প্রথম একাদশে ফিরেই শামির দাপট। সতীর্থকে অভিনন্দন বুমরার। ছবি: আইসিসি।
বিশ্বকাপের আগে শেষ তিনটি ম্যাচ। সব কিছু ঠিক ঠাক আছে কিনা দেখে নেওয়ার শেষ সুযোগ রাহুল দ্রাবিড়, রোহিত শর্মাদের সামনে। কিন্তু তাঁরা যা দেখলেন, তাতে স্বস্তিতে নাও থাকতে পারেন। ভারত-অস্ট্রেলিয়া সিরিজ়ের প্রথম দু’ম্যাচের অধিনায়ক লোকেশ রাহুলের উইকেটরক্ষক হিসাবে পারফরম্যান্স চিন্তা বৃদ্ধি করবে তাঁদের। উদ্বেগ থাকবে চোট সারিয়ে ফেরা আর এক ক্রিকেটার শ্রেয়স আয়ারকে নিয়েও। আবার এশিয়া কাপে নিয়মিত সুযোগ না পাওয়া মহম্মদ শামিকে দেখে স্বস্তি পেতে পারেন দ্রাবিড়, রোহিতেরা। যদিও ৮ বল বাকি থাকতে ৫ উইকেটে ২৮১ রান তুলে জয় পেল ভারত।
টস জিতে প্রথমে অস্ট্রেলিয়াকে ব্যাট করতে পাঠান রাহুল। ৫০ ওভারে অস্ট্রেলিয়া তোলে ২৭৬ রান। এশিয়া কাপের অধিকাংশ ম্যাচে সাজঘরে কাটানো শামি নজর কাড়লেন। ইনিংসের শুরুতে, মাঝে, শেষে— যখনই বল করতে এলেন, উইকেট তুলে নিলেন। ৫১ রান খরচ করে ৫ উইকেট নিয়ে এক দিনের ক্রিকেটে সেরা বোলিং করার পাশাপাশি বার্তা দিয়ে রাখলেন কোচ, অধিনায়ককেও। এশিয়া কাপ ফাইনালে ৬ উইকেট নেওয়া মহম্মদ সিরাজকে হয়তো কিছুটা চাপেও ফেলে দিলেন বাংলার জোরে বোলার। তবে দেড় বছর পর এক দিনের ক্রিকেট খেলতে নেমে ততটা দাগ কাটতে পারলেন না রবিচন্দ্রন অশ্বিন। ৪৭ রান দিয়ে ১ উইকেট নিলেও, বিশ্বকাপের চূড়ান্ত দলে জায়গা পাকা করতে হলে অভিজ্ঞ অফ স্পিনারকে আরও ভাল কিছু করতে হবে।
অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটারদের কেউই বড় রান পেলেন না। তবে দলগত চেষ্টায় লড়াই করার মতো রান তুলল পাঁচ বারের বিশ্বজয়ীরা। ডেভিড ওয়ার্নার (৫২), স্টিভ স্মিথ (৪১), মার্নাস লাবুশেন (৩৯), ক্যামেরন গ্রিন (৩১), জশ ইংলিশেরা (৪৫) দলের ইনিংস এগিয়ে নিয়ে গেলেন। মার্কাস স্টোইনিসের ব্যাট থেকে এল ২৯ রান। ২১ রান করে অপরাজিত থাকলেন অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সিরিজ় খেলে ভারতে আসা অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটারেরা মোহালির বাউন্সের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে কিছুটা সমস্যায় পড়লেন। একটি করে উইকেট পেলেন যশপ্রীত বুমরা, রবীন্দ্র জাডেজা।
উইকেটের পিছনে রাহুল পর পর বল গলালেন, ক্যাচ ফেললেন। বিশ্বকাপে তাঁর উপর কতটা ভরসা করা যাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হল। ফিল্ডারদের ছোড়া বল ধরতেও সমস্যায় পড়লেন রাহুল। প্রশ্ন তৈরি হল চোট সারিয়ে ফেরা শ্রেয়স আয়ারকে নিয়েও। পিঠের ব্যথায় এশিয়া কাপের শেষ দিকে খেলতে পারেননি। শুক্রবারও তাঁর পারফরম্যান্স নিয়ে প্রশ্ন থাকল। ফিল্ডিংয়ে সহজ ক্যাচ ফেললেন। ব্যাট করার সময় নিজের ভুলে রান আউট হলেন হাস্যকর ভাবে।
২৭৭ রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভাল করেন দুই তরুণ ওপেনার শুভমন গিল এবং রুতুরাজ গায়কোয়াড়। প্রথম উইকেটে তাঁদের জুটিতে ওঠে ১৪২ রান। এশিয়ান গেমসে ভারতীয় দলের অধিনায়ক রুতুরাজের ব্যাট থেকে এল ৭৭ বলে ৭১ রানের ইনিংস। ১০টি চার মারলেন তিনি। ঘরের মাঠে শুভমন করলেন ৬৩ বলে ৭৪। ৬টি চার এবং ২টি ছক্কা মারলেন শুভমন। প্রথম দুই ব্যাটার আউট হওয়ার পর ভারতের রান তোলার গতিও কমে গেল। শ্রেয়স (৩), ঈশানদের (১৮) ব্যর্থতা চাপে ফেলে দেয় ভারতকে। সূর্যকুমার যাদবকে নিয়ে সেই চাপ সামলানোর চেষ্টা করেন রাহুল। তাঁদের ষষ্ঠ উইকেটের জুটি-ই ভারতকে জয়ের দরজায় পৌঁছে দিল। পরিস্থিতি অনুযায়ী খেললেন তাঁরা। তাঁদের জুটিতে উঠল ৮০ রান। ৪৯ বলে ৫০ রান করে শন অ্যাবটের বলে আউট হলেন সূর্য। তাঁর ব্যাট থেকে এল ৫টি চার এবং ১টি ছয়।
শেষ বেলায় রাহুলকে ২২ গজে সঙ্গ দিলেন জাডেজা। দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়লেন তাঁরা। রাহুল অপরাজিত থাকলেন ৬৩ বলে ৫৮ রান করে। মারলেন ৪টি চার এবং ১টি ছয়। জাডেজা অপরাজিত থাকলেন ৩ রান করে। ১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপের পর এই প্রথম মোহালিতে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে সিরিজ়ে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল ভারত। দ্বিতীয় ম্যাচ ২৪ সেপ্টেম্বর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy