শাস্ত্রীর পরামর্শ, চামড়া মোটা করতে হবে। —ফাইল চিত্র
ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের ‘ডিরেক্টর’ হয়েছেন রবার্ট কি। তিনিও ধারাভাষ্যকার থেকে ক্রিকেট প্রশিক্ষণে এসেছেন। ঠিক রবি শাস্ত্রীর মতো। ২০১৪ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত দু’দফায় ভারতীয় ক্রিকেট দলের দায়িত্ব সামলেছেন শাস্ত্রী। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের নতুন অভিভাবককে পরামর্শ দিলেন তিনি। সবার আগে শাস্ত্রীর পরামর্শ, চামড়া মোটা করতে হবে।
ইংল্যান্ডের সংবাদপত্র ‘দ্য গার্ডিয়ান’-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শাস্ত্রী বলেন, ‘‘আমার কোনও কোচিংয়ের শিক্ষা ছিল না। লেভেল ওয়ান, লেভেল টু! কী যেন সব বলে। পরোয়া করি না। আর ভারত এমন একটা দেশ যেখানে কিছু মানুষের ঈর্ষা থাকবেই অথবা এমন কিছু মানুষ থাকবেন যাঁরা আপনার ব্যর্থতা চাইবে। আমার মোটা চামড়া ছিল। ডিউক বলের থেকেও মোটা। সেটার পিছনে লুকিয়ে থাকতাম।”
রব কি সফল হবেন? শাস্ত্রী বলেন, “যে কোনও জাতীয় দলের কোচিং করানোর অন্য তাৎপর্য আছে। সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হল, ক্রিকেটারদের বুঝে নেওয়া। মাঠের বাইরে থেকে একটা সংস্কৃতি তৈরি করা, সুর বেঁধে দেওয়া। নিজের বিশ্বাস, প্লেয়ারদের সম্পর্কে কী ভাবনা— এগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ। তারপর দলের মধ্যে জেতার মানসিকতা নিয়ে আসা। তার জন্য নিজেকে নির্মম, নির্মোহ হতে হবে। এখন যে কোনও দলের ক্ষেত্রে আসল চ্যালেঞ্জ হল বিদেশের মাটিতে জেতা।’’
ধারাভাষ্যকারের ভূমিকাটা রবকে সম্পূর্ণ ভুলে যেতে হবে জানিয়ে শাস্ত্রী বলেন, ‘‘ধারাভাষ্যকার হিসেবে কার সম্পর্কে কী বলেছি, সেটা সম্পূর্ণ ভুলে যেতে হবে। যখন ভারতীয় দলের ডিরেক্টর হলাম, তখন সবার আগে সমস্যাগুলো খুঁজে বার করার দরকার ছিল। আমাকে বলাই হয়েছিল, নতুন করে ঝাড়াই-বাছাই করতে। যাদের দরকার মনে হবে, দলে নিতে বলা হয়েছিল। কাউকে ছাঁটাই করার দরকার হলে বাদ দিতে বলা হয়েছিল।’’
দ্বিতীয় কাজ ছিল, দল কী ভাবে খেলবে সেই মানসিকতা তৈরি করে দেওয়া। এই জায়গায় শাস্ত্রীর পছন্দ ছিল, আক্রমণাত্মক ক্রিকেট। জানিয়েছেন, ‘‘ঠিক করে নিয়েছিলাম ফিটনেসের চূড়ান্ত জায়গায় নিজেদের নিয়ে যেতে হবে। এমন কিছু পেসার প্রয়োজন ছিল দলে যারা বিপক্ষের ২০টি উইকেট তুলে নিয়ে পারবে। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে খেলতে হলে আক্রমণাত্মক হতেই হবে। আমি তো ছেলেদের বলেই দিয়েছিলাম, বিপক্ষ যদি একটা গালি দেয়, তোমরা তিনটে দেবে। দুটো নিজের ভাষায়, শেষটা ওদের ভাষায়।’’
শাস্ত্রীর মতো রবার্টও ধারাভাষ্য দিতেন। সেখান থেকেই দলের দায়িত্ব পাওয়া। শাস্ত্রী বলেন, “মোটা চামড়ার নীচে লুকিয়ে রাখতে হবে নিজেকে। কাজ করতে শুরু করলে রবার্টেরও হয়ে যাবে সেটা। প্রতি দিন কেউ না কেউ তোমাকে বিচার করার চোখে দেখবে। আমি খুশি যে ওঁর নেতৃত্ব দেওয়ার বিপুল অভিজ্ঞতা আছে (কাউন্টি ক্রিকেটে কেন্টকে নেতৃত্ব দিতেন রবার্ট)। ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলতে পারাটা খুব প্রয়োজন। এত দিন ইংল্যান্ডের টেস্ট অধিনায়কের দায়িত্ব সামলানো জো রুটের সঙ্গে খুব বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা উচিত রবার্টের। ধারাভাষ্যকার হিসেবে ২৪ বছর কাটানো সময়ের মধ্যে আমি ভারতীয় ক্রিকেটের একটা বলও মিস করিনি।”
শাস্ত্রীর বিশ্বাস রবার্টও ইংল্যান্ডের ক্রিকেট সম্পর্কে যথেষ্ট খোঁজ রাখেন। তাই তিনি পিছিয়ে নেই। ইংল্যান্ডের পরবর্তী টেস্ট অধিনায়ক কে হবেন সেই সম্পর্কেও নিজের মত জানিয়েছেন শাস্ত্রী। তিনি বলেন, “নেতৃত্বের যে চাপ আছে তাতে বেন স্টোকসের খেলা আরও পরিণত হতে পারে। ক্রিকেটার হিসেবে নিজেকে আরও উন্নতি করতে পারে স্টোকস। অধিনায়কের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ। সেটা না থাকলে সব কিছু শেষ হয়ে যেতে পারে।”
শাস্ত্রীর মতে ইংল্যান্ড দলে প্রচুর প্রতিভা রয়েছে। শুধু মানসিকতার পরিবর্তন ঘটালেই দলটা পাল্টে যাবে বলে মত শাস্ত্রীর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy