শতরানের দৌড়ে তিন বছর আগেও কোহলী যে ভাবে এগচ্ছিলেন তাতে মনে হচ্ছিল সচিন তেন্ডুলকরের রেকর্ড ভাঙা সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু গত তিন বছরে সেই ছবিটা আমূল বদলে গিয়েছে। ফের কবে বড় রান পাবেন কোহলী। সবাই এই প্রশ্নটাই করছেন। উত্তর অজানা। রান-খরা যে চলছেই।
কোহলীর খারাপ ফর্ম চলছেই ফাইল চিত্র
দলের ব্যাটিং কোচ বিক্রম রাঠৌর বলছেন, বিরাট কোহলীর ব্যাটিং নিয়ে তিনি চিন্তা করছেন না। নেটে নাকি খুব ভাল খেলছেন কোহলী। তাঁর ব্যাটে বড় রান স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। কোহলীর হাত থেকে যাঁর হাতে নেতৃত্বের ব্যাটন গিয়েছে সেই রোহিত শর্মা বলছেন, কোহলীকে নিয়ে সবাই একটু মুখ বন্ধ রাখলে ভাল হয়। মানসিক ভাবে খুব না কি ভাল জায়গায় রয়েছেন কোহলী। তিনি জানেন খারাপ পরিস্থিতি থেকে কী ভাবে বেরিয়ে আসতে হয়। কিন্তু কবে সেই খারাপ পরিস্থিতি থেকে বেরোবেন ভারতের অন্যতম সেরা ব্যাটার। একটার পর একটা ম্যাচ কেটে যাচ্ছে। বার বার হতাশ করছেন তিনি।
পরিসংখ্যান বলছে কোহলীর শেষ শতরান এসেছিল ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে। কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে গোলাপি বলের টেস্টে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে শতরান করেছিলেন তিনি। সেই শেষ বার হেলমেট খুলে দু’হাতে ব্যাট তুলে দেখিয়েছিলেন গ্যালারির দিকে। তার পর থেকে অর্ধশতরান এলেও তিন অঙ্কের সংখ্যা ছুঁতে পারেননি।
যে সমস্যা কোহলীকে সব থেকে বেশি ভোগাচ্ছে তা হল তাঁর ধারাবাহিকতার অভাব। সাম্প্রতিক দক্ষিণ আফ্রিকা সফর কিংবা ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে চলতি সিরিজেও সেই ছবিটা বার বার ধরা পড়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে তিন টেস্টের সিরিজে এক মাত্র তৃতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে অর্ধশতরান করেছিলেন কোহলী। ৭৯ রান এসেছিল তাঁর ব্যাট থেকে। বাকি সিরিজ তাঁর ব্যাট চুপ থেকেছে। এক দিনের সিরিজে আবার প্রথম ম্যাচে ৫১ ও তৃতীয় ম্যাচে ৬৫ করলেও দ্বিতীয় ম্যাচে শূন্য রানে আউট হয়েছেন তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে তিনটি এক দিনের ম্যাচ কোহলী যথাক্রমে ৮, ১৮ ও ০ রান করেছেন। বুধবার ইডেনে প্রথম টি২০ ম্যাচেও মাত্র ১৭ রান করেছেন তিনি।
কিন্তু কেন বার বার এ রকম হচ্ছে। মনোসংযোগে ব্যাঘাত ঘটছে কোহলীর? না কি ক্রিকেটের বাইরে অন্য ঘটনার প্রভাব পড়ছে তাঁর খেলায়? যে ক্রিকেটার একটা সময় ব্যাট হাতে নামলে কোটি কোটি ভারতীয় সমর্থক টেলিভিশনের পর্দায় বসে পড়তেন একটা ম্যাচ জেতানো ইনিংস দেখার জন্য, সেই কোহলীর ব্যাটিং নিয়ে শুরু হয়েছে সমালোচনা।
বিশেষজ্ঞরা আবার অবাক হচ্ছেন কোহলীর আউট হওয়ার ধরন নিয়ে। অফ স্টাম্পের বাইরের বলে কোহলীর দুর্বলতা গোটা বিশ্বের কাছে প্রকট করে দিয়েছিলেন ইংল্যান্ডের পেসার জেমস অ্যান্ডারসন। সেই সমস্যা এখনও রয়েছে। অনেক বাইরের বলে ব্যাট চালাতে গিয়ে তিনি আউট হচ্ছেন। তার সঙ্গে জুড়েছে শর্ট বল খেলার প্রবণতা। ভারতের প্রাক্তন ওপেনার সুনীল গাওস্কর বলেছেন, শর্ট বল ছাড়েন না কোহলী। তিনি পুল বা হুক মারবেনই। কখনও বল একটু ধীরে এলে বা একটু বেশি লাফালে সেই শট খেলতে গিয়ে আউট হচ্ছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে সেটা দেখা গিয়েছে।
শতরানের দৌড়ে তিন বছর আগেও কোহলী যে ভাবে এগচ্ছিলেন তাতে মনে হচ্ছিল সচিন তেন্ডুলকরের রেকর্ড ভাঙা সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু গত তিন বছরে সেই ছবিটা আমূল বদলে গিয়েছে। ফের কবে বড় রান পাবেন কোহলী। সবাই এই প্রশ্নটাই করছেন। উত্তর অজানা। রান-খরা যে চলছেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy