সফল: টেস্টে আট নম্বর সেঞ্চুরির পরে রাহুল। বুধবার। ছবি: রয়টার্স।
সমাজমাধ্যমে যখন নির্বিচারে বাক্যবাণে বিদ্ধ হন, তখন কী একবারের জন্য মনে হয় না, তার একটা জুতসই জবাব দেওয়া একান্তই প্রয়োজনীয় হয়ে পড়ছে?
বুধবার সেঞ্চুরিয়নে লড়াকু ১০১ রানের ইনিংস উপহার দেওয়া কে এল রাহুলের দিকে সাংবাদিক বৈঠকে এমনই প্রশ্ন উড়ে আসে। বাইশ গজে যে ভাবে ছয় হাঁকিয়ে তিনি টেস্টে অষ্টম শতরানে পৌঁছেছিলেন, সেই মেজাজই ধরে রেখে ভারতীয় তারকার পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘সমালোচনার জবাব দিয়ে আমি কী পাব?’’ সেখানেই না থেমে রাহুল বলে যান, ‘‘লোকের যেটা মনে হবে, সেটা বলেই যাবে। যদি আপনি যথার্থ পারফর্মার হয়ে থাকে, তা বলে পারফর্ম করেই তার জবাব দিতে হবে।’’
আর সমাজমাধ্যমের প্রতিক্রিয়া? রাহুলের জবাব, ‘‘ওটা থেকে নিজেকে যত দূরে রাখতে পারবেন, আপনি আনন্দে থাকবেন। আমি তো সেই দর্শন মেনেই চলি।’’ যোগ করেন, ‘‘তবে সমাজমাধ্যমে যাঁরা মতামত দেন, তাঁদেরও একটা সীমা পর্যন্তই এগোনো উচিত। আজ যাঁরা আমার প্রশংসা করছেন, তাঁরাই কয়েক মাস আগে আমাকে বিদ্রুপ করেছেন।’’
বুধবার রাহুলের ইনিংস দেখে মোহিত সুনীল গাওস্কর মন্তব্য করেছেন, তাঁর এই শতরান ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথম দশের মধ্যে থাকবে। শুধু তাই নয়। স্ত্রী আথিয়া শেট্টিও সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠো।’’
যা শুনে রোহিতের দলের অন্যতম তারকার অভিমত, ‘‘গাওস্করের মতো কিংবদন্তি ব্যক্তিত্ব যদি সেই কথা বলে থাকেন, সেটা তো বিশাল একটা প্রাপ্তি। আসলে চোটের জন্য মাঠের বাইরে থাকার সময় নিজেকে আরও সংহত এবং পরিপূর্ণ করা তোলার চেষ্টা করেছি।’’ যোগ করেন, ‘‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেললে শুধুমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে সমস্ত ধরনের পরীক্ষার মুখে দাঁড়ালেই চলে না, তার সঙ্গে নিজস্ব একটা ব্যক্তিত্বও তৈরি করতে হয়। চোটের সময় আমি সেই বিষয়টার উপরে বেশি জোর দিয়েছিলাম।’’
নিজের শতরান নিয়ে রাহুলের ব্যাখ্যা, ‘‘মাঠে নেমে বেশি কিছু চিন্তা করার সময় থাকে না। পরিস্থিতিই বুঝিয়ে দেয়, কী ভাবে খেলা দরকার। প্রয়োজন নিজের মনকে হাল্কা রাখা। মনে রাখতে হয় ব্যাট করতে হবে শেষ পর্যন্ত। তাতেই শতরান এসেছে।’’
ভারতীয় তারকার শতরান দেখে মোহিত সচিন তেন্ডুলকরও। কিংবদন্তি ক্রিকেটার সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘দুর্দান্ত খেলেছ রাহুল। আমাকে সবচেয়ে বেশি আকৃষ্ট করেছে রাহুলের ভাবনার স্বচ্ছতা। পুরো ইনিংসে ওর ফুটওয়ার্ক ছিল অসাধারণ, এবং সেটা তখনই সম্ভব যখন কোনও ব্যাটসম্যান ঠিক ভাবে চিন্তাভাবনা করতে পারে।’’
সেখানেই না থেমে সচিন আরও লিখেছেন, ‘‘এই কঠিন টেস্টের প্রেক্ষিতে রাহুলের ১০১ খুবই মূল্যবান হয়ে দাঁড়াল। ভারতীয় দলেরও খুশি হওয়া উচিত, ওরা রানকে ২৪৫ পর্যন্ত নিয়ে যেতে পেরেছে।’’ দক্ষিণ আফ্রিকা সম্পর্কে সচিন লিখেছেন, ‘‘নান্দ্রে বার্গার এবং জেরাল্ড কোয়েটজ়ের অন্তর্ভূক্তি দক্ষিণ আফ্রিকা দলের পক্ষে ভাল বলতে হবে। তবে এই পরিবেশে ওদের বোলিং যে সেই মানের হয়নি, তা নিয়ে নিশ্চয়ই দক্ষিণ আফ্রিকা শিবিরও খুশি হতে পারবে না।’’
সচিনের মতোই উল্লসিত আর এক কিংবদন্তি সুনীল গাওস্কর। তিনি মনে করেন, সেঞ্চুরিয়নে রাহুলের ১০১ রান ভারতীয় ক্রিকেট ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম দশে থাকবে। সম্প্রচারকারী চ্যানেলে সানি বলেছেন, ‘‘রাহুলের থেকে আমরা এমন ব্যাটিংই আশা করি। গত ৫০ বছর ধরে ক্রিকেট দেখছি। কোনওরকম সংশয় ছাড়াই বলতে পারি, রাহুলের এই শতরান ভারতীয় টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম দশে থাকবে।’’
এ দিকে, ভারতকে এ দিন যিনি পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন, সেই ডিন এলগার জানিয়েছেন তাঁর নতুন করে কিছু প্রমাণ করার নেই। খোলা মনে ব্যাটিং করার মানসিকতা নিয়ে খেলতে নেমেছিলেন। সাংবাদিক বৈঠকে এলগার বলেছেন, ‘‘আমার তো নতুন করে কারও সামনে কিছু প্রমাণ করার নেই। মাঠে নেমে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করার ভাবনা নিয়ে নেমেছিলাম।’’
এলগার জানিয়েছেন, উইকেট ক্রমশ ব্যাটিং সহায়ক হয়ে উঠছে। বলেছেন, ‘‘রোদ ওঠার পরে পিচ কিন্তু ব্যাটিং সহায়ক হয়ে উঠেছে। আমি তাই নিজের মতো করে ব্যাট করেছি। ইচ্ছা রয়েছে কালকের দিনটাতেও পুরো ব্যাট করার।’’ টেস্টে অভিষেক হওয়া ডেভিড বেল্ডিনহ্যামের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘‘প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy