শাকিব আল হাসান। —ফাইল চিত্র।
বিশ্বকাপে তিনটি ম্যাচ খেলে একটিতে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। পয়েন্ট তালিকার সপ্তম স্থানে রয়েছেন শাকিব আল হাসানেরা। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশের কাছে।
রোহিত শর্মাদের কাছে হারলে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওঠার রাস্তা আরও কঠিন হবে বাংলাদেশের। লিগ পর্বের বাকি সব ম্যাচ তাঁদের জিততেই হবে। না পারলে তাকিয়ে থাকতে হবে অন্য দলগুলির ম্যাচের ফলাফলের দিকে। বিশ্বকাপ আয়োজকদের বিরুদ্ধে মাঠে নামার আগে বাংলাদেশ শিবির একাধিক কারণে চাপে রয়েছে। প্রথমত অধিনায়ক শাকিবের চোট। সোমবার পর্যন্ত অনুশীলন করেননি তিনি। শাকিব অবশ্য ভারতের বিরুদ্ধে মাঠে নামতে মরিয়া। দ্বিতীয়ত লিটন দাস। উইকেটরক্ষক-ব্যাটার ফর্মে নেই। রান পাচ্ছেন না। ওপেন করতে নেমে প্রতি ম্যাচে দলকে শুরুতে চাপে ফেলে দিচ্ছেন। তার উপর পুণের হোটেল থেকে বাংলাদেশের সাংবাদিকদের বার করে দিয়ে নতুন বিতর্কে জড়িয়েছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে দুঃখপ্রকাশ করতে হয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকেও। সব মিলিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে মাঠে নামার আগে বেশ চাপে বাংলাদেশ। যদিও শাকিবেরা চাইছেন ভারতের বিরুদ্ধে সেরা ক্রিকেট খেলতে। প্রথম একাদশ নিয়ে শিবিরে আলোচনাও হয়েছে।
লিটন দাস: ফর্মে না থাকলেও লিটনকেই দেখা যেতে পারে ওপেনিংয়ে। অধিনায়ক শাকিবের আস্থা রয়েছে তাঁর উপর। তা ছাড়া লিটন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পরীক্ষিত। উইকেটরক্ষক হিসাবে তিনি দক্ষ। তাই বিতর্কে জড়ালেও রোহিতদের বিরুদ্ধে আরও একটা সুযোগ পাবেন তিনি।
তানজ়িদ হাসান: লিটনের সঙ্গে ওপেনিংয়ে খেলার সম্ভাবনা তানজ়িদের। তাতে ডানহাতি-বাঁহাতি জুটি থাকবে। তানজ়িদেরও ধারাবাহিকতার অভাব রয়েছে। তা-ও তাঁকেই ভাবা হচ্ছে লিটনের সঙ্গী হিসাবে। ফর্মে থাকা অন্য ব্যাটারদের শুরুতেই যশপ্রীত বুমরা, মহম্মদ সিরাজদের সামনে ফেলতে চাইছেন না শাকিবেরা।
মেহদি হাসান মিরাজ: ব্যাটিং অর্ডারের তিন নম্বরে আসতে পারেন মিরাজ। নিয়মিত রান পাচ্ছেন তিনি। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের অন্যতম ভরসা তিনি। নতুন বল খেলতে পারেন। লিটন বা তানজ়িন দ্রুত আউট হলে পরিস্থিতি সামাল দিতে পারবেন। কোচ এবং অধিনায়কের আস্থা রয়েছে তাঁর উপর।
নাজমুল হোসেন শান্ত: ব্যাটিং অর্ডারের চার নম্বরে থাকবেন শান্ত। বাংলাদেশের সহ-অধিনায়ক ভাল ফর্মে রয়েছেন। স্পিন বল তুলনায় ভাল খেলেন। মাঝের ওভারগুলোয় দলের ইনিংস টেনে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব থাকবে তাঁর উপর। ভারতের বিরুদ্ধে লড়াই করার মতো রান তোলার মূল দায়িত্ব থাকবে তাঁর উপরেই।
শাকিব আল হাসান: ভারতের বিরুদ্ধে খেলতে মরিয়া তিনি। খুব অসুবিধা না হলে মাঠে নামবেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। ব্যাট করতে তেমন সমস্যা হচ্ছে না তাঁর। দৌড়নোর ক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যা রয়েছে। বাংলাদেশ দলের ভারসাম্যের ক্ষেত্রেও শাকিবের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
মুশফিকুর রহিম: ব্যাটিং অর্ডারের ছ’নম্বরে মুশফিকুরের খেলা নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই। অভিজ্ঞ উইকেটরক্ষক-ব্যাটার বৃহস্পতিবার খেলছেনই। লিটন প্রথম একাদশে থাকলেও বিশ্বকাপে তিনিই দলের প্রথম উইকেট রক্ষক। ব্যাটেও রান পাচ্ছেন।
তৌহিদ হৃদয়: মূলত উপরের দিকে ব্যাট করতে পছন্দ করেন। তবে ব্যাটিং অর্ডারের যে কোনও জায়গায় খেলতে পারেন স্বচ্ছন্দে। তৌহিদের এই দক্ষতা বাংলাদেশ শিবিরের বড় স্বস্তি। ধরে ব্যাটিং করতে পারেন। তাই মিডল অর্ডার ব্যর্থ হলেও সাত নম্বরে নেমে উইকেটের এক দিক আগলে রেখে দলের ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন। তৌহিদকে বাদ দিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে খেলার কথা ভাবছে না বাংলাদেশ।
মাহমুদুল্লা রিয়াদ: অভিজ্ঞ অলরাউন্ডারের বিশ্বকাপের দলে জায়গাই নিশ্চিত ছিল না। যদিও তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন, তাঁকে ভারতে নিয়ে এসে ভুল করেননি শাকিবেরা। আট নম্বরে নেমেও রান করছেন। প্রয়োজনে অফ স্পিন করতে পারেন। তেমন পরিস্থিতি তৈরি হলে তৌহিদের সঙ্গে দলের ইনিংস টেনে নিয়ে যেতে পারবেন মাহমুদুল্লা। তিনি থাকলে বাংলাদেশের ব্যাটিং গভীরতাও বৃদ্ধি পাবে। বৃহস্পতিবার ভারতের বিরুদ্ধে তাঁরও খেলা নিশ্চিত।
তাসকিন আহমেদ: সেরা ফর্ম দেশে রেখে বিশ্বকাপ খেলতে এসেছেন বাংলাদেশের সেরা স্ট্রাইক বোলার। তবু বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ড তাঁকে ছাড়া আক্রমণ সাজানোর কথা ভাবছেন না। বড় শট মারতে পারেন তাসকিন। ব্যাটিং অর্ডারের নয় নম্বরে তাঁর খেলা নিশ্চিত।
মুস্তাফিজুর রহমান: নতুন বলে আক্রমণের দায়িত্ব থাকবে অভিজ্ঞ মুস্তাফিজুরের উপর। ব্যাটিং অর্ডারের ১০ নম্বরে খেলবেন তিনি। বিশ্বকাপে ফর্মেও আছেন তিনি। তাই ভারতের বিরুদ্ধে প্রথম একাদশে মুস্তাফিজুরের থাকা নিশ্চিত। তা ছাড়া আইপিএল খেলার সুবাদে ভারতের উইকেটগুলো সম্পর্কেও ধারণা রয়েছে তাঁর।
শরিফুল ইসলাম: ফর্মে থাকা শরিফুলও থাকবেন বাংলাদেশের প্রথম একাদশে। তিনি ব্যাট করবেন ১১ নম্বরে। প্রতি ম্যাচেই ভাল বল করছেন তিনি। নতুন বলে মুস্তাফিজুরের সঙ্গী হবেন তিনি। বাঁহাতি জোরে বোলারদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ব্যাটারদের দুর্বলতা জানা বাংলাদেশ শিবিরের। তাই দুই বাঁহাতি জোরে বোলারকে দিয়ে আক্রমণ শুরু করতে পারেন শাকিবেরা।
প্রথম একাদশ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার রাস্তায় যেতে চাইছে না বাংলাদেশ শিবির। তবে চোটের জন্য শেষ পর্যন্ত শাকিব খেলতে না পারলে প্রথম একাদশে আসবেন মেহেদি হাসান। সে ক্ষেত্রে তিনি নামবেন ব্যাটিং অর্ডারের সাত নম্বরে। পরের ব্যাটারেরা এক ধাপ করে এগিয়ে আসবেন। সেই সম্ভাবনা অবশ্য কম। কারণ ভারতের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মাঠে নামতে মরিয়া শাকিব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy