পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপরে জঙ্গি হামলার পর গোটা ভারতেই শোকের ছায়া। ক্রিকেটার থেকে অভিনেতা, বিভিন্ন খ্যাতনামীরাই শোকবার্তা পোস্ট করেছেন। এ বার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফকে আক্রমণ করে বসলেন সে দেশেরই প্রাক্তন ক্রিকেটার দানিশ কানেরিয়া। তাঁর দাবি, শরিফের জন্যই পাকিস্তানে এত বাড়াবাড়ি হয়েছে জঙ্গিদের।
পহেলগাঁওয়ের ঘটনার পরেই সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে কানেরিয়া লিখেছেন, “কেন এমন হয় যে ওরা কখনও স্থানীয় কাশ্মীরিদের আক্রমণ না করে ধারাবাহিক ভাবে হিন্দুদের আক্রমণ করে— সে কাশ্মীরি পণ্ডিতই হোক বা ভারতের কোনও প্রান্তের হিন্দুই হোক। কারণ সন্ত্রাস যতই ছদ্মবেশে হোক না কেন, একটাই দর্শন অনুসরণ করে। তার জন্য গোটা বিশ্বকে মূল্য চোকাতে হচ্ছে।”
পরে আবার একটি পোস্ট করেন তিনি। সেখানে সরাসরি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে দায়ী করেন। লেখেন, “যদি পহেলগাঁও জঙ্গি হামলায় পাকিস্তানের কোনও ভূমিকা না-ই থাকে, তা হলে কেন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ এখনও নিন্দা করলেন না? কেন আপনাদের সেনাবাহিনী হঠাৎই জেগে উঠেছে? আসলে ভিতরে ভিতরে আপনারা সত্যিটা জানেন— আপনারাই জঙ্গিদের আশ্রয় দিচ্ছেন এবং লালনপালন করছেন। লজ্জা হওয়া উচিত।”
কানেরিয়ার এই বক্তব্যের বিশেষ তাৎপর্য আছে। কারণ অনিল দলপতের পরে তিনি পাকিস্তানের প্রথম হিন্দু ক্রিকেটার। ৬১টি টেস্ট খেলা এই ক্রিকেটার আগেও পাকিস্তানের ক্রিকেট নিয়ে অভিযোগ করেছিলেন। গত মাসেই তিনি বলেছিলেন, তাঁর কেরিয়ার শেষ করে দেওয়া হয়েছিল। এখন আমেরিকায় থাকা কানেরিয়ার মূল অভিযোগ ছিল শাহিদ আফ্রিদির বিরুদ্ধে। এটাও জানিয়েছিলেন, সেই সময় তিনি শুধু ইনজামাম উল হককে পাশে পেয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “পাকিস্তানে আমাদের আলাদা চোখে দেখা হত। আমার কেরিয়ার শেষ করে দেওয়া হয়েছিল। কখনও আমাকে সম্মান দেওয়া হয়নি। আলাদা ভাবে দেখা হত বলেই এখন আমি আমেরিকায় থাকি।”
আরও পড়ুন:
আফ্রিদি যে তাঁকে ধর্ম পরিবর্তন করতে বলেছিলেন, সে কথা জানিয়ে তখন কানেরিয়া বলেছিলেন, ‘‘কেরিয়ারে ভালই খেলছিলাম। কাউন্টি ক্রিকেটও খেলছিলাম। অধিনায়ক হিসাবে ইনজামাম আমাকে খুব সাহায্য করেছে। সব সময় পাশে দাঁড়িয়েছে। শোয়েব আখতারও আমার পাশে ছিল। কিন্তু আফ্রিদি আমাকে বলেছিল ধর্ম পরিবর্তন করতে। বহু বার আমাকে এটা বলেছিল ও। ইনজামাম কখনও এ সব বলত না।’’
কানেরিয়ার এই পোস্ট অবশ্য ভাল ভাবে নিতে পারেননি পাকিস্তানিরা। তারা সমালোচনা করতে থাকেন। তার জবাবে কানেরিয়া জানান, পাকিস্তানের মানুষের প্রতি তাঁর কোনও ক্ষোভ নেই। কারণ পাকিস্তান বরাবর সন্ত্রাসের শিকার হয়েছে। কিন্তু পাকিস্তানের এমন নেতা দরকার, যিনি শান্তির দূত হতে পারেন। জঙ্গিদের আশ্রয় দেওয়া নীরব কোনও নেতা তিনি চান না।”