আরও এক বার ইংল্যান্ডের ‘ঘরশত্রু’ হলেন জোনাথন ট্রট। এক দিনের বিশ্বকাপের পর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও ইংল্যান্ডকে হারিয়ে দিল আফগানিস্তান। আর সেই আফগান দলের কোচ ইংল্যান্ডের প্রাক্তন ক্রিকেটার ট্রট। বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের অঘটনের নেপথ্যে ছিলেন তিনিই। এ বারে পাকিস্তানের মাটিতে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে বিদায়ের কারণ হয়ে রইলেন সেই ট্রট। এ দিকে, ইংল্যান্ডের হারের পরেই সাজঘরে ভেঙে পড়েন শতরানকারী জো রুট। মুখে হাত দিয়ে কাঁদতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।
আফগানিস্তান দলের প্রধান কোচ হলেন ট্রট। ২০২২ সালের জুলাই মাসে দায়িত্ব নিয়েছিলেন। ট্রট দায়িত্ব নেওয়ার পরেই জানিয়ে দিয়েছিলেন, তাঁর অধীনে আফগান ক্রিকেটের ছবিটা বদলাবে। তাঁরা আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলবেন। সেটা খেলতে গিয়ে কিছু ম্যাচ হারতে হতে পারে। তবে খেলার পদ্ধতি বদলাবেন না। সেই পদ্ধতি যে সঠিক, তা আরও এক বার প্রমাণ হয়ে গেল বুধবার।
ইব্রাহিম জ়াদরানেরা বদলে গিয়েছেন ট্রটের হাত ধরেই। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১৭৭ রান করেন তিনি। শুরুতে উইকেট হারালেও কোনও তাড়াহুড়ো করেননি ওপেনার জ়াদরান। মাথা ঠান্ডা রেখে ইনিংস গড়েন। সময় বুঝে বড় শটও খেলেন। জ়াদরান বলেন, “এই ইনিংসটা আমার কাছে খুবই স্পেশ্যাল। এশিয়া কাপে এখানে খেলেছিলাম। তাই পরিবেশের সঙ্গে আমরা পরিচিত। আমি সময় নিয়ে খেলতে চেয়েছিলাম। সেটা পেরেছি। তবে সবচেয়ে খুশি শেষ ক্যাচটা নিয়ে। ওটা আমাদের ম্যাচ জিতিয়েছে।”
আরও পড়ুন:
আফগান দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন হসমতুল্লা শাহিদি। তিনি মনে করিয়ে দিলেন বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে জয়টা অঘটন ছিল না। এ বার তাঁর লক্ষ্য অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ। বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে হেরেই বিদায় নিতে হয়েছিল আফগানিস্তানকে। সেই দলের বিরুদ্ধে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলতে নামার আগে শাহিদি বলেন, “জিতে খুশি। তবে আমরা পরের ম্যাচের দিকে তাকাতে চাই। ২০২৩ সালে আমরা ইংল্যান্ডকে হারিয়েছি। প্রতি দিন আমরা উন্নতি করছি। আজকের ম্যাচটা কঠিন ছিল। আমরা জিতে খুশি। জ়াদরান খুব ভাল খেলেছে। আমার দেখা অন্যতম সেরা ইনিংস। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে আমরা এই ভাবে খেলতে চাই। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে জয় আমাদের আত্মবিশ্বাস দেবে। অস্ট্রেলিয়া ম্যাচই ঠিক করে দেবে কে সেমিফাইনাল খেলবে। সে দিনও আমরা ভাল খেলতে চাই।”
ট্রট বদলে দিয়েছেন আফগানদের মানসিকতাই। রশিদ খান নির্ভরতা কাটিয়ে ফেলেছে তারা। এখন ম্যাচ জেতানোর জন্য একাধিক ক্রিকেটার রয়েছে দলে। রশিদ ব্যর্থ হলেও চিন্তা করতে হয় না। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে জয় আরও এক বার সেটাই বুঝিয়ে দিল।
সাদা বলের ক্রিকেটে গত কয়েক বছর ইংল্যান্ড যাঁর নেতৃত্বে ভাল খেলেছে, সেই জস বাটলার নিশ্চিত নন আর অধিনায়ক থাকবেন কি না। তিনি বলেছেন, “আবেগপ্রবণ হয়ে এখন কোনও সিদ্ধান্ত নিতে চাই না। তবে কিছু হলে আপনারাই সবার আগে জানতে পারবেন। কিছু সময় নেওয়ার পর যেটা ঠিক মনে হবে সেটাই করব।”
তিনি আরও বলেন, “নিজেকে নিজেই প্রশ্ন করব, আমার জন্য সমস্যা হচ্ছে না কি আমিই সমাধানের কারণ? ফলাফল আমাদের পক্ষে যায়নি। তাই সব সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে হবে আমাদের।”