাটা পাওয়ার জন্য তাঁকে নেতৃত্বের চাপ না দেওয়ার কথা বললেও, অন্য অঙ্ক ছিল গম্ভীরের। কারণ নীতীশ অধিনায়ক হলে দলের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখা সহজ হত গম্ভীরের পক্ষে।
নীতীশের সঙ্গে গম্ভীরের সম্পর্ক দীর্ঘ দিনের। ক্রিকেট মহলে তাঁরা ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। নীতীশ শুধু গম্ভীরের দিল্লির ক্রিকেটার নন, গুরুভাইও। গম্ভীরের কোচ সঞ্জয় ভরদ্বাজের কাছে খেলা শিখেছেন নীতীশ। দিল্লিতে ভরদ্বাজের এলবি শাস্ত্রী ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে দু’জনে একসঙ্গে অনুশীলনও করেছেন বহু দিন। পরস্পরকে তাঁরা চেনেন, জানেন দীর্ঘ দিন ধরে। তাঁদের মধ্যে বোঝাপড়াও ভাল। মুদ্রার অন্য পিঠে শ্রেয়স এবং কেকেআর কোচ চন্দ্রকান্ত পণ্ডিত দু’জনেই মুম্বইয়ের।
আবার শ্রেয়স কেকেআরে যোগ দেওয়ার আগে ছিলেন দিল্লি ক্যাপিটালসের ক্রিকেটার। ভারতীয় ক্রিকেটে নীতীশের থেকে অনেক বড় নাম। ভারতীয় দলের নির্ভরযোগ্য ব্যাটার। তিনিই এখনকার কেকেআরের মূল অধিনায়ক। তা ছাড়া অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজ়ের শেষ তিন ম্যাচে শ্রেয়স ছিলেন সূর্যকুমার যাদবের ডেপুটি। অর্থাৎ, জাতীয় দলের নেতৃত্ব নিয়ে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) ভাবনায় ঢুকে পড়েছেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে তাঁকে বাদ দিয়ে নীতীশকে অধিনায়ক রাখা হলে সমস্যা হতে পারত। শ্রেয়সকে নীতীশের নেতৃত্বে খেলতে বাধ্য করা হলে তিনি অসন্তুষ্ট হতে পারতেন। তাতে কেকেআর ফ্র্যাঞ্চাইজ়ির উপর চাপ বাড়তে পারত বিসিসিআইয়ের। সেই ঝুঁকি নেওয়া আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজ়ির পক্ষে কঠিন।
দিল্লি ঋষভ পন্থকে অধিনায়ক করার জন্যই দল ছেড়েছিলেন শ্রেয়স। অর্থাৎ, জুনিয়র কারও নেতৃত্বে খেলা নিয়ে শ্রেয়সের আপত্তি অজানা নয়। তেমন আবার কিছু হলে কেকেআর ছাড়ার কথাও ভাবতে পারতেন শ্রেয়স। আগেই শুভমন গিল, সূর্যকুমারের মতো ব্যাটারকে হাতছাড়া করেছেন কেকেআর কর্তৃপক্ষ। তার উপর শ্রেয়সও দল ছাড়লে সমস্যা আরও বৃদ্ধি পেত। সাফল্যের খোঁজ করা কেকেআর কর্তৃপক্ষের পক্ষে যা সুখকর হত না।
সূত্রের খবর, তাই নীতীশকেই অধিনায়ক রাখার পক্ষে গম্ভীরের যুক্তি গুরুত্ব পায়নি কেকেআর শিবিরে। শ্রেয়সের পক্ষে ছিলেন কোচ পণ্ডিত। গম্ভীরের পক্ষে সরাসরি শ্রেয়সের বিরোধিতা করাও সম্ভব হয়নি। সুকৌশলে নতুন আসা মেন্টরের যুক্তিকে সরিয়ে রেখে কোচের কথা মেনে নিয়েছেন কেকেআর কর্তৃপক্ষ। তাই প্রথম গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রেই ধাক্কা খেতে হয়েছে গম্ভীরকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy