পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজ়ম। ডান দিকে, নিউজ়িল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন।
বছরের পর বছর ধরে পাকিস্তান ক্রিকেট দল মানে একটাই কথা সকলে বলে এসেছে। কেউ জানে না, কোন পাকিস্তানকে দেখা যাবে। এমন দল, যারা বিশ্বের যে কোনও প্রতিপক্ষকে হারিয়ে দিতে পারে? না কি সেই দলটা, যারা স্কুলছাত্রদের কাছেওহারতে পারে?
ভারত ও জ়িম্বাবোয়ের কাছে দু’টি ম্যাচেই শেষ বলে হারে পাকিস্তান। তার পরে ছুরি-কাঁচি বেরিয়ে পড়েছিল। বিশেষ করে বাবর আজ়মদের দেশের কিছু প্রাক্তন ক্রিকেটার নেমে পড়েছিল ওদের আক্রমণ করার জন্য। সব কিছু নিয়েই প্রশ্ন তুলতে শুরু করে দিল ওরা। পাকিস্তান সেমিফাইনালে যেতেই রাতারাতি সেই সুরটা বদলে গিয়েছে। সবাই বোধ হয় বুঝতে পারছে, ট্রফি জেতার দারুণ সুযোগও রয়েছে দলটার সামনে। যদিও প্রাক্তন এবং অগ্রজদের কাউকে এগিয়ে এসে বলতে দেখলাম না যে, দলটা তাদের ভুল প্রমাণ করেছে। কেউ বলল না, বেশি তাড়াহুড়ো করে দলটাকে বাতিলের খাতায় ফেলে দেওয়া হয়েছিল। এই সৎ সাহসটা ও দেশের প্রাক্তনরা কেউ দেখাল না।
অ্যাডিলেডের কিন্তু পাকিস্তানের রক্ষাকর্তা হয়ে ওঠার একটা ইতিহাস আছে। ১৯৯২-এ পঞ্চাশ ওভারের বিশ্বকাপে এ মাঠেই ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের ইনিংস ১০০ রানের মধ্যে শেষ হয়ে যায়। তার পর ইংল্যান্ড ব্যাট করতে নামার আগেই বৃষ্টি নামে। ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়ে যায়, পয়েন্ট ভাগাভাগি হয় দু’দলের মধ্যে। ওই লাইফলাইনটাই ওদের দরকার ছিল। এর পর ওই বিশ্বকাপে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি পাকিস্তানকে। কাপ জিতেই থামে। এ বারও নেদারল্যান্ডস হারিয়ে দিল দক্ষিণ আফ্রিকাকে আর তার ফলে সুযোগ এসে যায় পাকিস্তানের সামনে। ওরা বাংলাদেশকে হারিয়ে সেমিফাইনাল খেলার যোগ্যতা অর্জন করল।
এ বার পাকিস্তানের লড়াই নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে। যারা চুপচাপ থেকে কাজ সারে। আরও একটা বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে পৌঁছে গেল ওরা। নিউজ়িল্যান্ড দলটায় অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন ছাড়া হয়তো তেমন কোনও তারকা নেই। কিন্তু ওদের ক্রিকেটারদের দায়বদ্ধতা দেখার মতো আর মোক্ষম সময়ে নিজেদের ছাপিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা রাখে। প্রথম ম্যাচেই অস্ট্রেলিয়াকে দুর্দান্ত ভাবে হারিয়ে ওরা অভিযান শুরু করে। ওই জয়ের সুবাদেই গ্রুপের সেরা হয়ে শেষ চারে গিয়েছে ওরা।
আমার মনে হয় দুর্দান্ত একটা দ্বৈরথ হতে চলেছে বুধবার। পাকিস্তান সৌন্দর্য আর অনিশ্চয়তায় ভরা। নিউজ়িল্যান্ড অনেক ধীরস্থির প্রকৃতির। যেন আগুনের মুখোমুখি বরফ। প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল বরফের মতো ঠান্ডা আবহাওয়া দিয়ে। যত সময় গিয়েছে, ততই কিন্তু উত্তাপ বেড়েছে বিশ্বকাপের।
এ বার দেখা যাক, বুধবার আগুনের তাপে বরফ গলার দিন? নাকি বরফে নিভবে আগুন? (টিসিএম)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy