টানা তিনটি আইসিসি প্রতিযোগিতার ফাইনাল খেলেছে ভারত। তার মধ্যে দেশের মাটিতে ৫০ ওভারের বিশ্বকাপের ফাইনালে হার ছাড়া, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এবং চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অপরাজিত থেকে জিতেছে। সে জন্য ভারতীয় ক্রিকেটারদের আরও সম্মান প্রাপ্য বলে দাবি করলেন রোহিত শর্মা। পাশাপাশি মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের মানসিকতার বদল এবং ট্রফি জয়ের রহস্য নিয়েও কথা বলেছেন তিনি।
ভারতীয় দলের সাফল্য
গত তিনটি আইসিসি প্রতিযোগিতায় ২৪টির মধ্যে ২৩টি ম্যাচে জিতেছে ভারত। হেরেছে কেবল ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ ফাইনালে। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের পোস্ট করা এক ভিডিয়োয় রোহিত বলেছেন, “গত তিনটে আইসিসি প্রতিযোগিতায় এই দলটা কী করেছে এক বার দেখুন। মাত্র একটা প্রতিযোগিতায় ফাইনালে হেরেছে। যদি সেটাও জিততাম, তা হলে এই দলটা তিনটে আইসিসি প্রতিযোগিতায় অপরাজিত থেকে ট্রফি জিতত। আমি আগে কোনও দিন কোনও দলের এমন কীর্তির কথা শুনিনি। বাইরে থেকে দেখলে ভাল লাগে। তবে এই দলটা অনেক উত্থান-পতনের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। কঠিন সময় কাটানোর পর উচ্ছ্বাস তো থাকবেই। এমন কৃতিত্ব অর্জন করলে কার না ভাল লাগে। যারা এই তিনটে প্রতিযোগিতায় খেলেছে তাদের আরও সম্মান প্রাপ্য।”
সঠিক পরিকল্পনায় সাফল্য
রোহিতের মতে, ২০২২-এর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের কাছে ১০ উইকেটে হার ভারতীয় দলের কাছে শিক্ষণীয় ছিল। কারণ ওখান থেকেই সব বদলাতে শুরু করেছিল। তিনি বলেছেন, “২০২২-এর অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপ থেকে আমাদের যাত্রাটা শুরু হয়েছিল। আমরা সেমিফাইনালে হেরে গিয়েছিলাম। তার পরে বেশ কিছু জিনিস ঠিকঠাক করার দিকে নজর দিয়েছিলাম। সতীর্থদের বলে দিয়েছিলাম, তোমাদের থেকে কী কী প্রত্যাশা করি এবং কেমন খেলা তোমাদের থেকে চাই। এতে সবার সামনে সব কিছু পরিষ্কার হয়ে যায়। কথাবার্তা বলে বাকি বিষয়গুলোও স্পষ্ট করে নিই। সাফল্য পেতে গেলে গোটা দলকে স্বাধীন ভাবে খেলতে হবে। ভয়ডরহীন ক্রিকেট চাই। কিছু পতন দেখেছি। কিছু সিরিজ়ে হেরেছি। তবে কখনও ভয় পাইনি। নির্দিষ্ট পরিকল্পনা থেকে কখনও সরে আসিনি।” রোহিতের মতে, একটা দল তৈরি করতে গেলে সবার আগে মাথায় রাখতে হবে যে, দলটা কী অর্জন করতে চায়। রোহিতের ব্যাখ্যা, “আগের সিরিজ় বা আগের প্রতিযোগিতায় আমরা কোথায় পিছিয়ে ছিলাম সেটা বিশ্লেষণ করা গুরুত্বপূর্ণ। কেন ফলাফল আমাদের পক্ষে যায়নি সেটা খতিয়ে দেখেছি। সব সময় সমস্যার সমাধান খুঁজতে চেয়েছি। তাতেই সাফল্য এসেছে।”
কঠিন আইপিএল এবং বিশ্বকাপ জিতে বিদায়
গত বার আইপিএলের খারাপ পারফরম্যান্স নিয়েও কথা বলেছেন রোহিত। মুম্বই সবার নীচে শেষ করেছিল। তার পরেও ভারতের হয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতেন রোহিত। তাঁর কথায়, “আমরা গত বার ভাল খেলিনি। তবু আমি জানতাম বিশ্বকাপ আসছে। নজর ঘোরাতেই হবে। জানতাম এটাই আমার শেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। আমি চেয়েছিলাম একটা ছাপ ফেলতে। তবে সতীর্থদের ছাড়া সাফল্য সম্ভব ছিল না। গত ১৭-১৮ বছরে আমার ক্রিকেটজীবন অনেক উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে গিয়েছে।”
দল জিতুক বা হারুক, হাসি বজায় থাকুক
মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে পাঁচটি আইপিএল জিতেছেন রোহিত। প্রতিটিতেই তিনি নেতা ছিলেন। দলের সাফল্যের কারণ হিসাবে হাসিখুশি পরিবেশের কথাই তুলে ধরেছেন তিনি। বলেছেন, “যা-ই হোক না কেন, দিনের শেষে মুখে হাসি থাকা দরকার। সবার মুখে হাসি দেখতে চেয়েছি। হারি বা জিতি যা-ই হোক, আমাদের হাসতেই হবে। হয়তো সহজ একটা কথা বললাম, কিন্তু এর ভেতরের অর্থ অনেক বড়। হাসির কারণ নিজেকেই খুঁজে নিতে হবে। মুম্বইয়ে আমরা সব সময় সামনে এগিয়ে যাওয়ার কথা বলি। যে জিতি বা হারি যেটাই হোক না কেন। কারণ জীবন এক জায়গায় থেমে থাকে না। প্রতি বার অস্ত যাওয়ার পর সূর্য ঠিক ওঠে। আপনাকেও উঠে পড়ে নতুন লড়াইয়ের জন্য তৈরি হতে হয়।”
আরও পড়ুন:
মানসিকতা বদলায়নি
দীর্ঘ দিন ধরে মুম্বইয়ে রয়েছেন রোহিত। প্রথম দিন থেকে এখনও মানসিকতা বদলায়নি তাঁর। বলেছেন, “আমি মুম্বইয়ে খেলা শুরু করার পর থেকে অনেক কিছু বদলেছে। আগে মিডল অর্ডারে ব্যাট করতাম। এখন ওপেন করি। আগে অধিনায়ক ছিলাম। এখন নেই। যাদের সঙ্গে ট্রফি জিতেছি তেমন অনেক সতীর্থ আজ দলে নেই। কেউ কেউ কোচিং করাচ্ছে। তাই ভূমিকা বদলে গিয়েছে। কিন্তু মানসিকতা বদলায়নি। দলের জন্য আগেও যা চাইতাম, এখনও তাই চাই। মাঠে নেমে জিততে চাই। গত বছরগুলোতে এমন এমন ম্যাচ জিতেছি যা কেউ ভাবতেই পারেনি। এটার জন্যই মুম্বই পরিচিত।”
- চলতি বছর আইপিএলের ১৮তম বর্ষ। ২০০৮ সাল থেকে শুরু হয়েছিল এই প্রতিযোগিতা। এখন এই প্রতিযোগিতায় খেলে মোট ১০টি দল। তাদের মধ্যেই চলে ভারতসেরা হওয়ার লড়াই।
- গত বার আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। তিন বার এই ট্রফি জিতেছে তারা। মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ও চেন্নাই সুপার কিংস পাঁচ বার করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু, দিল্লি ক্যাপিটালস, পঞ্জাব কিংস ও লখনউ সুপার জায়ান্টস এখনও পর্যন্ত এক বারও আইপিএল জিততে পারেনি।
-
২২:৩৭
২৭ কোটির পন্থ আবার ব্যর্থ, লখনউকে হেলায় হারাল পঞ্জাব, পর পর দু’ম্যাচে জয় শ্রেয়সদের -
২১:০৯
দায়িত্বজ্ঞানহীন পন্থ! পুরান, বাদোনি, সামাদের ব্যাটে পঞ্জাবের সামনে ১৭২ রানের লক্ষ্য দিল লখনউ -
১৭:১৪
আলু, খুবানি দিয়ে বিরিয়ানি খেয়ে মুম্বই ম্যাচে নেমেছিল কেকেআর! শেষে ৪৩ বল বাকি থাকতে হার হজম -
১৪:১৮
কেকেআর এখনও প্রথম একাদশই খুঁজে পায়নি! মুম্বইয়ের কাছে পর্যুদস্ত হয়ে ফাঁস করলেন দলের ক্রিকেটার -
১২:৫৪
৩০ টাকার অটো থেকে ৩০ লাখি অশ্বনী, কেকেআরের ট্রায়ালে বাতিল ক্রিকেটারের কাছেই হার মানল কলকাতা