আইপিএল ট্রফি। —ফাইল চিত্র।
ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি লিগের দাপটে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে তৈরি হয়েছে আশঙ্কা। ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি লিগের সংখ্যা আরও বাড়লে আন্তর্জাতিক ম্যাচের জন্য ক্রিকেটার পাওয়া নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বাঁচাতে দু’টি নতুন নিয়ম চালু করতে পারে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল।
ক্রিকেট কর্তাদের আশঙ্কা বাড়িয়েছেন ইংল্যান্ডের জেসন রয়। কলকাতা নাইট রাইডার্সের ব্যাটার আমেরিকায় ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি লিগ খেলার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন নাইট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। সারা বছরের জন্য জেসনের সঙ্গে চুক্তি করেছেন নাইট কর্তৃপক্ষ। তাতে বিশ্বের যে সব লিগে নাইট কর্তৃপক্ষের দল রয়েছে, সেই সব প্রতিযোগিতায় খেলবেন জেসন। জাতীয় দলে তাঁকে নিতে হলে নাইট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আগাম অনুমতি নিতে হবে ইংল্যান্ডের ক্রিকেট বোর্ডকে (ইসিবি)। লোভনীয় আর্থিক প্রস্তাব পেয়ে ইসিবির বার্ষিক চুক্তি থেকে বেরিয়ে এসেছেন জেসন। ইংল্যান্ডের জোফ্রা আর্চার, মইন আলিদের কাছেও এমন প্রস্তাব রয়েছে আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজ়িগুলির।
জেসনের সঙ্গে নাইট কর্তৃপক্ষের চুক্তির পর মনে করা হচ্ছে, ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ হতে পারে ফুটবলের মতো। ইউরোপের প্রথম সারির ক্লাবগুলি যেমন ফুটবল নিয়ন্ত্রণ করে, তেমনই ক্রিকেটের ক্ষেত্রে হতে পারে টি-টোয়েন্টি লিগের ফ্র্যাঞ্চাইজ়িগুলির ভূমিকা। এমন পরিস্থিতি তৈরি হওয়া রুখতে দু’টি নতুন নিয়ম আনতে চলেছে আইসিসি।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বাঁচাতে আইসিসির ভরসা অবশ্য আইপিএলের নিয়মই। ইংল্যান্ডের সংবাদপত্র ‘দ্য টেলিগ্রাফ’-এর দাবি অনুযায়ী, দু’টি নিয়ম প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছে আইসিসি। এক, কোনও ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি লিগে প্রথম একাদশে চার জনের বেশি বিদেশি ক্রিকেটারকে রাখা যাবে না। আইপিএলের নিয়ম কার্যকর হবে সব ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি লিগে। দুই, কোনও বিদেশি ক্রিকেটারকে সই করালে ফ্র্যাঞ্চাইজ়িগুলিকে সংশ্লিষ্ট দেশের ক্রিকেট বোর্ডকে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দিতে হবে। যা সেই ক্রিকেটারের চুক্তির অঙ্কের অন্তত ১০ শতাংশ হবে। আইসিসি কর্তাদের আশা, এই দুই নিয়ম আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে সুরক্ষিত রাখবে।
আইপিএলে প্রথম থেকেই প্রথম একাদশে সর্বোচ্চ চার জন বিদেশি ক্রিকেটারকে রাখা যায়। কিন্তু বিশ্বের সর্বত্র ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি লিগগুলির নিয়ম এক নয়। যেমন সংযুক্ত আরব আমিরশাহির টি-টোয়েন্টি লিগে ন’জন করে বিদেশি ক্রিকেটারকে প্রথম একাদশে রাখতে পারে ফ্র্যাঞ্চাইজ়িগুলি। অর্থাৎ, বিদেশি ক্রিকেটারদের উপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল আমিরশাহির লিগ। এই ব্যবস্থা পছন্দ নয় আইসিসি কর্তাদের। তাঁদের যুক্তি, একটি লিগে এত বিদেশি ক্রিকেটার যুক্ত থাকলে, সে সময় আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজন কঠিন হবে। তৈরি হবে অচলাবস্থা।
কিছু দিন আগে ইসিবির তরফে আইসিসিকে বলা হয়েছে, পরিস্থিতি যে দিকে যাচ্ছে তাতে ফ্র্যাঞ্চাইজ়িগুলিই শুধু লাভবান হবে। দেশের বোর্ডগুলির করার কিছু থাকবে না। ইসিবি প্রধান ইয়ান গোল্ড বলেছেন, ‘‘ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি লিগের ধারণা অন্য রকম। ক্রিকেটারদের আয়ের সুযোগ অনেক বেশি। অথচ ক্রিকেটার গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তাদের কোনও ভূমিকা নেই। এই কাজটা করে বোর্ডগুলোই। নতুন ক্রিকেটার উঠে না এলে ক্রিকেট কী করে থাকবে? ক্রিকেটার তৈরি করতে বোর্ডগুলোর যথেষ্ট খরচ হয়। ফ্র্যাঞ্চাইজ়িগুলো ক্রিকেটের আসল লাভ নিয়ে চলে গেলে আমরা কী ভাবে চলব?’’
এই চলার পথ খুঁজছেন আইসিসি কর্তারা। ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি লিগ এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেট যাতে সমান্তরাল ভাবে চলতে পারে সেই চেষ্টা করছেন তাঁরা। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে ফ্র্যাঞ্চাইজ়িগুলির নিয়ন্ত্রণ মুক্ত রাখাও লক্ষ্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy