অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে উল্লাস ভারতীয় ক্রিকেটারদের। ছবি: এএফপি।
ইন্দোরে নিজেদের রেকর্ড ধরে রাখল ভারত। সাতটি এক দিনের ম্যাচের সাতটিতেই জিতল তারা। অস্ট্রেলিয়াকে ৯৯ রানে হারিয়ে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই এক দিনের সিরিজ় জিতে গেলেন লোকেশ রাহুলেরা। ব্যাট হাতে শুভমন গিল, শ্রেয়স আয়ার, লোকেশ রাহুল ও সূর্যকুমার যাদব এবং বল হাতে রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও প্রসিদ্ধ কৃষ্ণর পারফরম্যান্স স্বস্তি দেবে ভারতীয় ম্যানেজমেন্টকে। সিরিজ় জিতে যাওয়ায় রাজকোটে নিয়মরক্ষার ম্যাচে নামবে দু’দল। অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে বিশ্বকাপে এক নম্বর দল হিসাবেই খেলতে নামবেন রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিরা।
ভারতের প্রথম একাদশের বেশ কয়েক জন ক্রিকেটার না থাকলেও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে কোনও সমস্যা হয়নি ভারতের। প্রথম ম্যাচে জয়ের ভিত গড়ে দিয়েছিলেন বোলারেরা। দ্বিতীয় ম্যাচে সেই কাজ করলেন ব্যাটারেরা। টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে রুতুরাজ গায়কোয়াড়ের উইকেট তাড়াতাড়ি হারায় ভারত। ৮ রান করে আউট হন তিনি।
গায়কোয়াড় আউট হওয়ার পরে জুটি বাঁধেন শুভমন ও শ্রেয়স। প্রথম ম্যাচে শুরুতেই রান আউট হয়ে গিয়েছিলেন শ্রেয়স। তাই এই ম্যাচে রান করতে মুখিয়ে ছিলেন। প্রথম থেকেই বড় শট মারা শুরু করেন। পাওয়ার প্লে কাজে লাগিয়ে রান তুলতে থাকেন শ্রেয়স। তিনি দ্রুত খেলায় চাপ কিছুটা কম পড়ে শুভমন গিলের উপর। মাঝে বৃষ্টির কারণে কিছু ক্ষণ খেলা বন্ধ থাকলেও শ্রেয়সের রানের গতি কমেনি। আবার খেলা শুরু হওয়ার পরে একই ভাবে বড় শট খেলছিলেন।
শুরুতে একটু শান্ত থাকার পরে হাত খুলে খেলা শুরু করেন শুভমনও। আগের ম্যাচের পরে এই ম্যাচেও অর্ধশতরান করেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার পেসারদের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক শট খেলছিলেন শুভমন। তিনি অর্ধশতরান করার পরেই অর্ধশতরান করেন শ্রেয়সও। অর্ধশতরান করার পরে রানের গতি আরও বাড়ে শ্রেয়সের। ইন্দোরের মাঠ কিছুটা ছোট হওয়ায় সুবিধা হচ্ছিল তাঁর। অস্ট্রেলিয়ার পেসারদের গতি ব্যবহার করে উইকেটের সামনে তিনটি বড় ছক্কা মারেন শ্রেয়স। তাঁকে সঙ্গ দিচ্ছিলেন শুভমন। দু’জনের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছিল। শুভমন প্রথমে অর্ধশতরান করলেও প্রথমে শতরান করেন শ্রেয়স। ৮৬ বলে ১০০ হয় তাঁর। তার পরেই ৯২ বলে নিজের শতরান করেন শুভমন। দু’জনের মধ্যে ২০০ রানের জুটি হয়।
শতরান করার পরেই অবশ্য পায়ে ক্র্যাম্প ধরে শ্রেয়সের। ফলে বড় শট খেলতে গিয়ে ১০৫ রান করে আউট হন শ্রেয়স। শুভমনও বেশি ক্ষণ থাকেননি। ১০৪ রান করে ফেরেন তিনি। উইকেট পড়লেও ভারতের রানের গতি কমেনি। লোকেশ রাহুল, ঈশান কিশন জুটি দ্রুত রান তুলতে থাকেন। ভিত তৈরি হয়ে যাওয়ায় হাত খুলে খেলতে সমস্যা হচ্ছিল না ভারতীয় ব্যাটারদের। ১৮ বলে ৩১ রান করে আউট হন কিশন। ৩৮ বলে ৫২ রান করেন রাহুল। আগের ম্যাচের পরে এই ম্যাচেও অর্ধশতরান করেন ভারত অধিনায়ক।
ভারতের ইনিংসের শেষ দিকে ইন্দোরে দেখা গেল সূর্যকুমারের তাণ্ডব। তিনি নামার আগে মনে হচ্ছিল ৩৫০-র কাছে রান করবে ভারত। কিন্তু সূর্য ভারতকে ৪০০-র কাছে নিয়ে গেলেন। উইকেটের সব দিকে পরিচিত শট খেললেন তিনি। ক্যামেরন গ্রিনকে এক ওভারে পর পর চার বলে চারটি ছক্কা মারলেন। শেষ পর্যন্ত ৩৭ বলে ৭২ রানে অপরাজিত থাকেন ভারতীয় ব্যাটার। ৫০ ওভারে ৫ উইকেটে ৩৯৯ রান করল ভারত।
৪০০ রানের লক্ষ্য নিয়ে খেলতে নেমে শুরুতেই চাপে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। দ্বিতীয় ওভারে পর পর দু’বলে ম্যাথু শর্ট ও স্টিভ স্মিথকে ফেরান প্রসিদ্ধ। তৃতীয় উইকেটে ডেভিড ওয়ার্নার ও মার্নাশ লাবুশেনের মধ্যে জুটি হয়। তার পরেই বৃষ্টিতে খেলা বেশ কিছু ক্ষণ বন্ধ থাকে। ফলে ওভার কমে। অস্ট্রেলিয়ার লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৩ ওভারে ৩১৭ রান। প্রায় অসম্ভব লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে লড়াই করছিলেন ওয়ার্নার। অর্ধশতরান করেন তিনি।
মাঝের ওভারে নিজের স্পিনের জাদু দেখান অশ্বিন। কেন তিনি বিশ্বকাপের দলে ঢোকার দাবিদার তা আরও এক বার প্রমাণ করলেন ভারতীয় অফ স্পিনার। লাবুশেনকে ২৭ ও ওয়ার্নারকে ৫৩ রানে ফিরিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে জোড়া ধাক্কা দেন অশ্বিন। আউট করেন জশ ইংলিশকেও। অ্যালেক্স ক্যারেকে ফেরান রবীন্দ্র জাডেজা। ভারতের স্পিন জুটির সামনে সমস্যায় পড়ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটারেরা।
বৃষ্টি হওয়ায় যেন বদলে গিয়েছিল ইন্দোরের পিচ। স্পিনারদের বল ঘুরছিল। তার ফলে আরও সমস্যায় পড়েন অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটারেরা। একের পর এক উইকেট পড়ছিল। ভারতের জয় ছিল সময়ের অপেক্ষা। শেষ দিকে শন অ্যাবট বেশ কয়েকটি বড় শট খেলে অর্ধশতরান করেন। হারের ব্যবধান কমালেও দলকে বাঁচাতে পারেননি তিনি। এই হারের ফলে টানা পাঁচটি এক দিনের ম্য়াচ হারল অস্ট্রেলিয়া। দক্ষিণ আফ্রিকা ও ভারতের কাছে সিরিজ় হেরে বিশ্বকাপ খেলতে নামবে পাঁচ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy