শ্রেয়স আয়ার। —ফাইল চিত্র।
প্রথমে চোট। তার পর টেস্ট দল থেকে বাদ পড়া। সুস্থ হলেও রঞ্জি ট্রফিতে না খেলা। একের পর এক ঘটনায় জর্জরিত শ্রেয়স আয়ার। মুম্বইয়ের ক্রিকেটারকে নিয়ে চিন্তায় কলকাতাও। তিনি যে কলকাতা নাইট রাইডার্সের অধিনায়ক। আইপিএলের সূচিও ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। এমন অবস্থায় শ্রেয়স যদি খেলতে না পারেন তা হলে যে কেকেআর বড় ধাক্কা খাবে তা বলাই যায়।
২২ মার্চ থেকে শুরু আইপিএল। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড আয়োজিত এই প্রতিযোগিতায় শ্রেয়স খেলতে পারবেন তো? শোনা যাচ্ছে তাঁকে বোর্ডের বার্ষিক চুক্তি থেকে বাদ হতে পারে। এর নেপথ্যে অবশ্যই রঞ্জি না খেলা। শ্রেয়সকে প্রথম দু’টি টেস্টের পর বাদ দেওয়া হয়। ভারতের কোচ রাহুল দ্রাবিড় আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে এক বার বাদ পড়লে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলে কোনও ক্রিকেটারকে আবার জাতীয় দলে জায়গা করতে হবে। সেই কারণে মুম্বইয়ের হয়ে রঞ্জি খেলার কথা ছিল শ্রেয়সের। কিন্তু নাম তুলে নিয়েছেন তিনি।
রঞ্জির কোয়ার্টার ফাইনালে মুম্বইয়ের খেলা বরোদার সঙ্গে। শুক্রবার থেকে সেই খেলা শুরু হয়েছে। শ্রেয়স নাকি মুম্বই ক্রিকেট সংস্থাকে জানিয়েছেন যে তাঁর পিঠে ব্যথা রয়েছে। সেই কারণে খেলবেন না তিনি। শ্রেয়সের এই কথার উল্টো কথা শোনা যাচ্ছে জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমির স্পোর্টস সায়েন্স ও মেডিসিন বিভাগের প্রধান নিতিন পটেলের কথায়। তিনি জানিয়েছেন, শ্রেয়স সম্পূর্ণ সুস্থ। নতুন করে কোনও চোট লাগেনি তাঁর।
ভারতীয় দল থেকে শ্রেয়স বাদ পড়ার সময় প্রথমে শোনা গিয়েছিল তাঁর চোট রয়েছে। কিন্তু পরে জানা যায়, চোট নয়, ব্যাটে রান নেই বলেই বাদ দেওয়া হয়েছে তাঁকে। লাল বলের ক্রিকেট থেকে বাদ পড়েও রঞ্জি খেলার আগ্রহ দেখাননি শ্রেয়স। যা ভাল ভাবে নেয়নি বোর্ড। প্রশ্ন উঠছে লাল বলের ক্রিকেটের প্রতি শ্রেয়সের দায়বদ্ধতা নিয়েও। সামনেই আইপিএল সেই কারণেই কি লাল বলের প্রতিযোগিতা না খেলে বিশ্রাম নিচ্ছেন তিনি। তরতাজা হয়ে নামবেন কেকেআরের হয়ে? আইপিএলের আগে কোনও রকম চোট পেতে চাইছেন না হয়তো শ্রেয়স। সেই কারণে আপাতত ক্রিকেট থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখছেন। কিন্তু আইপিএলকে গুরুত্ব দিয়ে লাল বলের ক্রিকেট না খেলাকে বোর্ড ভাল চোখে দেখছে না।
কিছু দিন আগেও জয় শাহ এই প্রবণতা নিয়ে উদ্বেগ দেখিয়েছিলেন। ভারতীয় বোর্ডের সচিব স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন যে, ঘরোয়া ক্রিকেট না খেললে ভারতীয় দলে তো নয়ই, আইপিএলেও সুযোগ দেওয়া হবে না ক্রিকেটারদের। ঘরোয়া ক্রিকেট না খেলে আইপিএলের দিকে যে ঝোঁক ক্রিকেটারদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে, সেটা আটকানোর জন্যই বোর্ডের তরফে এমন কথা বলা হয়েছিল। আগামী দিনে বোর্ড এমন নিয়মও করতে পারে যে, ঘরোয়া খেললে তবেই আইপিএল খেলার সুযোগ পাওয়া যাবে। তেমন হলে কিন্তু বিপদে পড়বেন শ্রেয়সের মতো ক্রিকেটারেরা।
শ্রেয়স ভুগতে হচ্ছে চোটের কারণেও। গত বছর আইপিএল খেলতে পারেননি চোটের জন্য। ২০২২ সালে বাংলাদেশে গিয়ে রান করেন শ্রেয়স। মনে করা হচ্ছিল টেস্টে মিডল অর্ডারে জায়গা পাকা করে ফেলবেন তিনি। কিন্তু সেই সিরিজ়ের পরেই চোট পেয়ে যান শ্রেয়স। তাঁর পিঠে ব্যথা শুরু হয়। সেই চোট সারিয়ে বর্ডার-গাওস্কর ট্রফিতে দলে ফেরেন শ্রেয়স। যদিও ২০২৩ সালে ঘরের মাঠে সেই সিরিজ়ে তিনটি ম্যাচ খেলার পর আবার পিঠে ব্যথা শুরু হয় তাঁর। অস্ত্রোপচার করাতে হয়। সেই কারণেই আইপিএল খেলতে পারেননি। খেলতে পারেননি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালেও। শেষ পর্যন্ত শ্রেয়স দলে ফেরেন এশিয়া কাপে। সেখানে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একটি ম্যাচ খেলেন। তার পরে আবার চোটের কারণে দলের বাইরে চলে যান।
বিশ্বকাপের আগে যদিও শ্রেয়স সুস্থ হয়ে ওঠেন। ভারতের হয়ে এক দিনের বিশ্বকাপে সব ম্যাচেও খেলেন। কিছু ম্যাচে রানও করেন তিনি। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্টে দলে রাখা হয় তাঁকে। প্রথম দু’টি ম্যাচে খেলেনও। কিন্তু রান পাননি। এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধেও টেস্টে রান পাননি তিনি। ফলে দল থেকে পড়তে হয় তাঁকে। কিন্তু ঘরোয়া ক্রিকেট না খেললে আগামী দিনে টেস্ট দলে ফিরতে পারবেন তো?
আইপিএলে কেকেআরের সমর্থকেরা যদিও চাইবেন শ্রেয়সকে পুরো প্রতিযোগিতায় পেতে। না হলে গত বারের মতো মিডল অর্ডার নিয়ে সমস্যা তৈরি হবে। সমস্যা হবে নেতৃত্ব নিয়েও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy