চর্চায়: রেকর্ড নিয়ে কখনওই ভাবেন না শামি। দল যে দায়িত্ব দেয় সেটাই পূরণ করার চেষ্টা করেন। —ফাইল চিত্র।
বাইশ গজে বিশ্বকাপ শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু মহম্মদ শামি এখনও আগুন ঝড়িয়ে চলেছেন। মাঠের ভেতরে নয়, মাঠের বাইরে।
বিশ্বকাপে ভারতীয় পেসারদের সাফল্য দেখে পাকিস্তানের প্রাক্তন ক্রিকেটার হাসান রাজ়া মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘ভারতকে আলাদা বল দেওয়া হচ্ছে।’’ কিংবদন্তি ওয়াসিম আক্রম একটি টিভি শো-এ বিষয়টি বোঝানোর পরেও থামেননি হাসান। যা নিয়ে এ দিন এক সাক্ষাৎকারে তীব্র প্রতিবাদ করেন মহম্মদ শামি। তিনি বলেন, ‘‘বিশ্বকাপের প্রথম চার ম্যাচে আমি খেলিনি। কিন্তু খেলা শুরু করার পরে প্রথম ম্যাচে পাঁচ উইকেট পাই। পরের ম্যাচে পাই চার উইকেট। তৃতীয় ম্যাচে আবার পাঁচ উইকেট। এই বোলিং দেখে পাকিস্তানের একজন মন্তব্য করেছিলেন, আমাদের নাকি আলাদা বল দেওয়া হচ্ছে। ওয়াসিম (আক্রম) ভাই টিভি শো-এ বুঝিয়েছিলেন, দু’দলের বোলাররা একটি বাক্স থেকে বল বেছে নেয়। তার পরেও সেই ব্যক্তি কটু মন্তব্য করতে ছাড়েননি।’’ যোগ করেন, ‘‘আমার তো মনে হয় ওরা মানতেই পারে না ওদের চেয়েও কেউ ভাল কিছু করতে পারে। আমাদের সাফল্য সহ্যই হয় না ওদের। মানতাম যদি সে সাধারণ মানুষ হত। কিন্তু সেও তো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছে। তার পরেও এ রকম মন্তব্য করলে সকলে তো হাসবেই।’’
বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক তিনি। ২৪টি উইকেট তাঁর ঝুলিতে। ভারতের বিশ্বকাপ ইতিহাসেও তিনি সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি। কিন্তু মাইলফলক নিয়ে কখনও ভাবেন না। তাঁর মতো টিমম্যান খুব কমই দেখা যায়। বিশ্বকাপের প্রথম চারটি ম্যাচে সুযোগ না পেয়েও কোনও আক্ষেপ নেই।
নিজের মাইলফলক নিয়ে শামি বলেন, ‘‘সমাজমাধ্যম দেখার পরে বুঝতে পারি যে নজির গড়েছি। না হলে রেকর্ড নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা থাকে না। দল যে দায়িত্ব দেয়, সেটা পূরণ করার চেষ্টা করি। দলের কেউই কখনও পরিসংখ্যান দেখে খেলে না। আমরা সবাই দায়িত্ব পালন করার জন্য খেলি। কারণ, ক্রিকেটে ব্যক্তির আগে সব সময় এগিয়ে থাকবে দল।’’
ম্যাচের আগে কখনও পিচ দেখেন না শামি। কারণ, বল না করলে তিনি বোঝেন না, পিচ কী রকম আচরণ করবে। ভারতীয় তারকার কথায়, ‘‘সাধারণত মাঠে গিয়েই বোলাররা আগে পিচ দেখে। আমি কখনও পিচ দেখি না। কারণ, বল করার আগে বোঝাও যায় না পিচ কেমন আচরণ করবে। আমি শুধু শুধু কেন পিচ দেখে নিজের উপরে চাপ সৃষ্টি করব? তাই একদম চাপমুক্ত থাকা উচিত। উত্তেজিত হয়ে কোনও লাভ নেই। তবেই ভাল খেলা সম্ভব।’’
টানা চার ম্যাচ বাইরে থাকার পরে কী ভাবে ফিরে এলেন তিনি? শামির উত্তর, ‘‘শুরুতে বলা হয়েছিল আমি প্রত্যেকটি ম্যাচ খেলব। কিন্তু দু’টো ম্যাচ গেল, তিনটি ম্যাচ গেল, চারটি ম্যাচের পরেও সুযোগ পাচ্ছিলাম না। চার ম্যাচ দলের বাইরে যে কেউ থাকতে পারে। কিন্তু হতাশ হয়ে গেলে তো ফিরে আসার শক্তিটা থাকবে না। মানসিক ভাবে শক্তিশালী হতে হবে। আমি তাই চেষ্টা করেছি। দল যখন ভাল খেলছিল, আমার মধ্যেও ভাল কিছু করার তাগিদ বেড়েছিল। অদ্ভুত তৃপ্তি হত সকলকে ভাল খেলতে দেখে।’’
বিরিয়ানি এক সময় ছিল তাঁর প্রিয়। কেকেআরে থাকাকালীন লোভ সামলাতে পারতেন না। শামি বলছিলেন, ‘‘আমি খেতে প্রচণ্ড ভালবাসি। বিরিয়ানির সঙ্গে অনেকেই আমার নামটা জড়িয়ে ফেলেছেন। আসলে কলকাতা নাইট রাইডার্সে যখন খেলতাম, তখন প্রায় বেশির ভাগ দিনই বিরিয়ানি খেতাম। সামনেই ছিল আরসালান। কে ছাড়তে পারে বলুন তো? আমরা বাইপাসের ধারে একটা হোটেলে থাকতাম। পাশেই বিরিয়ানির বড় সেই দোকান। মালিক আমার বন্ধু ছিল। এমনও হত, না চাইলেও বিরিয়ানি পাঠিয়ে দিত। সেটা চেখে দেখতাম। আসলে চার-পাঁচ জন যারা ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতাম, তাদের একটা গ্রুপ ছিল। সবাই মিলে ওই এক প্লেট বিরিয়ানি হয়তো খাওয়া হল। উৎসবের দিনে সকলে এক প্লেট করেই বিরিয়ানি খেত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy