বিতর্ক: প্রাক্তন ভারতীয় কোচ কুম্বলে ও প্রাক্তন অধিনায়ক কোহলির মতপার্থক্যের ঘটনা ফের চর্চায়। নিজস্ব চিত্র।
বিরাট কোহলি এবং অনিল কুম্বলের মধ্যে মারাত্মক মতপার্থক্য ঘটে এবং তার জেরেই কোচকে সরে যেতে হয়। যদিও তখনকার ক্রিকেট অ্যাডভাইসরি কমিটি চেয়েছিল, কুম্বলেই দায়িত্বে থাকুন। কুম্বলে-কোহলি বিতর্কে বিস্ফোরক সব তথ্য এ বার ফাঁস করলেন তখনকার বোর্ড প্রধান এবং প্রাক্তন ক্যাগ বিনোদ রাই।
তাঁর নতুন বই ‘নট জাস্ট আ নাইটওয়াচম্যান, মাই ইনিংস ইন দা বিসিসিআই’-এ সেই বিতর্কিত অধ্যায় নিয়ে অন্দরমহলের খবর ফাঁস করেছেন রাই। ভারতীয় ক্রিকেট এবং আইপিএলে দুর্নীতির জেরে সুপ্রিম কোর্ট কমিটি অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটর্স নিযুক্ত করেছিল বোর্ড পরিচালনার জন্য। সেই কমিটির প্রধান ছিলেন রাই। কুম্বলে-কোহলি বিতর্ক কর্তাদের ভীষণই নাড়িয়ে দিয়েছিল বলে তিনি মন্তব্য করেছেন। দু’জনের মধ্যে একসঙ্গে কাজ করার মতো সম্পর্কটুকু ছিল না বলেও জানিয়েছেন।
বইতে রাই লিখেছেন, ‘‘আমাদের জানানো হয়েছিল, কুম্বলে খুব বেশি শৃঙ্খলাপরায়ণ। দলের সদস্যরা তাঁকে নিয়ে সন্তুষ্ট ছিল না। আমি বিরাট কোহলির সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলি এবং ও আমাকে জানায়, কুম্বলের আচরণে দলের তরুণ সদস্যরা আতঙ্কিত বোধ করছে।’’ যার জবাবে কুম্বলে আবার সিওএ-কে জানান, তিনি যা করেছেন, ভারতীয় ক্রিকেটের স্বার্থে করেছেন এবং কোচ হিসেবে তাঁর সাফল্যকেই গুরুত্ব দেওয়া উচিত। ক্রিকেটারদের ক্ষোভকে নয়। রাই আরও লিখেছেন, ‘‘ইংল্যান্ড থেকে ফেরার পরে কুম্বলের সঙ্গে আমাদের দীর্ঘ আলোচনা হয়। যে ভাবে পুরো ঘটনাটা ঘটেছিল, তাতে ও অবশ্যই খুব হতাশ ছিল। কুম্বলের মনে হয়েছিল, ওর সঙ্গে অন্যায় হয়েছে এবং অধিনায়ক বা দলের সদস্যদের এতটা গুরুত্ব পাওয়া উচিত নয়। ওর মনে হয়েছিল, দলের মধ্যে শৃঙ্খলারক্ষা করা কোচেরই দায়িত্ব এবং কোচের বক্তব্যকে সম্মান করা উচিত ক্রিকেটারদের।’’ বইতে উল্লেখ রয়েছে, সেই সময়ে ক্রিকেট উপদেষ্টা কমিটির তিন মহাতারকা সদস্য সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, সচিন তেন্ডুলকর এবং ভিভিএস লক্ষ্মণও এ নিয়ে কথা বলেন কুম্বলে ও কোহলির সঙ্গে। তাঁরা মিটমাটের চেষ্টা করেও পারেননি। বোর্ডের সিইও রাহুল জোহরি এবং কার্যনির্বাহী সচিব অমিতাভ চৌধুরিও শান্তি ফেরানোর চেষ্টা করেন। ইংল্যান্ডে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সময় এ সব ঘটছিল। সৌরভরা এর পর দু’জনের সঙ্গে আলাদা করে বসে ব্যবধান মেটানোর চেষ্টা করেন। তিন দিন ধরে সেই চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ার পরে ক্রিকেট অ্যাডভাইসরি কমিটি পরামর্শ দেয়, কুম্বলেকেই কোচ হিসেবে রাখা হোক।
বইতে রাই লিখেছেন, এর পর কুম্বলে নিজেই সকলকে চমকে দিয়ে সরে দাঁড়ান। পদত্যাগ পত্রে কুম্বলে লেখেন, ‘‘আমাকে জানানো হয়েছে, অধিনায়কের আমার কর্মপদ্ধতি এবং কোচ হিসেবে উপস্থিতি নিয়ে আপত্তি রয়েছে। খুবই অবাক হয়েছি কারণ আমি সব সময়ই কোচ এবং অধিনায়কের আলাদা সীমাকে সম্মান করেছি।’’
নাটক যদিও এখানেই থামেনি। এর পর আসরে চলে আসে রবি শাস্ত্রীর নাম। কুম্বলের অপসারণে কোহলির বিশেষ পছন্দের শাস্ত্রীকে কোচ করে আনা হবে বলে চর্চা শুরু হয়। বলাবলি হতে থাকে, খেলোয়াড়দের বাহুবল বড্ড বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে। শাস্ত্রীর সেই সময় আবেদন করাও ছিল না কিন্তু সময়সীমা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় রাইয়ের বোর্ড। যা নিয়ে বইতে রাইয়ের যুক্তি, ‘‘কুম্বলে কোচ থাকায় অনেক যোগ্য প্রার্থী হয়তো আবেদন করতে চায়নি। তাই সময়সীমা বাড়ানো হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy