প্রখর চতুর্বেদী। ছবি: এক্স (টুইটার)।
কোচবিহার ট্রফিতে ৪০৪ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে ভারতীয় ক্রিকেটে নজির গড়েছেন কর্নাটকের প্রখর চতুর্বেদী। যুবরাজ সিংহের ২৪ বছরের পুরনো রেকর্ড ভাঙা ব্যাটারের চোখ রঞ্জি ট্রফিতে। পরিবারের একাধিক সদস্য তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী হলেও ক্রিকেট নিয়েই এগোতে চান প্রখর।
কোচবিহার ট্রফির সাফল্যের পর ১৮ বছরের ব্যাটারের নজর এখন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট। ৪০৪ রানের ইনিংস নিয়ে প্রখর বলেছেন, ‘‘দারুণ লাগছে। ইনিংসটা ফাইনালে খেলতে পারায় বেশি ভাল লাগছে। এই প্রথম কর্নাটক কোচবিহার ট্রফি জিতল। এত বড় ইনিংস খেলার পর একটু ক্লান্ত লাগছিল। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আনন্দে ক্লান্তি উধাও হয়ে গিয়েছে। দলের সাফল্যে অবদান রাখতে পেরে খুব ভাল লাগছে।’’
প্রখরের বাড়িতে ক্রিকেটের সঙ্গে কারও তেমন যোগাযোগ নেই। তাঁর বাবা সঞ্জয় কুমার চতুর্বেদী সফ্টঅয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। বেঙ্গালুরুর ইলেকট্রনিক সিটিতে তাঁর নিজস্ব সফ্টঅয়্যার সংস্থা রয়েছে। প্রখরের মা রূপা চতুর্বেদী ডিআরডিও-র প্রযুক্তিবিদ। তবে তাঁরা কখনও ছেলেকে পড়াশোনার জন্য চাপ দেননি। প্রখরের ক্রিকেট খেলায় বাধা দেননি কখনও। ছেলেকে স্বাধীনতা দিয়েছেন। পছন্দের রাস্তা বেছে নিতে দিয়েছেন। প্রখর বলেছেন, ‘‘সব সময় বাবা-মার সমর্থন পেয়েছি। সব সময় ওঁরা আমাকে উৎসাহ দিয়েছেন। পাশে থেকেছেন। আট বছর বয়স থেকে ক্রিকেট খেলছি। লকডাউনের সময় আমার জন্য এক জন থ্রো ডাউন বিশেষজ্ঞের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন বাবা। আমি ক্রিকেটের পাশাপাশি, পড়াশোনাও ভাল ভাবে করার চেষ্টা করছি। এখনও পর্যন্ত দুটোই বজায় রাখতে পেরেছি।’’ প্রখর নিজের ক্রিকেটীয় লক্ষ্যের কথাও জানিয়েছেন। ১৮ বছরের ব্যাটার বলেছেন, ‘‘প্রথম লক্ষ্য কর্নাটকের অনূর্ধ্ব-২৩ দলে সুযোগ পাওয়া। তার পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রঞ্জি ট্রফি খেলতে চাই। আরও বড় চ্যালেঞ্জ সামলাতে চাই।’’ ধাপে ধাপে এগোতে চান তিনি।
কর্নাটকের পাড়ুকোন-দ্রাবিড় সেন্টার অফ এক্সেলেন্সের সিক্স ক্রিকেট অ্যাকাডেমির শিক্ষার্থী প্রখর। তাঁর কোচ যশবন্তও খুশি ছাত্রের সাফল্যে। কর্নাটকের প্রাক্তন অধিনায়ক বলেছেন, ‘‘প্রখরের টেকনিক বেশ ভাল। তার থেকে বড় গুণ হল, চাপ সামলাতে পারে। ওর ক্রিকেট মস্তিষ্ক বেশ পরিণত। আশা করি প্রখর আরও উন্নতি করবে। ক্রিকেট নিয়ে ওর দায়বদ্ধতা অন্যদের কাছে শেখার মতো। ওর বাড়ি থেকে আমাদের অ্যাকাডেমির দূরত্ব অনেক। তবু প্রতি দিন আসে।’’
প্রখর আবার সাফল্যের কৃতিত্ব দিচ্ছেন কোচকে। তিনি বলেছেন, ‘‘যশবন্ত স্যরের টেকনিক্যাল জ্ঞান অসম্ভব ভাল। আমার ব্যাটিংয়ের যে কোনও ভুল খুব দ্রুত ধরতে পারেন। স্যরের কাছে ব্যাটিং শিখতে পারা আশীর্বাদের মতো। এই সুযোগ যতটা সম্ভব কাজে লাগাতে চাই।’’
কোচবিহার ট্রফিতে এই প্রথম সাফল্য পেলেন না প্রখর। গত বছরও এই প্রতিযোগিতায় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন তিনি। বরং এ বারেই সেরা ফর্মে ছিলেন না। দু’টি শতরান করলেও প্রতিযোগিতার অধিকাংশ ম্যাচে রান পাননি। প্রখর সব আক্ষেপ মিটিয়ে নিয়েছেন ফাইনালের ৬৩৮ বলের অপরাজিত ইনিংসে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy