Advertisement
E-Paper

৩০০-র স্বপ্ন দেখা হায়দরাবাদ ২০০ পেরোল না, ৫ উইকেটে জিতে প্রতিশোধ গোয়েন্‌কার লখনউয়ের

গত বারের আইপিএলে হায়দরাবাদের মাঠে সানরাইজার্সের কাছে ১০ উইকেটে পর্যুদস্ত হয়েছিল লখনউ। বছর ঘোরার পর সেই মাঠেই হায়দরাবাদকে হারিয়ে ‘প্রতিশোধ’ নিল সঞ্জীব গোয়েন্‌কার দল।

cricket

লখনউয়ে জেতাল পুরান (বাঁ দিকে) এবং মার্শের জুটি। ছবি: পিটিআই।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০২৫ ২৩:০১
Share
Save

গত বারের আইপিএলে হায়দরাবাদের মাঠে সানরাইজার্সের কাছে ১০ উইকেটে পর্যুদস্ত হয়েছিল লখনউ। ম্যাচের পর মাঠেই তৎকালীন অধিনায়ক কেএল রাহুলকে বকাঝকা করেছিলেন লখনউ মালিক সঞ্জীব গোয়েন্‌কা। সেই ঘটনার পরই লখনউয়ের সঙ্গে রাহুলের বিচ্ছেদ প্রায় পাকা হয়ে গিয়েছিল। তাই-ই হয়েছে মহা নিলামে।

বছর ঘোরার পর সেই মাঠেই হায়দরাবাদকে হারিয়ে ‘প্রতিশোধ’ নিল গোয়েন্‌কার দল। সেই জয়ে অবদান রাখলেন শার্দূল ঠাকুর এবং নিকোলাস পুরান। প্রথম জন বল হাতে ৩৪ রানে ৪ উইকেট নিলেন। দ্বিতীয় জন ২৬ বলে ৭০ রান করে জয়ের ভিত গড়ে দিলেন। আগে ব্যাট করে হায়দরাবাদের তোলা ১৯০/৯ স্কোর লখনউ তুলে দিল ২৩ বল বাকি থাকতে। পাঁচ উইকেটে জিতল তারা। এই আইপিএলে এটাই তাদের প্রথম জয়।

বৃহস্পতিবার টসে জিতে লখনউ অধিনায়ক ঋষভ পন্থ আগে বল করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় অনেকেই ভেবেছিলেন হায়দরাবাদ ৩০০ তুলে ফেলবে। যে দল আগের ম্যাচে ২৮৬ তুলেছে, যে দলে ট্রেভিস হেড, অভিষেক শর্মা, ঈশান কিশনের মতো ব্যাটার রয়েছে, তাদের থেকে এমন আশা করা অন্যায়ও নয়। তবে ২০০-ও তুলতে পারেনি হায়দরাবাদ।

প্রথম ওভারে শার্দূল মাত্র ছ’রান দেন। দ্বিতীয় ওভারে আবেশ খান দেন ন’রান। হায়দরাবাদের সমর্থকেরা তখন ছয় চাইছিলেন। সেই ইচ্ছাপূরণের আগেই ফেরেন অভিষেক। শার্দূলের বলে পুল মারতে গিয়ে ক্যাচ দেন পুরানের হাতে। পরের বলে ফিরে যান ঈশানও। লেগ সাইডে যে বল ছাড়লেই ওয়াইড হয়, সেটি তাঁর গ্লাভসে লেগে উইকেটরক্ষক পন্থের হাতে জমা পড়ে।

শার্দূলের হ্যাটট্রিক বাঁচানোর দায়িত্ব ছিল নীতীশের উপরে। কোনও মতে সেটি বাঁচান তিনি। ইয়র্কার বল মিড অনে ঠেলে রান নেন। দলের দুই বিধ্বংসী ব্যাটার ফিরলেও থামানো যাচ্ছিল না হেডকে। আবেশের একটি ওভারে দু’টি ছয় এবং একটি চার মারেন। পাঁচ ওভারে ৫৪ উঠে যাওয়ার পর পন্থ বোলিংয়ে আনেন রবি বিশ্নোইকে।

রবির প্রথম বলেই হেডের লোপ্পা ক্যাচ ফেলে দেন পুরান। তৃতীয় বলেই ছক্কা মারেন হেড। পঞ্চম বলে বোলারের দিকে শট মারেন। রবি হাত বাড়ালেও ধরতে পারেননি। ফলে একই ওভারে দু’বার হেডের ক্যাচ পড়ে। অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার অবশ্য বেশি দূর এগোতে পারেননি। অষ্টম ওভারেই অখ্যাত প্রিন্স যাদবের বলে বোল্ড হয়ে যান। সেই প্রিন্সই কিছু ক্ষণ পর ফেরান হাইনরিখ ক্লাসেনকে (২৬)। নীতীশের মারা শট প্রিন্সের হাতে লেগে উল্টো দিকের উইকেট ভেঙে দেয়। ক্রিজ়‌ ছেড়ে ক্লাসেন এগিয়ে গিয়েছিলেন। রান আউট হয়ে যান।

নীতীশও (৩২) ফিরে যাওয়ায় হায়দরাবাদের রান তোলার গতি কমে গিয়েছিল। তবে আগ্রাসী খেলে নিজের কাজটা করে দেন অনিকেত বর্মা। পাঁচটি ছয়ের সাহায্যে ১৩ বলে ৩৬ রান করেন। পরের দিকে নেমে প্যাট কামিন্সও (১৮) তিনটি ছক্কা মেরে রান রেট বাড়িয়ে দেন। যদিও দুশোর গণ্ডি পেরোতে পারেনি হায়দরাবাদ। যে শার্দূল মহা নিলামে দল পাননি, যাঁকে লখনউ কিনেছে মহসিন খানের পরিবর্ত হিসাবে, তিনিই চার উইকেট নিয়ে চমকে দিয়েছেন।

বোলিং করতে নেমে শুরুতেই চমক দেয় হায়দরাবাদ। অভিষেকের হাতে বল তুলে দেন কামিন্স। মাঝেসাঝে স্পিন করলেও ব্যাটিংয়ের মতো বোলিংয়েও যে তাঁকে সবার আগে আনা হবে সেটা অনেকেই ভাবতে পারেননি। প্রথম ওভারে মাত্র তিন রান দিয়ে অধিনায়ক কামিন্সের আস্থার মান রাখেন অভিষেক। দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই এডেন মার্করামকে (১) তুলে নেন মহম্মদ শামি। মনে হচ্ছিল কম রান নিয়েও এই ম্যাচ হেসেখেলে জিতবে হায়দরাবাদ।

তবে অন্য রকম ভেবেছিলেন পুরান এবং মিচেল মার্শ। হায়দরাবাদে ঝড় তুলে দেন দু’জনে। প্রথম ওভারে তিন রান দেওয়া অভিষেক নিজের দ্বিতীয় ওভারে দেন ১৮ রান। তার আগে সিমরজিৎ সিংহের ওভার থেকে আসে ১৭ রান। পুরান-মার্শের দাপটে পাওয়ার প্লে-তে ৭৭/১ তুলে দেয় লখনউ।

মার্শ কিছুটা ধরে খেললেও পুরান প্রায় কোনও বলই মাঠে রাখছিলেন না। ১৮ বলে অর্ধশতরান করেন। শেষ পর্যন্ত কামিন্সের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন নবম ওভারে। তার আগে ছ’টি করে চার এবং ছয় মেরে ২৬ বলে ৭০ করে যান।

পুরান ফেরার পর আগ্রাসী হতে চেয়েছিলেন মার্শ (৩১ বলে ৫২)। কামিন্সকে দু’বলে দু’টি চার মেরে অর্ধশতরান করার পর নীতীশের হাতে ক্যাচ তুলে দেন। তবে এ দিনও লখনউকে চিন্তায় রাখল পন্থের ব্যাটিং। তাঁর ১৫ বলে ১৫ রানের ইনিংস রানের গতি কমিয়ে দিল। হর্ষল পটেলের নিরীহ ফুলটস বলে আড়াআড়ি চালাতে গিয়ে শামির হাতে ক্যাচ দিলেন।

লক্ষ্য বেশি না হওয়ায় লখনউকে ভাবতে হয়নি। আব্দুল সামাদ (৮ বলে ২২) এবং ডেভিড মিলার (৭ বলে ১৩) বাকি কাজ করে দেন।

সংক্ষেপে
  • চলতি বছর আইপিএলের ১৮তম বর্ষ। ২০০৮ সাল থেকে শুরু হয়েছিল এই প্রতিযোগিতা। এখন এই প্রতিযোগিতায় খেলে মোট ১০টি দল। তাদের মধ্যেই চলে ভারতসেরা হওয়ার লড়াই।
  • গত বার আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। তিন বার এই ট্রফি জিতেছে তারা। মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ও চেন্নাই সুপার কিংস পাঁচ বার করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু, দিল্লি ক্যাপিটালস, পঞ্জাব কিংস ও লখনউ সুপার জায়ান্টস এখনও পর্যন্ত এক বারও আইপিএল জিততে পারেনি।
IPL Sunrisers Hyderabad Lucknow Super Giants Nicholas Pooran Shardul Thakur

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}