পাকিস্তান ম্যাচেও ভারতের জয়ের নায়ক রোহিত শর্মা। —ফাইল চিত্র।
১৯৯২ সালে মেলবোর্নে মহম্মদ আজহারউদ্দিনের দলের হাত ধরে শুরু হয়েছিল ইতিহাস লেখা। ২০২৩ সালের ১৪ অক্টোবর সেই ইতিহাসের অষ্টম অধ্যায় যোগ করল রোহিত শর্মার দল। আরও একটা বিশ্বকাপ এবং আরও এক বার পাকিস্তানের হার। বিশ্বকাপের ২২ গজে বরাবরের মতোই আমদাবাদেও ভারতের বিরুদ্ধে সুবিধা করতে পারল না পাকিস্তান। তাদের ইনিংস শেষ হয় ১৯১ রানে। জবাবে ৩০.৩ ওভারে ভারত করল ৩ উইকেটে ১৯২ রান। রোহিতেরা জিতলেন ৭ উইকেটে।
প্রথমে ব্যাট করে পাকিস্তান ভারতের সামনে জয়ের জন্য ১৯২ রানের লক্ষ্য রাখেন। বিশ্বকাপে ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের এই রান তৃতীয় নিম্নতম। জয়ের জন্য সহজ লক্ষ্য পেয়ে আগ্রাসী মেজাজে শুরু করেন রোহিতেরা। শাহিন শাহ আফ্রিদিকে প্রথম বলেই চার মারেন রোহিত। তা দেখে উৎসাহিত হয়ে ওঠেন এ দিনই বিশ্বকাপে অভিষেক হওয়া শুভমন গিলও। বড় রান না পেলেও তাঁর ১১ বলে ১৬ রানের ইনিংসে ডেঙ্গির দুর্বলতার ছাপ পাওয়া যায়নি। শাহিন তাঁকে দ্রুত আউট করলেও পাকিস্তানের সুবিধা হয়নি কিছু। উইকেটের অন্য প্রান্তে রোহিত এদিনও আফগানিস্তান ম্যাচের মেজাজেই ছিলেন। রশিদ খানদের হারানোর পর তিনি বলেছিলেন, তাঁদের কাছে আফগানিস্তান যা, পাকিস্তানও তা। তা যে শুধু মুখের কথা নয় সেটা রোহিত প্রমাণ করলেন ৬৩ বলে ৮৬ রানের অনবদ্য ইনিংসে। এক লাখ ৩০ হাজার দর্শকের সামনে শতরান হাতছাড়া হলেও ম্যাচ হাতছাড়া হতে দিলেন না রোহিত। পাক বোলারদের শাসন করে মারলেন ৬টি চার এবং ৬টি ছক্কা। এ দিন অবশ্য রান এল না বিরাট কোহলির (১৬) ব্যাটেও। তবে দায়িত্ব নিয়ে ব্যাট করলেন শ্রেয়স আয়ার। দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়লেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের অধিনায়ক। শ্রেয়স খেললেন ৬২ বলে ৫৩ রানের অপরাজিত ইনিংস। মারলেন ৩টি চার এবং ২টি ছয়। শেষ বেলায় সঙ্গে পেলেন লোকেশ রাহুলকে। তিনি শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকলেন ১৮ রান করে।
টস জিতে পাকিস্তানকে প্রথমে ব্যাট করার আহ্বান জানান রোহিত। বাবরের দল ইনিংসের শুরুটা খারাপ করেনি। কিন্তু শেষটা করল অত্যন্ত সাধারণ ভাবে। ৩৬ রানে শেষ ৮ উইকেট হারালেন তাঁরা। বাবর এবং মহম্মদ রিজ়ওয়ান মিলে করলেন ৯৯ রান। পাকিস্তানের বাকি ন’জন ব্যাটারের অবদান ৯২ রান। ৪২.৫ ওভারে পাকিস্তানের ইনিংস শেষ হল ১৯১ রানে। ফলে বাবরের রেকর্ড ভাঙার স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে। জবাবে ৩ উইকেটে জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় রান তুলে নিল ভারত।
দুই ওপেনার আবদুল্লা শফিক (২০) এবং ইমাম উল হক (৩৬) ধরে শুরু করার পর আগ্রাসী মেজাজে খেললেন। রান তোলার জন্য তাঁরা বেছে নিয়েছিলেন মহম্মদ সিরাজকে। তাতে অবশ্য বিশেষ ক্ষতি হয়নি। কারণ কেউই বড় রান তুলতে পারলেন না। দুই ওপেনার আউট হওয়ার পর অধিনায়ক বাবর দলের হাল ধরেন রিজ়ওয়ানকে সঙ্গে নিয়ে। দু’জনের জুটি ধারাবাহিক ভাবে প্রতি ওভারে রান তুলে পাক ইনিংস গড়ার কাজে মন দেয়। কিন্তু ৭টি চারের সাহায্যে ৫০ রান করার পরেই মনঃসংযোগ হারান পাক অধিনায়ক। সিরাজের বলে তিনি আউট হওয়ার পর কার্যত তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল পাকিস্তানের ইনিংস। তৃতীয় উইকেটে ৮৩ রানের জুটি ভাঙার পর পরই যশপ্রীত বুমরার বলে আউট হলেন রিজ়ওয়ান। নিজের অর্ধশতরানও পূরণ করতে পারলেন না। ৭টি চারের সাহায্যে তিনি করলেন ৪৯ রান।
পাকিস্তানের বাকি ব্যাটারেরা কার্যত ২২ গজে এলেন এবং সাজঘরে ফিরলেন। সাউদ শাকিল (৬), ইফতিকার আহমেদ (৪), শাদাব খান (২), মহম্মদ নওয়াজ় (৪), হাসান আলি (১২), হ্যারিস রউফদের (২) কেউ উইকেটে দাঁড়ানোর চেষ্টাই করলেন না। এর সুফল পেলেন ভারতীয় বোলারেরা। পাকিস্তানের উইকেটগুলি সবাই মিলে ভাগাভাগি করে নিয়ে নিলেন তাঁরা।
ভারতের সফলতম বোলার বুমরা ১৯ রানে ২ উইকেট নিলেন। ভাল বল করলেন কুলদীপ যাদবও। ৩৫ রানে ২ উইকেট তাঁর। সিরাজ ২ উইকেট পেলেন ৫০ রান খরচ করে। হার্দিক পাণ্ড্য ৩৪ রান দিয়ে ২ উইকেট নিলেন। ৩৮ রানের বিনিয়ম ২ উইকেট রবীন্দ্র জাডেজার। অর্থাৎ, ভারতীয় বোলারেরা পাকিস্তানের উইকেটগুলি ভাগাভাগি করে নিলেন। শুধু ভাগ পেলেন না শার্দূল ঠাকুর!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy