সুযোগ: এশিয়া কাপ দলে ডাক পেলেন অমৃত ও রবি (ডান দিকে)।
শ্রীবৎস গোস্বামী, ঈশান পোড়েল, কর্ণ লালদের পরে ভারতের অনূর্ধ্ব-১৯ দলে সুযোগ পেলেন বাংলার দুই ক্রিকেটার। আসন্ন এশিয়া কাপ দলে নেওয়া হয়েছে অমৃত রাজ উপাধ্যায় ও রবি কুমারকে। দু’জনেই বোলার। অমৃত বাঁ-হাতি স্পিনার। রবি বাঁ-হাতি পেসার।
অনূর্ধ্ব-১৯ বাংলা দলেও এ বারই সুযোগ পেয়েছিলেন দুই ক্রিকেটার। রাজ্য স্তরে এখনও সে ভাবে বড় কিছু করে দেখাতে না পারলেও বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সঙ্গে ত্রিদলীয় সিরিজ়ে দুই ক্রিকেটারের বোলিং নজর কাড়ে নির্বাচকদের।
২৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু এশিয়া কাপের কুড়ি জনের ভারতীয় দলে তাই সুযোগ দেওয়া হল বাংলার দুই ক্রিকেটারকে। শেষ কবে ভারতীয় অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে এক সঙ্গে বাংলার দুই ক্রিকেটার খেলেছেন, অনেকেই মনে করতে পারছেন না। বহু বছর পরে আরও এক বার দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে দেখা যাবে বাংলার দুই নতুন তারাকে।
অমৃত ও রবির মধ্যে অদ্ভুত সাদৃশ্য রয়েছে। দু’জনেই ক্রিকেট শুরু করেন পাঁচ বছর আগে। খেলা যখন শুরু করেছিলেন, তখনও বিরাট কিছু প্রাপ্তির স্বপ্ন দেখতেন না। খেলতে ভাল লাগত, তাই খেলতেন।
রবি কুমারের স্বপ্ন ছিল পাইলট হওয়ার। বাবা ভারতীয় সেনিবাহিনীতে কর্মরত। থাকেন উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ে। নাকতলায় কাকু, কাকিমার সঙ্গে থাকতেন রবি। কিন্তু কাকুর মৃত্যুর পরে তাঁর কাকিমা দুবাইয়ে গিয়েছেন ছুটিতে। তার পর থেকে একাই থাকতে হয় তরুণ ক্রিকেটারকে। সকালে অনুশীলন সেরে বাড়ি ফেরার পরে নিজেকেই রান্না করে খেতে হয়। কোনও সময় ক্লান্তির কারণে না খেয়েই ঘুমিয়ে পড়েন।
হাওড়া উইনিয়নের হয়ে একই মরসুমে ২৫ উইকেট নেওয়ার পরে নজরে উঠে আসেন রবি। বালিগঞ্জ ইউনাইটেডের হয়ে প্রথম ডিভিশনেও চারটি উইকেট রয়েছে তাঁর। উত্তর প্রদেশে তাঁর ছোটবেলার কোচ অরবিন্দ ভরদ্বাজের কাছে জানতে পারেন, কলকাতার ক্লাব ক্রিকেটের ব্যাপারে। তার পর থেকেই তাঁর ঠিকানা এই শহরে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ত্রিদলীয় সিরিজ়ের ফাইনালে ভারতীয় দলে অভিষেক হয় রবির। প্রথম ম্যাচে দুই উইকেট নিয়ে নির্বাচকদের নজরে উঠে আসেন। ইডেনে সেই পারফরম্যান্স রবির জীবনে নতুন দরজা খুলে দিয়ে গেল। তরুণ পেসার বলছিলেন, ‘‘যে দিন থেকে ক্রিকেট খেলতে শুরু করেছি, মনের মধ্যে একটাই আশা ছিল দেশের হয়ে যেন খেলতে পারি। বয়সভিত্তিক স্তরে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করার স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। এই ছন্দই ধরে রাখতে চাই আগামী দিনে।’’
বাঁ-হাতি পেসার রবির বয়স ১৮ বছর। তাঁর প্রিয় ক্রিকেটার মিচেল স্টার্ক ও ডেল স্টেন। তাঁদের মতো আউটসুইংই শক্তি তরুণ পেসারের। বলছিলেন, ‘‘বাংলা থেকে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জিতেছে ঈশান পোড়েল। ওর মতোই বল হাতে অনূর্ধ্ব-১৯ দলে সফল হতে চাই।’’
অমৃত রাজের প্রিয় ক্রিকেটার ড্যানিয়েল ভেত্তোরি। সিটি অ্যাথলেটিক ক্লাবের হয়ে দশ ম্যাচে ২৪ উইকেট পেয়েছিলেন শেষ মরসুমে। তাঁর বাবা হোটেলের ম্যানেজার। শ্যামবাজারে পরিবারের সঙ্গে থাকেন। অনূর্ধ্ব-১৯ ত্রিদলীয় সিরিজ়ে দু’ম্যাচে চার উইকেট পেয়েছিলেন তিনি। তাঁর সেই প্রাপ্তির পুরস্কার যে এত বড় হতে চলেছে, কখনও ভাবতেই পারেননি। অমৃত রাজের কথায়, ‘‘সাদা বলের ক্রিকেটে স্পিনার হিসেবে সফল হওয়া সহজ নয়। তবে আমি চেষ্টা করব ভারতীয় দলের জন্য
সেরাটা দেওয়ার।’’
আজ, শনিবার বেঙ্গালুরুর উদ্দেশে রওনা হচ্ছেন রবি ও অমৃত। জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে সাত দিনের শিবির চলবে। সেখান থেকে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির পথে রওনা দেবে দল। অমৃত ও রবির একটাই প্রার্থনা, ‘‘দেশের হয়ে যেন এশিয়া কাপ জিতে ফিরতে পারি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy