টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে হারিয়ে চতুর্থ জয় বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মার ভারতের। ছবি: এএফপি
বাংলাদেশকে হারিয়ে দিল ভারত। টানটান উত্তেজনার ম্যাচে রোহিত শর্মার দল ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে জিতল ৫ রানে। বাংলাদেশের ইনিংসের মাঝে বৃষ্টি এসে খেলা বন্ধ রাখল আধ ঘণ্টারও বেশি। তার পরেই ম্যাচের উপর থেকে নিয়ন্ত্রণ হারাল বাংলাদেশ। তা সত্ত্বেও শেষ বল পর্যন্ত লড়ে গেল ভারতের পড়শি দেশ। শেষ হাসি অবশ্য রোহিত শর্মাদেরই। প্রথমে ব্যাট করে ভারত ৬ উইকেটে ১৮৪ রান তোলে। জবাবে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে বাংলাদেশের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৬ ওভারে ১৫১ রান। তারা থেমে যায় ১৪৫ রানে।
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অবশেষে ছন্দে ফিরলেন কেএল রাহুল। প্রথম তিনটি ম্যাচে একেবারেই রান পাননি তিনি। এই ম্যাচে তিনি রানে ফিরলেন। অর্ধশতরান করলেন। ছন্দে ফিরলেন বিরাট কোহলিও। আগের ম্যাচে ১২ রানে আউট হলেও এই ম্যাচে তাঁর ব্যাট থেকে এল লড়াকু অর্ধশতরান। চলতি প্রতিযোগিতায় তৃতীয় বার পঞ্চাশের কোঠা পেরোলেন তিনি। লিটন দাসের ব্যাটিংয়ে এক সময় চিন্তা তৈরি হলেও ভারতের জিততে অসুবিধা হল না।
মেঘলা আকাশের নীচে টসে হারেন রোহিত শর্মা। বিপক্ষ অধিনায়ক শাকিব আল হাসান বোলিং নেওয়ার পরেই রোহিত বলেন, তিনি জিতলে ব্যাটই করতেন। এমন বললেও, শুরুটা ভারতের মোটেই ভাল হয়নি। রোহিতের কাছে সুযোগ ছিল এই ম্যাচে বড় রান করার। সেটা তিনি পারলেন না। শুরুতে বেশ কয়েকটা বল খেললেন। চতুর্থ ওভারেই হাসান মাহমুদের বলে ক্যাচ দিয়ে আউট। তার আগের ওভারেই জীবন পেয়েছিলেন। লোপ্পা ক্যাচ ফেলে দেন সেই হাসানই। জীবন ফিরে পেলেও সুযোগ কাজে লাগাতে পারলেন না।
বরং প্রচারের আলো অনেকটাই কেড়ে নিলেন কেএল রাহুল। তাঁকে নিয়ে প্রথম তিনটি ম্যাচে অনেক কথা উঠেছিল। চতুর্থ ম্যাচে রাহুল জবাব দিলেন। রোহিত ফিরে যাওয়ার পর বিরাট কোহলি ক্রিজে এসে ধরতে একটু সময় নেন। সেই সময় স্কোরবোর্ড সচল রাখার কাজ করে যান রাহুলই। তাসকিন আহমেদ বাদে বাংলাদের প্রায় সব বোলারকেই আক্রমণ করেন তিনি। যোগ্য সঙ্গত দেন কোহলিও। তিনিও ধীরে ধীরে হাত খুলতে থাকেন। তবে রাহুলের দুর্ভাগ্য, অর্ধশতরান করার পরের বলেই ফিরতে হল তাঁকে। ফাইন লেগ অঞ্চল দিয়ে শট নিতে গিয়েছিলেন। বল ব্যাটের কানায় লাগে। সহজ ক্যাচ ধরেন মুস্তাফিজুর রহমান।
চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দুর্দান্ত ছন্দে রয়েছেন সূর্যকুমার যাদব। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তার কোনও ব্যতিক্রম হল না। কোহলির অনেক পরে নেমে এক সময় তাঁকে ছুঁয়ে ফেললেন তাঁকে। কিন্তু ঠকে গেলেন শাকিবের বলে। সোজা হয়ে আসা বলে কাট করতে যান। বলের লাইন মিস করেন। স্টাম্প নড়িয়ে দেয় শাকিবের বল। কোহলি এর পর উল্টো দিকে কাউকে পাননি। কিন্তু তিনি ক্রিজে থাকতে ভারতের আর চিন্তা কিসের! টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজের দুরন্ত ছন্দ বজায় রেখেই অর্ধশতরান করলেন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রানের মালিকও হয়ে গেলেন ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক। ৬৪ রানে অপরাজিত থাকলেন কোহলি। শেষ দিকে নেমে অশ্বিন একটি চার এবং একটি ছয়ের সাহায্যে ভারতের রান আরও কিছুটা বাড়িয়ে দিলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন।
বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছিল স্বপ্নের মতো। লিটন দাস যেন ঠিক করেই রেখেছিলেন ভারতীয় বোলারদের উপরে শুরু থেকে শাসন করবেন। প্রথম ওভারে মাত্র দু’রান উঠল। কিন্তু আরশদীপের সিংহের ওভার থেকেই হাত খুলতে শুরু করলেন লিটন। আরশদীপের ওভারে উঠল ১২ রান। পরের ওভারে ভুবনেশ্বর দিলেন ১৬ রান। ষষ্ঠ ওভারে শামিও ১৬ রান দিলেন।
হঠাৎই বৃষ্টি এসে বাগড়া দিল খেলায়। লিটনের অর্ধশতরানের পরেই বৃষ্টি নামল। অ্যাডিলেডে এমনিতেই বৃষ্টির পূর্বাভাস ছিল। সেই সম্ভাবানা সত্যি করেই বাংলাদেশের ইনিংসের সপ্তম ওভারে নামল বৃষ্টি। তখন বাংলাদেশের স্কোর ৬৬-০। প্রায় আধ ঘণ্টা খেলা বন্ধ থাকল। সেটাই বাংলাদেশের ছন্দ নষ্ট করে দিল। ফিরে এসেই একের পর এক উইকেট হারাতে থাকল ভারত।
প্রথমেই সতীর্থের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে লিটন। দৃশ্যতই সতীর্থ নাজমুল হোসেনের উপর প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত হয়ে পড়েন তিনি। এর পর বাংলাদেশের আর কোনও ব্যাটারই দাঁড়াতে পারেননি। শেষ দিকে ছয়, চার মেরে সাময়িক ভাবে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফিরিয়েছিলেন তাসকিন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা ম্যাচ জেতাতে পারেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy