শেষ ম্যাচ খেলে ফেললেন ঝুলন। ছবি: রয়টার্স
ঝুলন গোস্বামীর অবসরের ম্যাচে সব কিছুকে ছাপিয়ে যাচ্ছে রান আউট বিতর্ক। কেউ বলছেন, চার্লি ডিনকে ও ভাবে রান আউট করে দীপ্তি শর্মা ঠিক করেননি। আবার একাংশের মত, বার বার শৃঙ্খলা ভাঙা ইংরেজদের এই নিয়ে মুখ খোলাই উচিত নয়।
তখন জেতার জন্য ইংল্যান্ডের ৪২ বলে ১৮ রান দরকার ছিল। দীপ্তি বল করছিলেন। বল করতে এসে নন স্ট্রাইকার ডিনকে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে যেতে দেখে উইকেট ভেঙে দেন। ভারত ম্যাচ জিতে যায়। এটাকে এত দিন ‘মাঁকড়ীয় আউট’ বলা হত। কিন্তু নতুন নিয়মে এখন আর মাঁকড়ীয় পদ্ধতিতে আউট কোনও অপরাধ নয়। রান আউট হিসাবেই এটাকে মেনে নেওয়া হবে। স্কোরবোর্ড বলবে দীপ্তি রান আউট করেছেন চার্লিকে।
ইংরেজরা এটা মানতে পারছেন না। সেই সময় ধারাভাষ্য দিচ্ছিলেন ইংল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়ক নাসের হুসেন ও লিডিয়া গ্রিনওয়ে। স্কাই স্পোর্টসে গ্রিনওয়ে বলেন, ‘‘এ ভাবে ম্যাচ জেতা ঠিক নয়। মানছি আইনগত ভাবে এই ভাবে আউট করায় কোনও বাধা নেই। এরা করতেই পারে। কিন্তু তবু আমি এর সঙ্গে এক মত হতে পারছি না। এটা মানতে পারছি না। আমি অধিনায়ক হলে বলতাম প্রথমে সতর্ক করতে। চার্লি কী করছে সেটা সম্পর্কে ওর সতর্ক থাকা উচিত। ও উল্টো দিকে কী হচ্ছে সেই নিয়েই ভাবছিল। সেই কারণেই বেরিয়ে গিয়েছিল। ভারত অধিনায়কের সতর্ক করা উচিত ছিল। ইংল্যান্ড যদি এটা করত তা হলেও আমি হতাশ হতাম।”
ইংল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়ক নাসের বলেন, “আমি জানি না। ক্রিকেটের নিয়মের মধ্যে এটা রয়েছে। নিয়ম বদলে গিয়েছে। বল করার সময় এমন ঘটলে দীপ্তির অধিকার আছে এটা করার। এটা নিয়ে আলোচনা হবে।” স্যাম বিলিংস বলেন, “ক্রিকেট খেলেছে এমন কারও পক্ষেই এই ঘটনা মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। এটা ক্রিকেট নয়। নিয়মের মধ্যে আছে মানছি কিন্তু স্পিরিট মেনে হয়নি। আমার মতে নিয়ম পাল্টানো উচিত। প্রথমে সতর্ক করতে হবে, পেনাল্টি রান দেওয়া হতে পারে। কিছু মানুষ হয়তো এটার সঙ্গে এক মত হবেন না।” স্টুয়ার্ট ব্রড টুইট করে লেখেন, ‘মাঁকড়ীয় পদ্ধতিতে আউট নিয়ে আলোচনা দারুণ লাগছে। দু’তরফেই যুক্তি দেওয়া চলছে। আমি নিজে যদিও এই ভাবে ম্যাচ জিততে চাইব না। যাঁরা অন্য রকম ভাবছে তাঁদের জন্যও আমি খুশি।’ তাঁর সতীর্থ জেমস অ্যান্ডারসন দীপ্তির বল করার একটি মুহূর্তের ছবি পোস্ট করে লেখেন, ‘এমন করার কী প্রয়োজন বুঝি না। ও কী চুরি করছে?’
আইসিসির নতুন নিয়ম অনুযায়ী, নন স্ট্রাইকারের দিকে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যাটার ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে গেলে বোলার তাঁকে রান আউট করতে পারেন। এখন থেকে মাঁকড়ীয় পদ্ধতিতে রান আউট করলে সেটাকে অসৎ উপায়ে আউট করা বলে ধরা হবে না। এমনটাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সৌরভদের সমিতি। এখন থেকে মাঁকড়ীয় পদ্ধতিতে আউট করলে সেটাকে রান আউট হিসাবেই ধরা হবে।
দীপ্তি শর্মা পাশে পেয়েছেন রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে। আইপিএলে তিনি এই পদ্ধতিতে রান আউট করেছিলেন জস বাটলারকে। সেই নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। এ বারের আইপিএলে যদিও দু’জনে রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে একসঙ্গে খেলেন। দীপ্তির পাশে দাঁড়িয়ে অশ্বিন টুইট করে লেখেন, ‘অশ্বিনকে নিয়ে টানাটানি কেন? আজকের রাতের হিরো তো দীপ্তি শর্মা।’ বীরেন্দ্র সহবাগ একহাত নিয়েছেন ইংরেজদের। তাঁর মতে খেলা আবিষ্কার করে নিজেরাই নিয়ম ভুলে গিয়েছে ইংল্যান্ড। তিনি টুইট করে লেখেন, ‘হেরে গিয়ে কান্নাকাটি করছে ইংল্যান্ড।’ সেই সঙ্গে ক্রিকেটের নিয়মটিও টুইট করে দিয়েছেন ভারতের প্রাক্তন ওপেনার।
ইংরেজ ওপেনার অ্যালেক্স হেলসও দীপ্তির পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি সতীর্থ বিলিংসের টুইটের উত্তরে লেখেন, ‘বোলারের হাত থেকে বল বেরিয়ে যাওয়ার আগে পর্যন্ত ক্রিজে দাঁড়িয়ে থাকা এক জন ব্যাটারের পক্ষে কী খুব কঠিন?’
দীপ্তি পাশে পেয়েছেন তাঁর অধিনায়ক হরমনপ্রীত কউরকেও। তিনি ম্যাচ শেষে বলেন, “আমি তো ভেবেছিলাম ১০টা উইকেট নিয়েই প্রশ্ন করা হবে। কারণ সেগুলোও কষ্ট করেই নিতে হয়েছে। এটা খেলার অংশ। কোনও ভুল দেখছি না। আমরা নতুন কিছু করিনি। এই আউট প্রমাণ করে আমরা কতটা সতর্ক এবং ব্যাটাররা কী করছে। আমি দলের মেয়েদের পাশে আছি। নিয়মের বাইরে দীপ্তি কিছু করেনি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy