Advertisement
E-Paper

Cricket: অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে কেন ভারত বার বার পারছে, পিছোচ্ছে ইংল্যান্ড?

আট বছরে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ১২টি টেস্ট খেলে ইংরেজদের হারতে হয়েছে ১১টি টেস্ট। অ্যাশেজ হসত তার জৌলুস হারাচ্ছে।

ছবি: এএফপি

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২১ ১৫:১৮
Share
Save

২০১৩ সাল থেকে ধরা যাক। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ইংল্যান্ডের কপালে জুটেছে শুধুই ব্যর্থতা। এই আট বছরে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ১২টি টেস্ট খেলে ইংরেজদের হারতে হয়েছে ১১টি টেস্ট। অস্ট্রেলিয়ার যা একাধিপত্য, এবং ইংল্যান্ড যে ভাবে বারবার পর্যুদস্ত হয়েছে, তাতে ক্রিকেটের ইতিহাসে ‘সবথেকে বড়’ যুদ্ধ আস্তে আস্তে তার জৌলুস হারাচ্ছে।

এ বার ইংল্যান্ডের অ্যাশেজ যুদ্ধ শুরু হয়েছিল ব্রিসবেনের গাব্বায়। তারা চার দিনের মাথায় ৯ উইকেটে উড়ে যায়। গাব্বায় ১৭টি টেস্ট খেলে ইংল্যান্ডের হারের সংখ্যা দাঁড়াল ১৩। শেষ জয় এসেছিল ৩৫ বছর আগে ১৯৮৬ সালে। গাব্বা বরাবরই অস্ট্রেলিয়ার দুর্গ। বার বার চেষ্টা করেও ইংল্যান্ড সেই দুর্গে ফাটল ধরাতে পারেনি। পেরেছে ভারত। এই বছর জানুয়ারিতে বিরাট কোহলীকে ছাড়াই ব্রিসবেনে ভারত হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়াকে। অজিঙ্ক রহাণেরা দেখিয়ে দিয়েছেন, ব্রিসবেনের শক্ত, দ্রুত গতির উইকেটে অস্ট্রেলিয়া আর অপ্রতিরোধ্য নয়।

এ বার ব্রিসবেনে ইংল্যান্ড তাদের দুই প্রধান জোরে বোলার জেমস অ্যান্ডারসন এবং স্টুয়ার্ট ব্রডকে পায়নি ঠিকই, কিন্তু তাঁরা থাকলেও কতটা তফাৎ হত, তা নিয়ে সন্দেহ থাকে। কারণ, অ্যা়ডিলেডে দিন-রাতের টেস্টে দু’ জনেই দলে ফিরলেও ইংল্যান্ডের খেলায় তার প্রভাব পড়েনি। দ্বিতীয় টেস্টে জো রুটরা হেরেছেন ২৭৫ রানে।

ছবি: এএফপি

প্রথম দুটি টেস্ট থেকে এটুকু বুঝতে অসুবিধে নেই, অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ০-৫ হার এড়াতে ইংল্যান্ডকে অনেক উন্নতি করতে হবে।

ভারতের ছবিটা উল্টো। ২০১৪-১৫ সালের অস্ট্রেলিয়া সিরিজে ভারত ০-২ হেরে গেলেও ডনের দেশে শাসন করার স্বপ্ন দেখার সেটাই শুরু। তার ঠিক আগে অ্যাশেজ জিতে আত্মবিশ্বাসে টগবগ করে ফোটা অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে চোখে চোখ রেখে লড়াই করেছিল ভারত। অ্যাডিলেডে ৪৮ রানে এবং ব্রিসবেনে ৪ উইকেটে হারে ভারত। মেলবোর্ন, সিডনিতে ড্র হয়। অ্যাডিলেড, মেলবোর্ন আর সিডনিতে ভারত যে লড়াই করেছিল, সেটাই চার বছর পরে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের ভিত গড়ে দিয়েছিল।

২০১৪-১৫ সিরিজে চারটি টেস্টে চারটি শতরান ছিল কোহলীর। ৮৬.৫০ গড়ে রান ছিল ৬৯২। মুরলি বিজয়, অজিঙ্ক রহাণেরাও পাল্লা দিয়ে লড়েছিলেন।

চার বছর পরে স্টিভ স্মিথ-ডেভিড ওয়ার্নারহীন অস্ট্রেলিয়াকে পেয়েছিল ভারত। বল বিকৃতি কাণ্ডে নির্বাসিত ছিলেন দু’ জন। তবু মিচেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্স, জস হেজলউড, নেথন লায়নকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার বোলিং আক্রমণের ধার কিছু কম ছিল না। এ বার সেই কামিন্স-হেজলউডকে ছাড়াই অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় টেস্টে হরিয়ে দেয় ইংল্যান্ডকে।

২০১৮-১৯ সিরিজে অ্যাডিলেডে প্রথমে এগিয়ে যায় ভারত। তারপর পার্থে হেরে গিয়ে মেলবোর্নে জিতে সিরিজ পকেটে পোরে ভারত। বৃষ্টি না হলে সিডনিতেও হয়ত জিতত ভারত।

কী করে অস্ট্রেলিয়ার বোলিং সামলাতে হয়, সেটা সেই সিরিজে দারুণ ভাবে দেখিয়েছিলেন চেতেশ্বর পুজারা। ১২৫৮টি বল খেলে ৫২১ রান করেছিলেন তিনি।

ছবি: এএফপি

এরপর ২০২০-২১। ভারতের সামনে ছিল পূর্ণ শক্তির অস্ট্রেলিয়া। স্মিথ, ওয়ার্নার দলে ছিলেন। অভাবিত একটা খারাপ শুরু করেছিল ভারত। প্রথম টেস্টে ৩৬ রানে শেষ হয়ে গিয়েছিল ভারতের ইনিংস। তার উপর পিতৃত্বকালীন ছুটি নিয়ে কোহলী প্রথম টেস্ট খেলে দেশে ফিরে আসেন। কেউ আর হিসেবের মধ্যে রাখেনি রহাণের ভারতকে। মেলবোর্নে পরের টেস্টেই ভারত ৮ উইকেটে জিতে সিরিজ ১-১ করে। সিডনিতে তৃতীয় টেস্ট ড্র হয়। যে ভাবে ভারত সিডনিতে ড্র করেছিল, তার সঙ্গে এ বার অ্যাডিলেডে শেষ দিন ইংল্যান্ডের আত্মসমর্পনের ছবিটা সম্পূর্ণ উল্টো।

সিডনিতে শেষ দিন ভারতের ব্যাটিংয়ে সাবধানতার সঙ্গে আগ্রাসন মেশানো ছিল। এক দিকে পুজারা ২০৫ বলে ৭৭ রান করেন। অন্য দিকে ঋষভ পন্থ ১১৮ বলে ৯৭ রানের ইনিংস দেখে মনে হচ্ছিল, ভারত ৪০৭ রান তাড়া করতে নেমে জয়ের লক্ষ্যে খেলছে। পন্থ আউট হওয়ার পর যে আর জেতা সম্ভব হবে না, সেটা ভারতের বুঝতে সময় লাগেনি। হনুমা বিহারি এবং রবিচন্দ্রন অশ্বিনের অপরাজিত জুটি ৬২ রান করে। কিন্তু তাঁরা ৪২.৪ ওভার উইকেটে থেকে ম্যাচ বাঁচিয়ে দেন। এই প্রতিরোধ ইংল্যান্ডের থেকে দেখা যায়নি।

এরপর গাব্বা। শেষ দিন ৩২৯ রানের লক্ষ্য ছিল ভারতের সামনে। ভারত শুধু ম্যাচ বাঁচায়নি, জিতে যায়। শুভমন গিল এবং চেতেশ্বর পুজারা দ্বিতীয় উইকেটে ১১৪ রান যোগ করে প্রথমে ভিত গড়ে দেন। পন্থ ১৩৮ বলে ৮৯ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়ে দেন।

মহম্মদ সিরাজ, শার্দূল ঠাকুর, নবদীপ সাইনি, ওয়াশিংটন সুন্দররা অস্ট্রেলিয়ার ২০টি উইকেট তুলে নিতে পেরেছিলেন। ইংল্যান্ডের অভিজ্ঞ বোলাররা এখনও পর্যন্ত সেটা করতে পারেননি।

২০১৩ সাল থেকে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে পরিসংখ্যানের হিসেব ধরলে দেখা যাবে ভারতের যে চার ওপেনার অন্তত তিনটি টেস্ট খেলেছেন সেখানে, তাঁদের মধ্যে তিন জনের গড় ৩০-এর উপর। তার মধ্যে এক জনের গড় ৫০-এর উপর, এক জনের প্রায় ৪৫। ইংল্যান্ডের ক্ষেত্রে এই সংখ্যাটা মাত্র এক, অ্যালিস্টার কুক, ৩৪.৫৫। তিন থেকে ছয় নম্বর ব্যাটারদের ক্ষেত্রে ভারতের এক জনের গড় ৭০-এর কাছে, একজনের ৬০-এর উপর, এক জনের ৪৭.২৮, এক জনের ৪০-এর উপর। এই ক্ষেত্রে ইংল্যান্ডের যিনি শীর্ষে আছেন, তাঁর গড় ৪৩.৯২। আর কারও গড় ৩০-ও পেরয়নি।

অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ২০১৩ সাল থেকে ধরলে ভারত এবং ইংল্যান্ড দুই দলই ১২টি করে টেস্ট খেলেছে। ভারতীয় বোলাররা ১৯৩টি উইকেট নিয়েছেন। ইংরেজ বোলারদের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা ১৫৭। এমনকী জোরে বোলারদের ক্ষেত্রেও ভারত এগিয়ে। বুমরা-সামিরা যেখানে ১৩৩টি উইকেট নিয়েছেন, সেখানে অ্যান্ডারসন-ব্রডরা নিয়েছেন ১২৮টি উইকেট।

ফলে ওপেনিং, মিডল অর্ডার, বোলিং সবেতেই অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ভারতীয় ক্রিকেটাররা টেক্কা দিয়েছেন ইংরেজদের। তাই অস্ট্রেলিয়ায় সাম্প্রতিক সিরিজগুলোয় যেখানে বারবার ভারত নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে, সেখানে ইংল্যান্ড ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে।

australia cricket england cricket Team India Indian Cricket Virat Kohli James Anderson Ashes Test Series

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।