জয় শাহ। —ফাইল চিত্র।
মাঝে আর দুটো দিন। ১ ডিসেম্বর, রবিবার থেকে আইসিসির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেবেন জয় শাহ। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সচিব এ বার বসবেন বিশ্ব ক্রিকেটের মসনদে। এ দিকে আগামী বছরের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আয়োজন ঘিরে বিতর্ক এখনও শেষ হয়নি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পাকিস্তানেই হবে কি না তা নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি আইসিসি। শুক্রবার রয়েছে আইসিসির বৈঠক। সেখানেই এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। সেই বৈঠকে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের তরফে উপস্থিত থাকবেন শাহ। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার আগেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও পাকিস্তান বোর্ডও বুঝতে পারছে যে শাহই আসল লোক। সেই কারণে আগে থেকেই শাহের কাছে আর্জি জানিয়েছেন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান মহসিন নকভি।
২০২৩ সালে এশিয়া কাপের আগেও একই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। পাকিস্তানে খেলতে যেতে চায়নি ভারত। সেই সময় এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের প্রধান ছিলেন শাহ। তাঁর নেতৃত্বাধীন কমিটি সিদ্ধান্ত নেয়, হাইব্রিড মডেলে প্রতিযোগিতা হবে। ভারত তাদের সব ম্যাচ শ্রীলঙ্কায় খেলে। বাকি ম্যাচগুলি হয় পাকিস্তানে। শ্রীলঙ্কাতেই হয় ফাইনাল। হাইব্রিড মডেলে হলেও প্রতিযোগিতার আয়োজক দেশ শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানই ছিল। ফলে লাভের টাকা পেয়েছিল তারা। ১৯৯৬ সালের পর এই প্রথম আইসিসির কোনও প্রতিযোগিতার আয়োজক পাকিস্তান। করাচি, লাহোর এবং রাওয়ালপিন্ডির স্টেডিয়ামগুলির সংস্কারের কাজ শুরু করেছে পিসিবি। বিপুল বিনিয়োগ করেছে তারা। এই পরিস্থিতিতে প্রতিযোগিতা না হলে ক্ষতি হবে পাকিস্তানের। মুখ পুড়বে তাদের। সেটা যাতে না হয় তার চেষ্টাই করছে পাকিস্তান।
পাক বোর্ডের চেয়ারম্যান নকভি অনুরোধ করেছেন, শাহ যেন বিশ্ব ক্রিকেটের কথা ভাবেন। তিনি বলেন, “ডিসেম্বরে জয় শাহ দায়িত্ব নেবেন। আমি নিশ্চিত বিসিসিআই থেকে আইসিসিতে যাওয়ার পর উনি আইসিসির লাভ নিয়ে ভাববেন। ওঁর সেটাই করা উচিত। যখন কেউ কোনও দায়িত্ব নেন, তখন তাঁর উচিত সেই সংগঠনের লাভের কথা ভাবা। আমার অনুরোধ, উনি নতুন দায়িত্ব নিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটের কথা ভাবুন।” নকভিরা মনে করছেন, যদি পরবর্তী কালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়ে কোনও সমস্যা হয় তা হলে শাহ সেই সমস্যা মেটানোর ক্ষমতা রাখেন। কারণ, ভারতীয় বোর্ডের সচিব থাকাকালীনও আইসিসির বিভিন্ন সিদ্ধান্তে প্রভাব থাকত শাহের। তাঁর ক্ষমতার কথা পাকিস্তানের জানা। সেই কারণে শাহ দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রতিযোগিতা আয়োজনে সমস্যা হবে না বলে মনে করছে পাক বোর্ড। আশার আলো দেখছে তারা। তাই আগে থেকেই অনুরোধ করেছেন নকভি।
পাকিস্তানের জনগণকে নকভি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজনের জন্য যত দূর যেতে হয় তাঁরা যাবেন। পাক বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, “আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি যাতে পাকিস্তানেই হয় তার আপ্রাণ চেষ্টা করব। আইসিসির চেয়ারম্যানের সঙ্গে আমার নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। আমরা নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছি। গত বছর ভারতে বিশ্বকাপ খেলতে আমরা গিয়েছি। তা হলে ভারতের সমস্যা কিসের? ওদের এই দাবি মেনে নেওয়া যায় না। পাশাপাশি লিখিত ভাবেও ওরা আমাদের কিছু জানায়নি।”
আগামী বছর ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে পাকিস্তানে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি হওয়ার কথা। কিন্তু ভারত প্রথম থেকেই জানিয়ে দিয়েছে, সেখানে খেলতে যাবে না তারা। ২০০৮ সালের পর থেকে পাকিস্তানে খেলতে যায়নি ভারত। তারা আইসিসিকে অনুরোধ করেছে অন্য কোনও দেশে খেলা সরাতে। না হলে অন্তত হাইব্রিড মডেলে খেলার আয়োজন করার অনুরোধ করেছে বিসিসিআই। তবে পাকিস্তান নিজেদের দাবিতে অনড়। আইসিসি সূত্রে খবর, হাইব্রিড মডেলে রাজি করানোর জন্য ক্ষতিপূরণ বাবদ পিসিবিকে প্রায় ৫৯১ কোটি টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হবে। পাকিস্তানের ক্রিকেট কর্তাদের রাজি করানোই এখন মূল চ্যালেঞ্জ আইসিসি কর্তাদের। সেই বৈঠকের আগেই শাহের দরজায় পৌঁছে গেল পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy