বিরাট কোহলি। ছবি: পিটিআই।
ইডেনে সত্যিই বিরাট জয় ভারতের। দিনটা ছিল বিরাট কোহলি। তাঁর জন্মদিন। সেই দিনে শতরান। সঙ্গে ভারতের বিরাট ব্যবধানে জয়। যে ম্যাচকে এ বারের বিশ্বকাপের ‘ফাইনাল’ বলা হচ্ছিল, সেই ম্যাচটাই এক পেশে ভাবে জিতে নিলেন রোহিত শর্মারা। ৩২৬ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকাকে চাপে ফেলে দিয়েছিলেন বিরাটেরা। বাকি কাজটা করলেন রবীন্দ্র জাডেজারা। দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটারেরা এলেন এবং সাজঘরে ফিরে গেলেন।
রবিবার টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন রোহিত। তাতেই দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক টেম্বা বাভুমার চাপ বাড়িয়ে দেন তিনি। কারণ বাভুমা ভাল ভাবেই জানেন তাঁর দল রান তাড়া করতে গেলে নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধেও হারতে পারে, ভারত তো কোন ছাড়। ইডেনে সেটাই হল। রোহিত এবং শুভমন গিল মিলে প্রথমেই মারতে শুরু করলেন। তাঁদের আক্রমণাত্মক ক্রিকেটে বলের লাইন, লেংথ ঘেঁটে গেল মার্কো জানসেনদের। এমনই অবস্থা হল যে, কেশব মহারাজ এবং তাবরেজ শামসি মিলে স্পিনের জাল বুনেও লাভ হল না। তবে এই সব কিছুকে ছাপিয়ে গেলেন বিরাট।
ইডেনে নিজের জন্মদিনে শতরান করে সচিন তেন্ডুলকরকে ছুঁয়ে ফেললেন বিরাট। এক দিনের ক্রিকেটে ৪৯টি শতরান করে ফেললেন তিনি। আর একটি শতরান করলেই টপকে যাবেন সচিনকে। তখন বিরাটই হবেন এক দিনের ক্রিকেটে সব থেকে বেশি শতরানের মালিক। এ বারের বিশ্বকাপে আইসিসির স্লোগান ‘ইট টেকস ওয়ান ডে’ অর্থাৎ যা হওয়ার এক দিনেই হবে। সত্যি এক দিনেই হল। কত কিছু হয়ে গেল এই একটা রবিবারে। সেটার সাক্ষী থাকল ইডেন।
রবিবার জাতীয় সঙ্গীতের সময় বিরাট, রোহিতদের সঙ্গে গোটা ইডেন ‘জনগনমন’ গাইছে। এর আগে ভারতের কোনও ম্যাচেও খেলা শুরুর আগে এত দর্শক দেখা যায়নি। ৫০ ওভারের ক্রিকেটে দর্শকেরা এখন একটু পরের দিকেই ঢুকতে পছন্দ করছেন। কিন্তু ইডেনে খেলা দেখতে আসা ক্রিকেটপ্রেমীরা তেমন নন। তাঁরা খেলা শুরুর আগে থেকেই মাঠে। রোহিত, বিরাট, জাডেজাদের জন্য গলা ফাটালেন তাঁরা শেষ পর্যন্ত।
রোহিত (৪০) এবং শুভমন (২৩) মিলে প্রতি ওভারে ১০ রানের বেশি রান তুলছিলেন। তাঁদের ৬২ রানের জুটিটাই বুঝিয়ে দিয়েছিল দিনটা ভারতের। ১২১ বলে ১০১ রান করে যদিও দিনটা নিজের নামে লিখে নিয়েছিলেন বিরাট। দিনটা তাঁরই ছিল। ৩৫ বছরে পা রাখলেন বিরাট। তিনি যেন ঠিক করেই এসেছিলেন যে, জন্মদিনটি শতরান দিয়ে সাজিয়ে রাখবেন। স্ত্রী অনুষ্কার কথা অনুযায়ী, “নিজের জন্মদিনে নিজেকেই উপহার” দিলেন বিরাট।
বিরাট এবং শ্রেয়স ১৩৪ রানের গুরুত্বপূর্ণ একটি জুটি গড়লেন। তাঁদের এই জুটি না থাকলে ইডেনে চাপে পড়তে পারত ভারত। শেষ বেলায় ব্যাট হাতে জাডেজা ২৯ রানের একটি ইনিংস খেলে যান। সেটি ভারতকে ৩২৬ রানের লড়াকু স্কোরে পৌঁছে যেতে সাহায্য করে।
দক্ষিণ আফ্রিকা এ বারের বিশ্বকাপে প্রথমে ব্যাট করতে নামলে একের পর এক বড় রান তুলেছিল। কিন্তু রান তাড়া করতে নামতেই হুমড়ি খেয়ে পড়লেন কুইন্টন ডি’ককেরা। ৮৩ রানে শেষ হয়ে গেল দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস। যে ব্যাটারেরা একের পর ম্যাচে শতরান করছিলেন। এ বারের বিশ্বকাপে যে ডি’কক চারটি শতরান করেছেন। তাঁদের ব্যাটারদের বিরুদ্ধে ভারতীয় বোলারদের দাপট চাক্ষুস করল ইডেন। জাডেজা একাই নিলেই পাঁচ উইকেট। দু’টি করে উইকেট নিলেন মহম্মদ শামি এবং কুলদীপ যাদব। একটি উইকেট নেন মহম্মদ সিরাজ। ডি’ককের উইকেট ফেলে তিনিই দক্ষিণ আফ্রিকাকে প্রথম ধাক্কা দিয়েছিলেন। বাকি কাজটা করলেন শামি, কুলদীপ এবং জাডেজা।
ভারতের শেষ ম্যাচ নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে। এ বারের বিশ্বকাপের সেটা হয়তো সব থেকে সহজ ম্যাচ রোহিতদের কাছে। সেমিফাইনালে খেলতে নামার আগে আগামী রবিবার চাপমুক্ত ভাবে খেলতে পারবেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy