Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
T20 World Cup 2022

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে জ়‌িম্বাবোয়ের অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তনের পিছনে এক ভারতীয়ের হাত

জ়িম্বাবোয়ে ক্রিকেটের কঠিন সময় যিনি নিজের চোখের সামনে দেখেছেন। আবার ফিনিক্স পাখির মতো তারা কী ভাবে জেগে উঠেছে, সেটাও প্রত্যক্ষ করেছেন। জ়িম্বাবোয়ের এই সাফল্যে সবচেয়ে বেশি খুশি বোধ হয় এক জন ভারতীয়।

রাজাদের বদলের পিছনে দায়ী এক ভারতীয়।

রাজাদের বদলের পিছনে দায়ী এক ভারতীয়। ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২২ ২২:৫২
Share: Save:

বিশ্বকাপে এক সময় তাদের যোগ্যতা অর্জনই নিশ্চিত ছিল না। সেই জ়িম্বাবোয়ে দল প্রতিযোগিতায় অন্যতম সেরা অঘটন ঘটিয়েছে বৃহস্পতিবার পাকিস্তানকে হারিয়ে। জ়িম্বাবোয়ের এই সাফল্যে সবচেয়ে বেশি খুশি বোধ হয় এক জন ভারতীয়। তিনি লালচাঁদ রাজপুত। জ়িম্বাবোয়ে ক্রিকেটের কঠিন সময় যিনি নিজের চোখের সামনে দেখেছেন। আবার ফিনিক্স পাখির মতো তারা কী ভাবে জেগে উঠেছে, সেটাও প্রত্যক্ষ করেছেন।

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জয়ের পর রাজপুত বলেছেন, “আমি চেয়েছিলাম ওরা অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে যোগ্যতা অর্জন করুক। পাকিস্তানকে হারানোটা তো কেকের উপর চেরির মতো। আমি ওদের নিয়ে অত্যন্ত গর্বিত।” দলের সঙ্গে যোগ্যতা অর্জন পর্ব পর্যন্ত ছিলেন রাজপুত। কিন্তু পরিবারের সঙ্গে দীপাবলী কাটাবেন বলে দেশে ফিরে আসেন। অস্ট্রেলিয়া আর যাননি।

জ়িম্বাবোয়ের কঠিন সময় সম্পর্কে বলতে গিয়ে রাজপুত ফিরে গিয়েছেন জ়িম্বাবোয়েতে কোচিং করার শুরুর দিকে। ২০১৮-র ১৩ জুলাই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পাঁচ ম্যাচের এক দিনের সিরিজ়‌ শুরু হওয়ার কথা। তার আগের দিন বোর্ডের সঙ্গে ঝামেলার জেরে সরে দাঁড়ান পাঁচ ক্রিকেটার। রাজপুত বলেছেন, “ম্যাচের এক দিন আগে আমাকে জানানো হল, শন আরভিন, ক্রেগ উইলিয়ামস, সিকান্দার রাজা এবং ব্রেন্ডন টেলর বেতন নিয়ে বোর্ডের সঙ্গে ঝামেলার জেরে সরে দাঁড়িয়েছে। আমি অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। জ়িম্বাবোয়ে ক্রিকেট বোর্ডের এমডি গিভমোর মাকোনি আমাকে বলেন যে, সিরিজ়‌ বাতিল করা যাবে না। আমাদের হাতে অত্যন্ত দুর্বল একটা দল ছিল। প্রথম ম্যাচে ১০০-র মতো রান করি। দ্বিতীয় ম্যাচে সেটা অর্ধেক হয়ে যায়। তখনই বুঝেছিলাম, আমাকে এখানে থেকে সব বদলাতে হবে।”

রাজপুতের সংযোজন, “২০১৯-এর বিশ্বকাপে যোগ্যতা অর্জন করতে পারিনি আমরা। তার পর নির্বাসিত হই। ওটাই জ়িম্বাবোয়ে ক্রিকেটের সবচেয়ে কালো দিন। তার চার বছর পর দল যে এ ভাবে বদলে যাবে তা ভাবা যায় না।”

লালচাঁদ রাজপুত

লালচাঁদ রাজপুত ফাইল ছবি

নিল জনসন, ফ্লাওয়ার ভ্রাতৃদ্বয়, মারে গুডউইন, হেনরি ওলোঙ্গাদের দেশের যে এই অবস্থা হবে এটা ভাবতে পারেননি কেউই। প্রাক্তন এই ক্রিকেটাররা বোর্ড ছেড়ে বেরিয়ে যেতেই সমস্যা শুরু হয়। প্রশাসনিক দুর্বলতা, কম বেতন, ক্রিকেটারদের নিম্নমান— সব দিক থেকে চাপে পড়ে জ়িম্বাবোয়ে। সরকার এবং আইসিসি ক্রিকেট বোর্ডকে নির্বাসিত করে দেয় ছ’মাসের জন্য। রাজপুতের হস্তক্ষেপেই পরিস্থিতি বদলায়। দলের মধ্যে মুম্বইয়ের পরিচিত ‘খাড়ুস’ মনোভাব নিয়ে আসেন রাজপুত।

তিনি বলেছেন, “ঘরোয়া এবং ক্লাব ক্রিকেটের অনেক ম্যাচ দেখা শুরু করি। হারারে, বুলাওয়াও, মুতারে সব জায়গায় যাওয়া শুরু করি। সেখান থেকেই বাঁ হাতি পেসার রিচার্ড এনগারাভাকে চোখে পড়ে। ও পাকিস্তান ম্যাচে ১৫টা ডট বল করেছে।”

রাজপুতের সংযোজন, “দায়িত্ব নেওয়ার পর আমি অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের বলেছিলাম, তোমরা যদি এগিয়ে এসে আরও বেশি দায়িত্ব না নাও, তা হলে জ়িম্বাবোয়ের হয়ে খেলার কোনও অর্থ নেই। যদি হারতেই হয়, তা হলে আমি তরুণদের নিয়ে খেলব। ফলাফলের চিন্তা করব না। এতেই ওদের মানসিকতা বদলে যায়। প্রত্যেকে ফিরে আসে এবং দলের জন্য নিজেদের উজাড় করে দেয়।”

পাক ম্যাচে জয়ের নায়ক রাজাকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত রাজপুত। বলেছেন, “সিকান্দার খুব আবেগপ্রবণ। ৩৬ বছর বয়সে এসেও এত ভাল খেলছে। কয়েক বছর আগে আমি দায়িত্ব নেওয়ার সময় ওকে প্রশ্ন করেছিলাম, ‘তুমি আজ পর্যন্ত দেশকে ক’টা ম্যাচে জিতিয়েছো?’ ও উত্তর দিতে পারেনি। অনেক দিন কোনও শতরান ছিল না। ৪০-৫০ রান করেই খুশি থাকত।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy