টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক করেছেন কার্তিক মেয়াপ্পন। ছবি: টুইটার
এ বারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম হ্যাটট্রিক করেছেন তিনি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সব মিলিয়ে পঞ্চম বোলার হিসাবে পর পর তিন বলে তিন উইকেট নিয়েছেন। ব্রেট লি, কাগিসো রাবাডাদের সঙ্গে জায়গা করে নেওয়া সংযুক্ত আরব আমিরশাহির কার্তিক মেয়াপ্পন নাকি ছোটবেলায় ক্রিকেট পছন্দই করতেন না। তাঁর পছন্দ ছিল দাবা। কিন্তু দেশ ছাড়ার পরেই ক্রিকেটের প্রেমে পড়ে যান মেয়াপ্পন।
চেন্নাইয়ের স্কুলে পড়ার সময় দাবার প্রতি ছেলের ভালাবাসা প্রথম লক্ষ্য করেন মা সেলভি সুব্বাইয়া। ভেবেছিলেন, একটি কোচিং ক্যাম্পে ভর্তি করে দেবেন। কিন্তু তার পরেই তাঁরা চলে যান দুবাই। আবু ধাবিতে চাকরি করতেন তাঁর স্বামী মেয়াপ্পন পালানিপ্পন। দুবাইয়ে দাবার কোনও কোচিং ক্যাম্প ছিল না। কয়েক বছর পরে ভারতে ফিরে আসার পরে মেয়াপ্পনকে দাবার প্রশিক্ষণ শিবিরে ভর্তি করে দেন তাঁর মা। চেন্নাইয়ে কয়েকটি প্রতিযোগিতাতেও অংশ নেন তিনি। কিন্তু দুবাইয়ে ফিরে যাওয়ার পরে আবার দাবায় বিরতি। দুবাইয়ে যেখানে তাঁরা থাকতেন, সেখানে বাচ্চা ছেলেরা ক্রিকেট খেলত। তাদের সঙ্গেই প্রথম ক্রিকেট খেলা শুরু করে মেয়াপ্পন।
ধীরে ধীরে ক্রিকেটের প্রেমে পড়ে যায় মেয়াপ্পন। সেলভি একটি ইংরাজি পত্রিকাকে বলেন, ‘‘সব ক্রিকেটারের নাম ওর মনে থাকত। সারা ক্ষণ ক্রিকেট নিয়ে কথা বলত। তাই আমরা ঠিক করি ওকে ক্রিকেটের কোচিং ক্যাম্পে ভর্তি করে দেব।’’ মেয়াপ্পনের বাবা বিশ্ববিদ্যালয় স্তর পর্যন্ত ক্রিকেট খেলেছেন। তাই ছেলেকে উৎসাহ দেন তিনি।
মেয়াপ্পনকে ভাল স্পিনার তৈরি করার দায়িত্ব অবশ্য নিয়েছিলেন তামিলনাড়ুর কোচ বেঙ্কটরমন। তিনি বলেছেন, ‘‘মেয়াপ্পনের বাবা আমার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে খেলত। ওদের আমি ভাল করে চিনতাম। মেয়াপ্পনকে ছোটবেলায় দেখেই বুঝেছিলাম, ভাল স্পিনার হওয়ার গুণ ওর মধ্যে রয়েছে। যখনই ওরা ভারতে আসত, মেয়াপ্পন আমার কাছে এসে স্পিনের খুঁটিনাটি শিখত।’’
তবে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে ক্রিকেটে ছেলে কত দূর যেতে পারবে তা নিয়ে সন্দেহ ছিল মেয়াপ্পনের বাবার। তাই খেলার পাশাপাশি পড়াশোনাও চলছিল। মেয়াপ্পন যখন প্রথম আমিরশাহির অনূর্ধ্ব-১৯ দলে সুযোগ পান, তখন পালানিপ্পন বুঝতে পারেন, ক্রিকেটই ছেলের ভবিষ্যৎ।
কোভিডের কারণে ২০২১ সালে আইপিএল হয়েছিল সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে। সেই সময় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর নেট বোলার হিসাবে নিয়েছিল মেয়াপ্পনকে। নেটে বিরাট কোহলি, এবি ডিভিলিয়ার্সদের বল করেছিলেন তিনি। তখন স্বপ্ন দেখতেন বিশ্বকাপ খেলার। সেই স্বপ্ন সত্যি হয়েছে মেয়াপ্পনের। শুধু তাই নয়, ক্রিকেটের রেকর্ড বইয়ে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy