ফিরছেন কোহলী, উল্লাস প্রোটিয়াদের। ছবি রয়টার্স
টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে জিতেছিল ভারত। কিন্তু এক দিনের সিরিজে প্রথমেই হোঁচট খেয়ে শুরু করল তারা। তেম্বা বাভুমা এবং রাসি ভ্যান ডার ডুসেনের জোড়া শতরানের চাপে প্রথম ম্যাচে ৩১ রানে হারল রাহুল-বাহিনী। দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে এগিয়ে গেল ১-০ ব্যবধান। ভারতকে ভোগাল সেই মাঝের সারির ব্যাটারদের ব্যর্থতা। শিখর ধবন এবং বিরাট কোহলী ভিতটা গড়ে দিলেও মাঝের দিকের ব্যাটাররা তা কাজে লাগাতে ব্যর্থ। পিচে যে কোনও জুজু ছিল না, সেটা বোঝা গেল শেষ দিকে শার্দূল ঠাকুরের ব্যাটিংয়ে। মূলত বোলার হয়েও চাপের মুখে অসাধারণ অর্ধশতরান করলেন শার্দূল।
টসে হেরে বোলিং করতে নেমে শুরুটা খারাপ করেনি ভারত। পঞ্চম ওভারেই জানেমন মালানকে ফিরিয়ে প্রথম ধাক্কাটা দেন যশপ্রীত বুমরা। এরপর ওপেনার কুইন্টন ডি’ককের সঙ্গে জুটি বাঁধেন তেম্বা বাভুমা। সেই জুটিও বেশিক্ষণ টেকেননি। ডি’কক এবং এইডেন মার্করাম ফিরে যান ১৮ ওভারের মধ্যেই। সেই যে তিনটি উইকেট পড়ল, এরপর ৩০ ওভার বোলিং করেও কোনও উইকেট পাননি ভারতীয় বোলাররা।
বাভুমার সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে যে জুটি গড়লেন রাসি ভ্যান ডার ডুসেন, তা গিয়ে থামল ৪৯তম ওভারে। ততক্ষণে চতুর্থ উইকেটে ২০৪ রানের জুটি গড়ে ফেলেছেন তাঁরা। বাভুমা এবং ডুসেন, দু’জনেরই শতরান হয়ে গিয়েছে। বাভুমা ফেরার পর দক্ষিণ আফ্রিকার রান এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন ডুসেন। শেষ পর্যন্ত ৯৬ বলে ১২৯ করে অপরাজিত থাকেন তিনি। ১৪৩ বলে ১১০ রান করেন বাভুমা। অধিনায়কোচিত ইনিংস পাওয়া গেল তাঁর ব্যাট থেকে।
South Africa complete a 31-run win 👏🏻
— ICC (@ICC) January 19, 2022
The hosts go 1-0 up in the three-match ODI series 🎉
Watch the series live on https://t.co/CPDKNxoJ9v (in select regions)#SAvIND | https://t.co/P4UbRkIzIW pic.twitter.com/LofDcqnBMa
ভারতের শুরুটাও ভালই হয়েছিল। শুরু থেকেই রান তোলার গতির দিকে মন দিয়েছিলেন কেএল রাহুল এবং শিখর ধবন। কিন্তু দলের রান ৫০ পেরনোর আগেই রাহুল ফিরে যান। এরপরেই নামেন বিরাট কোহলী। দ্বিতীয় উইকেটে ধবনের সঙ্গে লম্বা জুটি গড়ার দিকে এগোচ্ছিলেন তিনি। ভারত এই ম্যাচে হারলেও নিজেকে প্রমাণ করে দিলেন ধবন। একসময় মনে করা হয়েছিল ধবনের ক্রিকেটজীবন হয়তো শেষ। দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ এখনও তাঁর কাছে নিজেকে প্রমাণ করার শেষ সুযোগ। প্রথম ম্যাচে অন্তত সেই সুযোগ ভাল ভাবেই কাজে লাগালেন ধবন। চুপ করিয়ে দিলেন সমালোচকদের।
প্রথম থেকেই আক্রমণাত্মক খেলে দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের ওপর চেপে বসেছিলেন ধবন। সে সময় ধীরে ধীরে নিজের ইনিংস গড়ায় মন দিয়েছিলেন কোহলী। মারকুটে হতে গিয়ে ধবন নিজের উইকেট খোয়ানোর পর মনে করা হয়েছিল এই ম্যাচে ত্রাতা হবেন কোহলী। ঠান্ডা মাথায় খেলে নিজের অর্ধশতরানও পূরণ করে নেন ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক। কিন্তু তারপরেই মনোসংযোগে বিচ্যুতি ঘটল। তাবরেজ শামসিকে মিড উইকেটের উপর দিয়ে ওড়াতে গিয়ে মিস হিট করলেন। অনায়াসেই কোহলীর ক্যাচ ধরে নেন বাভুমা। সাধারণত ক্রিকেটে তাঁকে খুব বেশি সুইপ খেলতে দেখা যায় না। বুধবার কী কারণে এমন শট খেললেন, তা দুর্বোধ্য। ফলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শতরানের জন্য আরও অপেক্ষা করতে হবে কোহলীকে।
কোহলী ফেরার পরেও ভাল জায়গায় ছিল ভারত। মাঝের সারির ব্যাটাররা একটু ধরে ফেললে এই ম্যাচ জিততে কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু কোচ রাহুল দ্রাবিড়ের চিন্তা বাড়িয়ে হতাশ করলেন ভারতের তরুণ ক্রিকেটাররা। ধরে খেললেই যেখানে ম্যাচ বেরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল, সেখানে অহেতুক ভুল শট খেলতে গিয়ে বা আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে উইকেট দিয়ে এলেন শ্রেয়স আয়ার, ঋষভ পন্থরা। কলকাতা নাইট রাইডার্সের আবিষ্কার বেঙ্কটেশ আয়ারের বুধবারই জাতীয় দলের হয়ে এক দিনের ক্রিকেটে অভিষেক হল। দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসে মার্করামকে আউট করা ছাড়া তাঁর অবদান প্রথম ম্যাচে পাওয়া গেল না। ব্যাটিং করার সময় পুল করতে গিয়ে উইকেট হারালেন তিনি। শেষের দিকের ব্যাটারদের পক্ষে পক্ষে ভারতকে এই ম্যাচে জেতানো কার্যত অসম্ভব ছিল। তা হয়ওনি। ম্যাচের ফলাফল পরিষ্কার হয়ে যায় ৩৯তম ওভারে রবিচন্দ্রন অশ্বিন ফিরতেই।
কিন্তু ম্যাচ শেষ পর্যন্ত টেনে নিয়ে গেলেন শার্দূল। কোনওমতেই হাল ছাড়তে রাজি ছিলেন না তিনি। কিন্তু উল্টোদিকে কেউ না থাকায় যথেষ্ট সাবধানী হয়ে খেলতে হচ্ছিল তাঁকে। অর্ধশতরান পেলেন, তবে দুর্ভাগ্যবশত তা দলকে জেতাতে পারল না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy