মিতালির অবসর। ফাইল ছবি
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেন মিতালি রাজ। বুধবার টুইটারে একটি পোস্টের মাধ্যমে নিজের সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন তিনি। ভারতের হয়ে তিন ফরম্যাটেই খেলেছেন। শেষ ম্য়াচ খেলেছেন মহিলা বিশ্বকাপে, গত ২৭ মার্চ। দীর্ঘ দিন ধরেই তাঁর অবসর নিয়ে জল্পনা চলছিল। সেই জল্পনায় দাঁড়ি টানলেন তিনি।
নেটমাধ্যমে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে মিতালি লিখেছেন, ‘ছোটবেলাতেই একটা লক্ষ্য স্থির করে নিয়েছিলাম। ভারতের নীল জার্সি পরব। দেশের প্রতিনিধিত্ব করা আমার কাছে সবচেয়ে সম্মানের ছিল। যাত্রাপথে বেশির ভাগ সময়টাই ভাল ভাবে কাটিয়েছি। খুব কম সময়েই খারাপ অভিজ্ঞতা হয়েছে। প্রত্যেকটা অভিজ্ঞতাই আমার কাছে আলাদা ছিল। গত ২৩ বছর আমার জীবনে সবচেয়ে সুন্দর, পরিপূর্ণ এবং উপভোগ্য বছর ছিল। সব যাত্রাই এক দিন শেষ হয়। আজ সব ধরনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিচ্ছি।’
মিতালি আরও লিখেছেন, ‘যত বারই মাঠে ঢুকেছি, ভারতকে জেতানোর জন্য নিজের সেরাটা দিয়েছি। জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার পর আমার যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, তা সারা জীবন মনে রাখব। মনে হয়, এখন ক্রিকেটজীবন শেষ করার সেরা সময়। আমাদের দল কিছু তরুণ, প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের হাতে সুরক্ষিত রয়েছে। মহিলা ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ খুবই উজ্জ্বল।’
Thank you for all your love & support over the years!
— Mithali Raj (@M_Raj03) June 8, 2022
I look forward to my 2nd innings with your blessing and support. pic.twitter.com/OkPUICcU4u
মিতালি জানিয়েছেন, ব্যাট তুলে রাখলেও ক্রিকেটের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিন্ন হচ্ছে না। কোনও না কোনও ভাবে খেলাটার সঙ্গে যুক্ত থাকতে চান। ফলে ভবিষ্যতে কোচ হওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। মিতালি জানিয়েছেন, এত দিন ধরে দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার কারণে ব্যক্তি হিসাবেও তাঁর অনেক পরিবর্তন হয়েছে। ধন্যবাদ জানিয়েছেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকেও।
১০ বছর বয়সে ক্রিকেটে হাতেখড়ি হয় মিতালির। বাবা দোরাই রাজ ভারতীয় বিমানবাহিনীর অফিসার ছিলেন। বাবার ইচ্ছেতেই ক্রিকেট খেলা শুরু করেন। ভারতের হয়ে তিন ফরম্যাটেই ক্রিকেট খেলেছেন মিতালি। আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১৯৯৯ সালে এক দিনের ম্যাচের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় তাঁর।
মাত্র ১৪ বছর বয়সে জাতীয় দলের দরজা খুলে যেতে পারত তাঁর সামনে। ১৯৯৭ সালে মহিলা ক্রিকেট বিশ্বকাপ দলে তাঁকে নেওয়ার ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছিল। তবে শেষ মুহূর্তে বাদ পড়েন। প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচেই শতরান করেছিলেন। ২০০১-০২ মরসুমে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টেস্টে অভিষেক হয় তাঁর। তৃতীয় টেস্টে মাত্র ১৯ বছর বয়সে দ্বিশতরান করেন। ২০০৫ সালে তাঁর নেতৃত্বে মহিলা বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠে। সেখানে হেরে যায় অস্ট্রেলিয়ার কাছে।
মিতালির নামের পাশে একাধিক রেকর্ড রয়েছে। বিশ্বের এক নম্বর ক্রিকেটার হয়ে ওঠা, সবচেয়ে বেশি দিন ভারতকে এক দিনের ক্রিকেট এবং টি-টোয়েন্টিতে নেতৃত্ব দেওয়া, প্রথম মহিলা ক্রিকেটার হিসেবে এক দিনের ক্রিকেটে ৫০০০ এবং ৬০০০ রান করা, এ রকম আরও অগুন্তি রয়েছে। গত মহিলা বিশ্বকাপেও তিনি ভারতীয় দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। কিন্তু এ বার গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয়।
ক্রিকেট ছাড়াও খুব ভাল ভরতনাট্যম নাচ জানেন। ভালবাসেন বই পড়তে। নেটমাধ্যমে খুব একটা সক্রিয় নন। মিতালিকে নিয়ে নির্মিত বায়োপিক ‘শাবাশ মিঠু’ পরের বছর মুক্তি পাওয়ার কথা।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy