হার্দিক পাণ্ড্য। ছবি: পিটিআই।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ভারত এক নম্বর দল। আইসিসি-র ক্রমতালিকা তেমনটাই বলছে। কিন্তু ক্যারিবিয়ান সফরে ক্রিকেটের ক্ষুদ্র সংস্করণে সেটা বোঝা দেয়। পর পর দু’টি ম্যাচে হেরে গেলেন হার্দিক পাণ্ড্যেরা। প্রথম ম্যাচে রান তাড়া করতে গিয়ে হার। রবিবার ভারত হারল প্রথমে ব্যাট করে। দু’টি ম্যাচেই দোষ ব্যাটারদের।
রবিবার প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন হার্দিক। কিন্তু তাঁর দল মাত্র ১৫২ রান তোলে। তিলক বর্মার অর্ধশতরান না থাকলে সেটাও হত কি না সন্দেহ। শুভমন গিল (৭) এবং সূর্যকুমার যাদবের (১) রান না পাওয়া ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য বড় চিন্তার কারণ হতে পারে। সামনে এশিয়া কাপ। এই বছর বিশ্বকাপও রয়েছে। তার আগে এই দুই ব্যাটারকে রানে ফেরাতেই হবে রাহুল দ্রাবিড়দের। ঈশান কিশন ২৭ রান করেন। তিনি রোমারিয়ো শেফার্ডের ইয়র্কারে বোল্ড হয়ে যান। ওই বলে যে কোনও ব্যাটারই আউট হতে পারতেন। ওই উইকেটটির জন্য রোমারিয়োকে পূর্ণ কৃতিত্ব দিতে হবে। অধিনায়ক হার্দিক ২৪ রান করেন।
সব থেকে আলোচনা হওয়া উচিত সঞ্জু স্যামসনের আউট নিয়ে। যে ব্যাটারকে দলে না নিলে বার বার প্রশ্ন ওঠে, তিনি সুযোগ পেয়ে যে ভাবে নিজের উইকেট ছুড়ে দিয়ে এলেন তা সমালোচনার জায়গা তৈরি করে দিল। ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে স্টাম্পড হলেন তিনি। এমন একটা সময় এই কাণ্ড তিনি করলেন, যখন ভারতের তিন উইকেট পড়ে গিয়েছে এবং হাতে ন’ওভার রয়েছে। আগের ম্যাচে রান আউট হয়েছিলেন তিনি, কিন্তু এই ম্যাচে হেলায় সুযোগ হারালেন সঞ্জু। ১৯টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়ে একটি মাত্র অর্ধশতরান করা কেরলের এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার আগামী দিনে আর ক’টা সুযোগ পাবেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। আয়ারল্যান্ড এবং এশিয়ান গেমসে সুযোগ পাওয়া জীতেশ শর্মা যদি নিয়মিত রান করতে পারেন, তাহলে সঞ্জুর চাপ যে আরও বাড়বে তা বলাই যায়।
অক্ষর পটেলকে নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে। তাঁকে বোলার হিসাবে ভাবছে না দল। বাঁহাতি অলরাউন্ডার এখন দলে ব্যাটার হিসাবেই খেলছেন প্রায়। আগের ম্যাচে মাত্র দু’ওভার বল করানো হয়। তাতেই ২২ রান দেন অক্ষর। রবিবার ব্যাট হাতে ১২ বলে ১৪ রান করেন তিনি। শেষ ওভারের প্রথম বলে উইকেট দিয়ে বসেন। শর্ট বলে মারতে গিয়ে বল এতটাই উঁচুতে উঠে যায় যে, উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ হয়ে যায়। শেষ বেলায় রবি বিষ্ণোই একটি ছক্কা এবং আরশদীপ সিংহ একটি চার মেরে ভারতের ১৫০ রানের গণ্ডি পার করেন।
সেই রান তাড়া করতে নেমে শুরুতে মুখ থুবড়ে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ়। হার্দিক প্রথম ওভারেই দু’টি উইকেট তুলে নেন। আরশদীপ ফিরিয়ে দেন কাইল মেয়ার্সকে। কিন্তু তার পরেই নিকোলাস পুরান ঝড় তোলেন। তিনি যে ফর্মে রয়েছেন তাতে, একাই ম্যাচ হারিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। এই ম্যাচে ২৯ বলে অর্ধশতরান করেন। তাঁর ৪০ বলে ৬৭ রানের ইনিংস ওয়েস্ট ইন্ডিজ়কে নিশ্চিন্ত করে দেয় রান তাড়া করার সময়। রভমেন পাওয়েল এবং শিমরন হেটমেয়ার তাঁকে সাহায্য করেন।
ভারতীয় বোলারেরা দলকে ম্যাচে ফিরিয়ে এনেছিলেন। মাত্র ২ রানের ব্যবধানে তিন উইকেট হারিয়ে হঠাৎ চাপে পড়ে গিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ়। কিন্তু সেই চাপ শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতে পারলেন না আরশদীপ, মুকেশেরা। সাত বল বাকি থাকতেই জয়ের রান তুলে নেয় ক্যারিবিয়ান বাহিনী
পরের ম্যাচ মঙ্গলবার। শেষ তিনটি ম্যাচের মধ্যে একটিতে হারলেই টি-টোয়েন্টি সিরিজ় হাতছাড়া হবে ভারতের। ক্রমতালিকায় শীর্ষে থাকা দল হেরে যাবে এ বারের এক দিনের বিশ্বকাপে যোগ্যতা অর্জন করতে না পারা দলের বিরুদ্ধে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy