স্বপ্ন দেখছেন প্রৌঢ় কোবস। স্বপ্ন দেখছেন বিশ্ব আঙিনায় ফুটবলের সঙ্গে পরিচিত হবে ক্রিকেটও। আন্দ্রে শেভচেঙ্কোদের পাশাপাশি ব্যাট হাতে তরুণ প্রজন্মকে চিনবে বিশ্ব। তাঁর সঙ্গে স্বপ্ন দেখছেন আরও অনেকে। কিন্তু তার মধ্যেই দুঃস্বপ্ন হয়ে হাজির হয়েছে রাশিয়া। বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশ বাঁচানো সবার প্রধান লক্ষ্য।
ইউক্রেনে ক্রিকেটের বিস্তার ঘটাচ্ছিলেন কোবল অলিভিয়ের ছবি: টুইটার।
সবে বীজ বপন হয়েছিল। জল, সার দিয়ে সেই বীজকে প্রথমে চারাগাছ ও তার পর মহীরুহ করতে যে সময় ও সুযোগের প্রয়োজন ছিল তার কোনওটাই পাওয়া গেল না। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ কী হতে চলেছে তা নিয়ে একটা বড় প্রশ্নচিহ্ন দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি এমনই যে, গত কয়েক বছরে সে দেশে ক্রিকেট যতটা এগিয়েছিল, গত কয়েক দিনে তার থেকেও বেশি পিছিয়ে গিয়েছে।
ইউক্রেনে ক্রিকেটের বিস্তারে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন দুবাইয়ের ক্রিকেট বিনিয়োগকারী শ্যাম ভাটিয়া। তাঁর উদ্যোগেই প্রাথমিক স্তরে ক্রিকেট খেলা শুরু হয় ইউক্রেনে। পরে সেখানে ইউক্রেন ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন তৈরি হয়। সেখানকার বর্তমান সিইও কোবস অলিভিয়েরের চেষ্টাতে ইউক্রেনের স্কুলগুলিতে শুরু হয়েছিল ক্রিকেট শেখানো। ফলে ফুটবল প্রধান দেশে ধীরে ধীরে জায়গা করে নিচ্ছিল ক্রিকেট।
শ্যামের সংস্থা প্রথম ইউক্রেনে ক্রিকেট খেলার সরঞ্জাম পাঠায়। সেই সরঞ্জাম দিয়ে প্রাথমিক ভাবে ক্রিকেট শুরু হয়। শ্যামের উৎসাহে ইউক্রেনকে আইসিসি-র সহযোগী দেশের তকমা পাওয়াতে উদ্যোগী হয়েছিলেন কোবস। কিন্তু গত কয়েক দিনে পুরো ছবিটা বদলে গিয়েছে। ক্রিকেট তো দূর, নিজের প্রাণ বাঁচাতে পারবেন কি না তা নিয়েই নিশ্চিত নন এক সময় কোচের দায়িত্ব পালন করা কোবস।
যুদ্ধের মধ্যেও প্রথমে ক্রিকেটকে ছেড়ে পালাননি গ্যারি কার্স্টেনের বন্ধু। তিনি চাইলে অনেক আগেই অন্য দেশে গিয়ে আশ্রয় নিতে পারতেন। কিন্তু ক্রিকেটের প্রতি তাঁর ভালবাসা ও ইউক্রেনে ক্রিকেটকে ছড়িয়ে দেওয়ার যে স্বপ্ন তিনি দেখেছেন তা তাঁকে দেশ ছাড়তে দেয়নি। কিভের একটি আবাসনে ছিলেন তিনি। কিন্তু পাঁচ দিন সেখানে থাকার পরে অবশেষে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন কোবস। পাড়ি দেন পোল্যান্ডে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে কোবস বলেন, ‘‘গত কয়েক বছর ধরে আমি অক্লান্ত পরিশ্রম করেছি। ইউক্রেনকে আইসিসি-র সহযোগী সদস্য করা আমার স্বপ্ন। সেই চেষ্টা আমি কিছুতেই ছাড়ব না। এই বছর জুলাই মাসে আইসিসি সিদ্ধান্ত নিতে পারে। সদস্য পদ পেতে যা যা দরকার সব করেছি। তাই শেষ পর্যন্ত লড়ে যাব।’’
স্বপ্ন দেখছেন প্রৌঢ় কোবস। স্বপ্ন দেখছেন বিশ্ব আঙিনায় ফুটবলের সঙ্গে পরিচিত হবে ক্রিকেটও। আন্দ্রে শেভচেঙ্কোদের পাশাপাশি ব্যাট হাতে তরুণ প্রজন্মকে চিনবে বিশ্ব। তাঁর সঙ্গে স্বপ্ন দেখছেন আরও অনেকে। কিন্তু তার মধ্যেই দুঃস্বপ্ন হয়ে হাজির হয়েছে রাশিয়া। বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশ বাঁচানো সবার প্রধান লক্ষ্য। তাই তো খেলার দুনিয়ার অনেকেই হাতে তুলে নিয়েছেন বন্দুক। যোগ গিয়েছেন সেনায়। দেশের জন্য লড়ছেন। এই লড়াই শেষে ফের কি মূল স্রোতে ফিরতে পারবে ক্রিকেট? স্বপ্ন সফল হবে কোবসের? উত্তর দেবে সময়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy