মরিয়া: ইডেনে গুরবাজ়। —নিজস্ব চিত্র।
দীপাবলির রাতে আমদাবাদের রাস্তায় ঘুমিয়ে থাকা মানুষদের আর্থিক ভাবে সাহায্য করেছিলেন তিনি। সেই ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছিল সমাজমাধ্যমে। তিনি নিজেও দুস্থ পরিবার থেকে উঠে আসা এসেছেন। অনুশীলনে যাওয়ার জন্য ১০ টাকাও থাকত না পকেটে। প্রতিকূল পরিস্থিতি থেকে উঠে এসেছেন বলেই হয়তো এত বড় মনের মানুষ। তিনি রহমানুল্লা গুরবাজ়।
গত বার কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে ১১টি ম্যাচে ২২৭ রান করেছিলেন আফগানিস্তানের উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান। ছিল দু’টি অর্ধশত রান। গড় ২০.৬৩। কিন্তু এ বার তাঁকে পরীক্ষার মধ্যে ফেলার জন্য দলে এসেছেন ফিল সল্ট। টি-টোয়েন্টিতে যাঁর আইসিসি র্যাঙ্কিং দুই। ইংল্যান্ডের বর্তমান ওপেনার তিনিই। সল্টকে একটু বেশিই গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে অনুশীলনে। দু’টি প্রস্তুতি ম্যাচেই অর্ধশত রান করেছেন। তিনি কিপিংও করেন। তাই গুরবাজ়ের সুযোগ পাওয়া প্রশ্নের মুখে।
আফগান তারকা যদিও সল্টকে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখছেন না। আনন্দবাজারকে একান্ত সাক্ষাৎকারে গুরবাজ় বলেন, ‘‘সল্ট আমার প্রতিদ্বন্দ্বী নয়। প্রথম একাদশ নিয়ে ভাবাও আমার কাজ নয়। নিজেকে তৈরি রাখতে হবে যে কোনও পরিস্থিতির জন্য। সুযোগ আসলে যাতে কাজে লাগাতে পারি।’’ যোগ করেন, ‘‘গত বারও সুযোগ কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছি। এ বারও যদি শুরু থেকে সুযোগ পাই, নিজেকে উজাড় করে দেব।’’
কেকেআরের মেন্টর হিসেবে গৌতম গম্ভীর যোগ দেওয়ায় তাঁর ব্যাটিং যে উন্নতি হবে, তা মানছেন গুরবাজ়। বলছিলেন, ‘‘গম্ভীর স্যর খুব সাহায্য করেন। কোনও প্রশ্ন থাকলে খুব সহজ ভাবে বুঝিয়ে দেন। তাঁর প্রশিক্ষণে ব্যাটিং উন্নত হতে বাধ্য।’’
মাত্র ২২ বছর বয়স আফগান কিপারের। কয়েক বছরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট জীবনের মধ্যেই সে দেশের সর্বোচ্চ শতরানের মালিক হয়ে উঠেছেন। গুরবাজ় যা নিয়ে উচ্ছ্বসিত। বলছিলেন, ‘‘পরিশ্রমের ফল পেয়েছি। ছোটবেলা থেকে অনেক কসরত করেছি। দেশের হয়ে ভাল খেললে তরুণরাও অনুপ্রাণিত হবে। যার ফলে আফগানিস্তানের ক্রিকেট সার্বিক ভাবে উন্নত হবে।’’
আইপিএলে সফল হওয়ার লক্ষ্যে শটে বৈচিত্র বাড়িয়েছেন গুরবাজ়। মারছেন স্কুপ রিভার্স স্কুপের মতো শট। কিন্তু ইনিংসের শুরুতেই ঝুঁকিপূর্ণ শট খেলতে চান না। বলছিলেন, ‘‘ক্রিকেটীয় শট খেলে আগে উইকেটে থিতু হব। ভাল রান পাওয়ার পরে স্কুপ, রিভার্স স্কুপ মারার চেষ্টা করব।’’
গুরবাজ় মনে করেন, মানুষ ভাল না হলে বড় ক্রিকেটার হওয়া সম্ভব নয়। দুস্থ মানুষদের সাহায্য করার সেই ভিডিয়ো প্রকাশ হওয়ার পরে ভক্তদের মন জয় করেছিলেন তিনি। যা নিয়ে আফগান তারকা বলেন, ‘‘আমি আসলে খুব গরীব পরিবার থেকে উঠে এসেছি। আমাদের দেশের বেশির ভাগ মানুষই আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া পরিবার থেকে উঠে আসে। আর্থিক অনটনের মধ্যে এক বার যে পড়েছে, সে জানে কষ্ট কতটা। আমি তাই দুস্থ মানুষদের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করি। আমাদের দেশের প্রত্যেক ক্রিকেটারই তাই করে।’’
গুরবাজ় আরও বলছিলেন, ‘‘গত বছর ভূমিকম্পে অনেকে প্রাণ হারিয়েছে আফগানিস্তানে। তাঁদের পরিবারের মানুষেরা যাতে আবার স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফিরে আসতে পারে, তার চেষ্টা করেছে দলের সকলে। আর্থিক সাহায্যের পাশাপাশি পরিবারের সন্তানদের পড়াশোনার দায়িত্বও নিয়েছেন কয়েক জন ক্রিকেটার।’’
গুরবাজ় হয়তো ঠিকই বলেছেন, ভাল মানুষ না হলে বড় ক্রিকেটার হওয়া যায় না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy