Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Ashes 2023

উডের দাপটে বেসামাল অস্ট্রেলিয়া, অ্যাশেজ়ে ইনিংসে হারের ভ্রূকুটি কামিন্সের দলের সামনে

জনি বেয়ারস্টোর দাপটে ম্যাঞ্চেস্টার টেস্টে বড় রান তুলল ইংল্যান্ড। প্রায় ৩০০ রানে পিছিয়ে থাকা অস্ট্রেলিয়া চাপে পড়ে গিয়েছে মার্ক উডের বোলিংয়ের সামনে।

ashes 2023

উইকেট পেয়ে মার্ক উডের উচ্ছ্বাস। ছবি: রয়টার্স।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০২৩ ২৩:১৪
Share: Save:

শুরুটা করেছিলেন জনি বেয়ারস্টো। শেষটা করলেন মার্ক উড। দুই ইংরেজ ক্রিকেটারের দাপটে ম্যাঞ্চেস্টারে চতুর্থ টেস্টে ইনিংসে জয় পেতে পারে ইংল্যান্ড। তৃতীয় দিনের শেষে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ১১৩-৪। পিছিয়ে ১৬২ রানে। হাতে ছয় উইকেট। ক্রিজে রয়েছেন মার্নাস লাবুশেন (৪৪) এবং মিচেল মার্শ(১)। তার আগে প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ড শেষ হয়ে যায় ৫৯২ রানে।

শুক্রবার ইংল্যান্ডের তিন ব্যাটারের অর্ধশতরান দেখা গেল। প্রথমে অর্ধশতরান করেন বেন স্টোকস। অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের শাসন করেন তিনি। শুরুতে ধীরগতির খেললেও পরের দিকে আগ্রাসী খেলে অর্ধশতরান করেন হ্যারি ব্রুক। তবে দিনের সেরা ইনিংসটা খেলেছেন বেয়ারস্টো। সতীর্থ জেমস অ্যান্ডারসনের ভুলে অল্পের জন্য টেস্টে ১৩তম শতরান হাতছাড়া হল তাঁর। অপরাজিত থাকলেন ৯৯ রানে। ১৯৯৫ সালে পার্থে স্টিভ ওয়ার পর আবার অ্যাশেজে কোনও ব্যাটার ৯৯ রানে অপরাজিত থাকলেন।

তৃতীয় দিনের খেলা শুরুর আগে ইংল্যান্ডের একটাই লক্ষ্য ছিল, যতটা সম্ভব গতিতে রান তোলা। এই ম্যাচে প্রায় প্রতি দিনই বৃষ্টি আসতে পারে। সে ক্ষেত্রে ইংল্যান্ডের জয়ের সম্ভাবনা কমে যেত। কিন্তু জনি বেয়ারস্টো-সহ ইংল্যান্ডের ব্যাটাররা যে ভাবে খেললে, তাতে জয়ের সম্ভাবনা বেড়ে গেল অনেকটাই। ইংরেজ বোলাররা ঠিক ঠাক বল করতে পারে এই টেস্ট জিতে সিরিজ়ে সমতা ফেরাতেই পারে বেন স্টোকসের দল। ইতিমধ্যেই শুক্রবার কিছু ক্ষণের জন্য বৃষ্টি এসে খেলার বিঘ্ন ঘটিয়েছে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার কাছে এই টেস্ট বাঁচাতে হলে দুটো জিনিস দরকার। হয় তাদের ব্যাটারদের থেকে বড় রানের ইনিংস। নয়তো বেশ কয়েকটা সেশন বৃষ্টিতে ভেস্তে যাওয়া।

দ্বিতীয় দিন যে ভাবে শেষ করেছিল, সে ভাবেই তৃতীয় দিন শুরু করে ইংল্যান্ড। ক্রিজে ছিলেন হ্যারি ব্রুক এবং বেন স্টোকস। প্রথম থেকেই ইংল্যান্ডের খেলার মধ্যে ছিল একটা আগ্রাসী মেজাজ। মাত্র ২.৪ ওভারেই ১৬ রান তুলে স্কোরবোর্ডে চারশো তুলে ফেলে তারা। শুরুর দিকে স্টোকস বেশি চালিয়ে খেলছিলেন। ব্রুকস বরং একটা দিক ধরে রাখছিলেন। অর্ধশতরান করার পরেই ইংরেজ অধিনায়ক ফিরে যান। প্যাট কামিন্সের বলে চালাতে গিয়ে উইকেট ভেঙে যায়। শরীরের ভারসাম্য ঠিক রাখতে না পারায় আউট হন।

তার পর থেকে রানের গতি বাড়াতে থাকেন ব্রুক। অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় বল নিতে একটু দেরি করে। নিলে উইকেট নেওয়ার সুযোগ থাকত তাদের সামনে। কিন্তু ইংল্যান্ডের রানের গতি রোখাই তখন মূল চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। অবশেষে ৯১তম ওভারে নতুন বল নেয় ইংল্যান্ড। মিচেল স্টার্কের সেই ওভারে মাত্র এক রান ওঠে। পরের ওভারে জশ হেজলউড দেন দু’রান। ইংল্যান্ডের রান তোলার গতি কমে যায়।

ব্রুক অর্ধশতরান করে ফেরার পর ইংল্যান্ডের বাকি ব্যাটাররা কেউ হেজলউডের সামনে দাঁড়াতে পারেননি। এক সময় মনে হচ্ছিল সাড়ে পাঁচশোর বেশি উঠবে না ইংল্যান্ডের রান। কিন্তু জনি বেয়ারস্টোর মনে অন্য কিছু ছিল। চলতি অ্যাশেজ়ে খারাপ উইকেটকিপিংয়ের জন্যে সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি। তা ছাড়া, লর্ডস টেস্টে তাঁর আউট হওয়া নিয়েও সমালোচনা হয়েছে।

সেই বেয়ারস্টো শেষ উইকেটে জিমি অ্যান্ডারসনের সঙ্গে যোগ করলেন ৬৬ রান। অস্ট্রেলিয়া ভাবতেও পারেনি শেষ উইকেটে এ ভাবে প্রতিরোধের মুখে পড়তে হবে তাদের। যদিও অ্যান্ডারসনকে কিছু করতেই হয়নি। প্রায় প্রতিটি বলই খেলছিলেন বেয়ারস্টো। শুধু খেলছিলেন বলা ভুল, চালিয়ে খেলছিলেন। তখন তাঁর একটাই লক্ষ্য ছিল, রান যথাসম্ভব বাড়িয়ে নেওয়া। সেই কাজ করতে গিয়েই পৌঁছে যান শতরানের সামনে।

১০৮তম ওভারের তৃতীয় বলে দু’রান নিতে গিয়েছিলেন বেয়ারস্টো। তা হলেই শতরান পূরণ হয়ে যেত তাঁর। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার ফিল্ডারের দক্ষতায় দু’রান নিতে পারেননি। ফলে ক্যামেরন গ্রিনের সেই ওভারে অ্যান্ডারসনকে তিনটি বল খেলতে হত। প্রথম বলেই আড়াআড়ি ভাবে ব্যাট চালিয়ে এক রান নিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু বল সোজাসুজি উইকেট লক্ষ্য করে ছিল। আম্পায়ার আঙুল তুলে দেন। অ্যান্ডারসন ডিআরএস নিলেও লাভ হয়নি।

২৭৫ রানে পিছিয়ে থেকে ব্যাট করতে নামে অস্ট্রেলিয়া। এই জায়গা থেকে যে কোনও দলের পক্ষেই দ্বিতীয় ইনিংসে নামা ভয়ঙ্কর। তবে অস্ট্রেলিয়া শুরুটা খারাপ করেনি। ধাক্কা আসে ১১তম ওভারে। মার্ক উডের বলের সুইং বুঝতে না পেরে খোঁচা দেন অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম বড় ভরসা উসমান খোয়াজা। উইকেটকিপার বেয়ারস্টোর ক্যাচ ধরতে অসুবিধা হয়নি।

ডেভিড ওয়ার্নারের খারাপ ফর্ম এই টেস্টেও অব্যাহত। তাঁর উপরে প্রতি ম্যাচে ভরসা রাখা হলেও অসি ওপেনার মোটেই আস্থা রাখতে পারছেন না। এ দিন শুরুটা খারাপ করেননি। ঠিক যখন মনে হচ্ছে তাঁর ব্যাট থেকে বড় রান আসতে চলেছে, তখনই ক্রিস ওকসের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন তিনি।

ইংল্যান্ডের দ্রুততম জোরে বোলার উড অবশ্য এখানেই থামেননি। ঠিক যখন মার্নাস লাবুশেন এবং স্টিভ স্মিথ জুটি বেধে দলের ধস সামাল দেওয়ার চেষ্টা করলেন, তখনই প্রাক্তন অসি অধিনায়ককে আউট করেন উড। পুল করতে গিয়ে উইকেটকিপারের হাতে ক্যাচ দেন স্মিথ। কিছু ক্ষণ পরে হেডকেও সাজঘরে ফেরান উড।

অন্য বিষয়গুলি:

Ashes 2023 mark wood Jonny Bairstow
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE