প্রাপ্তি: সৌরভের হাত থেকে বিশেষ পুরস্কার নিচ্ছেন ঝুলন। জীবনকৃতি সম্মান সম্বরণকে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
সিএবির বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে শনিবার বিশেষ পুরস্কার দেওয়া হল ঝুলন গোস্বামীকে। দীর্ঘ কুড়ি বছরের ক্রিকেটযাত্রা সদ্য শেষ করেছেন ঝুলন। সিএবির প্রধান অতিথি হিসেবেও এসেছিলেন তিনি। প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বরাবরই কিংবদন্তি মেনে এসেছেন ঝুলনকে। এ দিন বক্তব্য রাখতে উঠে সৌরভ জানিয়ে দিলেন, এক জীবনে একটা ঝুলনেরই দেখা পাওয়া যায়।
সৌরভের বক্তব্যে বিশেষ জায়গা করে নিয়েছিলেন মহিলা ক্রিকেটারেরা। তিনি বলেন, ‘‘মেয়েদের ক্রিকেটের জন্য খুবই ভাল একটি বছর গেল। এখানে দীপ্তি, রিচাকে দেখতে পাচ্ছি। ভারতীয় দলের হয়ে অসাধারণ খেলেছে। কমনওয়েলথ গেমস ক্রিকেটের ফাইনালে উঠেছিল। এশিয়া কাপ জিতে ফিরেছে। ইংল্যান্ডে টানা তিনটি ওয়ান ডে জিতেছে, যা আগে কখনও হয়নি।’’
তাঁর বক্তব্যের মাঝেই সৌরভ তুলে ধরেন ঝুলনের প্রসঙ্গ। বলেন, ‘‘ঝুলনের কথা না বললে বিষয়টি সম্পূর্ণ হবে না। এক জীবনে একজনই ঝুলন তৈরি হয়। মেয়েদের ক্রিকেটের প্রতি ওর অবদান ভোলার নয়। আমি খুবই খুশি ইংল্যান্ডে শেষ তিনটি ওয়ান ডে-ই ও খেলেছে। লর্ডসের মতো মাঠে শেষ করেছে ক্রিকেটজীবন। যোগ্য সম্মান পেয়েছে। আশা করব, ভারতীয় ক্রিকেটকে ও আরও কিছু দেবে।’’
শেষ কয়েক বছরে বাংলার ক্রিকেট যে প্রচুর উন্নতি করেছে, তা-ও বলতে ভুললেন না সৌরভ। তাঁর কথায়, ‘‘শেষ কয়েক বছরে বাংলার ক্রিকেট প্রচণ্ড উন্নতি করেছে। মহম্মদ শামি ভারতীয় দলে ফিরে বিশ্বকাপে ভাল খেলছে। শাহবাজ় আহমেদ ও মুকেশ কুমারও সদ্য ভারতীয় দলে সুযোগ পেয়েছে। শাহবাজ় ভাল খেলেছে। মুকেশ সুযোগ পায়নি।’’
সিএবির পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান নিয়ে সৌরভের স্মৃতিচারণ, ‘‘ছোটবেলার কথা মনে পড়ে যায়। ইডেনেই আগে এই অনুষ্ঠান হত। মঞ্চে উঠতাম পুরস্কার নিতে। এই দিনটা বাংলারক্রিকেটারদের জন্য খুবই স্মরণীয়। সারা বছরের পরিশ্রমের ফল পাওয়া যায় এ দিন। শেষ তিন বছরে কোভিড অতিমারির জন্য এই অনুষ্ঠান হয়নি। এ দিন যারাই পুরস্কার পাচ্ছে,সকলকে অভিনন্দন।’’
বিশেষ পুরস্কার পাওয়ার পরে দীপ্তি শর্মা, ঝুলন গোস্বামী ও সঞ্চালক চারু শর্মার সঙ্গে একটি টক শো আয়োজন করে সিএবি। সেখানে ঝুলন জানিয়ে দেন, কেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন তিনি। ঝুলন বলছিলেন, ‘‘একটা সময়ের পরে বুঝতে পারি আমার মন সঙ্গ দিলেও শরীর দিচ্ছে না। তরতাজা হয়ে ফিরতে সময় লাগছে। তখনই ধীরে ধীরে সিদ্ধান্ত নিই, এ বার ক্রিকেট থেকে সরে যেতে হবে।’’ বিশেষ সম্মান পাওয়া দীপ্তি বলেন, ‘‘আমরা এখনও চাই ঝুলুদি ভারতীয় দলের হয়ে খেলুক। শেষ ম্যাচেও ঝুলুদি দেখিয়েছে ও কতটা গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিল দলের।’’
তিন বছর পরে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান হওয়ায় ২০১৯ থেকে ২০২২ পর্যন্ত বিভিন্ন ক্রিকেটার ও সাপোর্ট স্টাফকে পুরস্কৃত করা হয়। ২০১৯ ও ২০২০ মরসুমে কার্তিক বসু জীবনকৃতি সম্মান দেওয়া হয় উদয়ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় ও গার্গী বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ২০২০ ও ২০২১ মরসুমের কার্তিক বসু জীবনকৃতি সম্মান পান বাংলার রঞ্জি ট্রফি জয়ী অধিনায়ক সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়। মহিলা ক্রিকেটার হিসেবেসেই সম্মান পান লোপামুদ্রা ভট্টাচার্য। ২০২১ ও ২০২২ মরসুমে জীবনকৃতি সম্মান পান অশোক মলহোত্র ও মিঠু মুখোপাধ্যায়।
জীবনকৃতি সম্মান গ্রহণ করে সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলছিলেন, ‘‘কার্তিক বসু জীবনকৃতি সম্মান পেয়ে আমি আপ্লুত। ঘটনাচক্রে আমার কোচ ছিলেন স্বয়ং কার্তিক বসু। এই পুরস্কার আমার মা ও কার্তিক বসুকে উৎসর্গ করছি।’’ উল্লসিত অশোক মলহোত্রও। তাঁর কথায়, ‘‘বাংলার হয়ে একাধিক সম্মান পেয়েছি। হরিয়ানা থেকে ক্রিকেটযাত্রা শুরু হলেও আমি এখন বাংলারই ছেলে।’’
২০১৯-’২০ মরসুমে সিএবির বর্ষসেরা ক্রিকেটার হলেন অনুষ্টুপ মজুমদার। ২০২০-’২১ মরসুমে বর্ষসেরা ক্রিকেটার শাহবাজ় আহমেদ। ২০২১-’২২ মরসুমেও শাহবাজ়ের হাতেই সেই পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy