বিরাট কোহলি। ছবি: এক্স (টুইটার)।
অস্ট্রেলিয়া সফরে দ্বিতীয় টেস্টের শুরুটাও ভাল করতে পারল না ভারতীয় দল। অ্যাডিলেডে দিন-রাতের টেস্টের প্রথম ইনিংসে আবার ব্যর্থ হলেন বিরাট কোহলি। ব্যাটিং অর্ডারের ছ’নম্বরে নেমে রান পেলেন না রোহিত শর্মাও। পার্থে ২৯৫ রানে জেতা ভারতীয় দলের ব্যাটারদের দুর্বলতা ধরে ফেলেছেন প্যাট কামিন্সেরা। আয়োজকদের পাতা ফাঁদে পা দিলেন কোহলির মতো ব্যাটারও। মিচেল স্টার্ক, কামিন্সেরা গোটা ইনিংসেই চাপ ধরে রাখলেন ভারতের উপর।
টস জিতে গোলাপি বলের টেস্টে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন রোহিত। ইনিংসের প্রথম বলেই ভারতকে ধাক্কা দেন স্টার্ক। আউট হয়ে যান যশস্বী জয়সওয়াল (শূন্য)। শুরুর ধাক্কা সামলে দলের ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন অপর ওপেনার লোকেশ রাহুল এবং তিন নম্বরে নামা শুভমন গিল। দলের ৬৯ রানের মাথায় রাহুল (৩৭) আউট হওয়ার পর ভারতের ইনিংসে আর প্রয়োজনীয় জুটি তৈরি হল না। প্রথম টেস্টে শতরান করা কোহলিকে নিয়ে আশায় ছিলেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। কিন্তু কামিন্সদের ফাঁদে ধরা পড়ে গেলেন কোহলি।
খেলবেন না ছাড়বেন, এই দ্বিধায় কোহলি উইকেট দিলেন স্টার্ককে। তাঁর আট বলের ইনিংসে রয়েছে একটি চার। সেই শটেও আউট হতে পারতেন ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক। ২২ গজে এসে প্রথম স্টার্কের বল খেলেন কোহলি। প্রথম ছিল সঠিক লেংথে। রক্ষণাত্মক ভাবে খেলেন কোহলি। দ্বিতীয় বল লেংথে অফ স্টাম্পের একটু বাইরে রাখেন স্টার্ক। ছেড়ে দেন কোহলি। তৃতীয় বলটি খেলেন স্কট বোল্যান্ডের। ঠিক দ্বিতীয় বলের মতোই অফ স্টাম্পের একটু বাইরে লেংথে পড়া বল ছাড়েন কোহলি। চতুর্থ বলটিও একই রকম করেছিলেন বোল্যান্ড। কোহলি একটু ঝুঁকি নিয়ে ব্যাট চালান। গালি এবং পয়েন্টের ফাঁক দিয়ে বল চলে যায় মাঠের বাইরে। চার হলেও একটু এ দিক-ও দিক হলেই আউট হয়ে যেতে পারতেন কোহলি। ভুল বুঝে সংযত হন তিনি। পঞ্চম বলটিও একই রকম করেন বোল্যান্ড। ছেড়ে দেন কোহলি। ষষ্ঠ বলও ছিল এক রকম। অফের দিকে ঠেলে রান নেওয়ার চেষ্টা করেন কোহলি। কিন্তু আগ্রহ দেখাননি শুভমন। সপ্তম বলটি ফুল লেংথে ফেলেন বোল্যান্ড। এক্সট্রা কভারে ড্রাইভ করেন কোহলি। দৌড়ে ৩ রানও নেন। এই শট দেখে মনে হয়েছিল, কোহলি প্রাথমিক জড়তা কাটিয়ে ফেলেছেন। আসলে অস্ট্রেলিয়ার বোলারেরা কোহলির জন্য এত ক্ষণ ধরে ফাঁদ তৈরি করছিলেন। পরের ওভারের প্রথম বলে আবার স্টার্কের মুখোমুখি হন কোহলি। এ বার অফ স্টাম্পের ঠিক বাইরে একটু খাটো লেংথের বল করেন স্টার্ক। বুকের উচ্চতায় ওঠা বলটি ছেড়ে দিতে চেয়েও পারেননি। ব্যাট লেগে যায়। কোহলি শেষ মুহূর্তে বাঁ হাত ব্যাট থেকে সরিয়ে নিলেও লাভ হয়নি। ক্যাচ জমা পড়ে দ্বিতীয় স্লিপে থাকা স্টিভ স্মিথের হাতে। কোহলির (৭) মতোই আউট হয়েছিলেন রাহুল। তবু ভারতীয় শিবির অস্ট্রেলীয়দের পরিকল্পনা পড়তে পারেনি।
কোহলির পর একে একে আউট হয়ে যান শুভমন (৩১), ঋষভ পন্থ (২১), রোহিত (৩)। ১০৯ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় ভারতীয় শিবির। ভারতের মান বাঁচল নীতীশ কুমার রেড্ডি (৪২) এবং রবিচন্দ্রন অশ্বিনের (২২) ব্যাটে। শেষ দিকে তাঁরা দু’জনেই আগ্রাসী মেজাজে খেলে যতটা সম্ভব রান তুলে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন। ভারতের ইনিংস ১৮০ রানে গুটিয়ে দেওয়ার মূল কারিগর স্টার্ক। ৪৮ রানে ৬ উইকেট নিলেন তিনি। টেস্ট ক্রিকেটে এটাই তাঁর সেরা বোলিং। কামিন্স ৪১ রানে ২ উইকেট এবং বোল্যান্ড ৫৪ রানে ২ উইকেট নিলেন।
দিনের শেষে সুবিধাজনক জায়গায় অস্ট্রেলিয়া। কামিন্সদের রান ১ উইকেটে ৮৬। ৯৪ রানে এগিয়ে থাকলেও স্বস্তিতে নেই রোহিতেরা। উইকেটের পিছনে একাধিক ভুল করতে দেখা গেল পন্থকেও। তাঁর ভুলেই নাথাম ম্যাকসুইনিকে আউট করার সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে ভারতের। যশপ্রীত বুমরার বলে প্রথম স্লিপে ক্যাচ দেন ম্যাকসুইনি। কিন্তু ডান দিকে ঝাঁপিয়ে ক্যাচ ধরতে পারেননি পন্থ। বল তাঁর হাতে লেগে রোহিতের কব্জিতে লাগে। অথচ রোহিত সহজেই ধরতে পারতেন ক্যাচটি। সে সময় ম্যাকসুইনির রান ছিল ৩। দিনের শেষে তিনি অপরাজিত রয়েছেন ৩৮ রানে। ২২ গজে তাঁর সঙ্গী মার্নাস লাবুশেন (২০)। ১৩ রান করে আউট হয়েছেন উসমান খোয়াজা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy