অনূর্ধ্ব ১৯ ভারতীয় ক্রিকেট দল। ছবি: আইসিসি।
অনূর্ধ্ব ১৯ ক্রিকেটে বিশ্বের সব থেকে শক্তিশালী দল বলা হয় ভারতকে। এটা যে শুধু কথার কথা নয়, তা গত কয়েক বছর ধরে প্রমাণ করে চলেছেন ভারতের জুনিয়র ক্রিকেটারেরা। টানা পাঁচটি বিশ্বকাপে ফাইনালে উঠল ভারতের অনূর্ধ্ব ১৯ দল। সব থেকে বেশি পাঁচ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত। এ বার সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠা উদয় সাহারানের দল তিনটি কারণে প্রতিপক্ষ দলগুলির থেকে এগিয়ে। তবে দুর্বলতার জায়গা রয়েছে ভারতের ছোটদের দলের।
অনূর্ধ্ব ১৯ ভারতীয় দলের শক্তি
শক্তি ১
ভারতীয় দলের অন্যতম শক্তি হল অভিজ্ঞতা। একাধিক সদস্যের প্রথম শ্রেণি বা সিনিয়র পর্যায়ে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটের মান অনেকে দেশের থেকে উন্নত। খেলোয়াড়ের সংখ্যা প্রচুর হওয়ায় রাজ্য দলে জায়গা পাওয়ার লড়াই বেশ কঠিন। সেই পথ অতিক্রম করার পাশাপাশি, দেশের সেরা ক্রিকেটারদের সঙ্গে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে দলের একাধিক সদস্যের। সর্বোচ্চ পর্যায় লড়াই করার মানসিক শক্তি এবং আত্মবিশ্বাস রয়েছে ভারতীয় দলের ক্রিকেটারদের। অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপে একের পর এক ম্যাচে দাপুটে জয় তারই প্রমাণ।
শক্তি ২
ভারতের অনূর্ধ্ব ১৯ দলের অন্যতম শক্তি ব্যাটিং। প্রতিযোগিতার অন্যতম সেরা ব্যাটিং লাইন আপ ভারতের। সাত নম্বর পর্যন্ত স্বীকৃত ব্যাটারেরা নামেন। তার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ, অধিকাংশ ব্যাটার ভাল ফর্মে রয়েছেন। অধিনায়ক সাহারান ছাড়াও মুশির খান, সচিন ধাস, অর্শিন কুলকার্নিরা ধারাবাহিক ভাবে রান করছেন। দলে বাঁহাতি এবং ডানহাতি ব্যাটারের ভারসাম্যও ভাল। যা প্রতিপক্ষ বোলারদের লাইন-লেংথ ঠিক রাখার ক্ষেত্রে অন্যতম প্রধান সমস্যা।
শক্তি ৩
সাদা বলের ক্রিকেটে অলরাউন্ডারদের ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। দলের ভারসাম্য বৃদ্ধি করেন তাঁরা। ভারতীয় দলে রয়েছেন দু’জন অলরাউন্ডার। অর্শিন এবং মুশির। অর্শিন ওপেন করেন। জোরে বোলিং করতে পারেন তিনি। মুশির ব্যাট করেন তিন নম্বরে। বাঁহাতি স্পিনার সরফরাজ খানের ভাই। দুই অলরাউন্ডার দলের ব্যাটিংকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি দলের বোলিং আক্রমণের বৈচিত্রও বৃদ্ধি করছেন। দু’জনকেই নিয়মিত বোলার হিসাবে ব্যবহার করছেন অধিনায়ক সাহারান।
অনূর্ধ্ব ১৯ ভারতীয় দলের দুর্বলতা
দুর্বলতা ১
ফাইনালে পৌঁছে যাওয়া ভারতীয় দলের অন্যতম প্রধান দুর্বলতা ওপেনিং জুটি। প্রথম উইকেটে বড় রানের জুটি তৈরি করতে পারছেন না আদর্শ সিংহ এবং অর্শিন। প্রতি ম্যাচেই দ্রুত প্রথম উইকেট হারাচ্ছে ভারত। আদর্শের ফর্ম কিছুটা চিন্তায় রেখেছে দলকে। সেমিফাইনালেও রান পাননি। শুরুতেই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ছে দল। তাতে পাওয়ার প্লের সুবিধা ঠিকমতো কাজে লাগানো যাচ্ছে না।
দুর্বলতা ২
বড় ম্যাচ জেতার জন্য একাধিক বড় জুটি গুরুত্বপূর্ণ হয়। ভারতের অনূর্ধ্ব ১৯ দল এই ক্ষেত্রে কিছুটা পিছিয়ে আছে। এক-দু’জন ব্যাটার বা বোলারের কৃতিত্বে ধারাবাহিক ভাবে জয় আসছে ঠিকই। তবু ফাইনালের মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে একাধিক বড় জুটি প্রয়োজন হতে পারে। বিশেষ করে ইনিংসের শুরুর দিকে জুটি তৈরির দিকে নজর দিতে হবে উদয়দের।
দুর্বলতা ৩
বোলারদের সতর্ক থাকতে হবে অতিরিক্ত রান দেওয়ার বিষয়ে। ‘নো’ বা ‘ওয়াইড’ বল যেমন প্রতিপক্ষকে রান পেতে সাহায্য করে, তেমন অতিরিক্ত বল খেলার সুযোগও করে দেয়। সেমিফাইনালে ৯টি ওয়াইড বল করেছেন ভারতীয় বোলারেরা। নমন তিওয়ারি একাই করেছেন ৫টি। তার আগে নেপালের বিরুদ্ধে ‘নো’ বা ‘ওয়াইড’ মিলিয়ে ১৩টি বল বেশি করতে হয়েছে ভারতকে। এ ব্যাপারে সাবধানী হতে হবে ভারতীয় দলকে।
বিশ্বকাপে টানা ছ’টি ম্যাচ জিতেছে ভারতীয় দল। অধিকাংশ ম্যাচেই এসেছে বড় ব্যবধানে জয়। পাঁচ বারের চ্যাম্পিয়নদের সামনে ষষ্ঠ বার খেতাব জয়ের সুযোগ। আত্মতুষ্টি বড় শত্রু হতে পারে হৃষীকেশ কানিতকরের দলের। রবিবারের ফাইনালের আগে সতর্ক থাকতে হবে ভারতীয় শিবিরকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy