জল্পনা: এই শরীর ফিরে পেতেই মরিয়া হয়ে ওঠেন ওয়ার্ন। ছবি: টুইটার।
ওজন কমানোর দিকে ঝুঁকেছিলেন। ফিরতে চেয়েছিলেন আগের মতো পেশিবহুল চেহারায়। তার জন্য তরল খাবারই নিতে শুরু করেছিলেন। সেই রোগা হওয়ার এই প্রক্রিয়া চলার মধ্যই আকস্মিক হৃদরোগ কেড়ে নিয়ে গিয়েছে শেন ওয়ার্নকে।
সম্প্রতি তাঁর একটি ছবি গণমাধ্যমে পোস্ট করে ওয়ার্ন লিখেছিলেন, ‘‘গত ১০ দিন ধরে ওজন কমানোর প্রচেষ্টা চলছে। কয়েক বছর আগে চেহারা যে রকম ছিল, সেই চেহারায় ফিরতে হবে জুলাইয়ের মধ্যে। এগিয়ে চলো!’’
শুক্রবার তাইল্যান্ডের রিসর্টে ছুটি কাটাতে গিয়ে ওয়ার্নের আকস্মিক হৃদরোগে মৃত্যুর পরে তাঁর ম্যানেজার জেমস এরস্কাইন জানিয়েছেন, প্রয়াত লেগস্পিনার সম্পতি ওজন কমিয়ে আগের ফিটনেস ফিরে পেতে নতুন খাদ্যতালিকা মেনে চলছিলেন, যেখানে ওয়ার্ন দু’সপ্তাহ ধরে কেবল তরল খাদ্যই খাচ্ছিলেন। জানা গিয়েছে, মৃত্যুর কয়েক দিন আগে থেকেই ওয়ার্ন আগের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি ঘামছিলেন। নতুন এই খাদ্যতালিকা মেনে চলার ফলে ক্যালরি গ্রহণ হওয়ার পাশাপাশি অতিরিক্ত ফ্যাট ঝরে যাচ্ছিল। যার ফলে ওজন কমবে।
ম্যানেজারের কথায়, ‘‘এ রকম অদ্ভুত খাদ্যগ্রহণ করছিল ওয়ার্ন গত ১৪ দিন ধরেই। দিনে তিন-চার বার তরল খাদ্য নিত। সে দিন মোটে এক বার খেয়েছিল।’’ যোগ করেছেন, ‘‘শক্ত খাবার বলতে সাদা বান রুটিতে মাখন বা লাসাঞ্জের পুর ভরে খেত, না হলে কালো ও সবুজ রংয়ের বিশেষ জুস খেত। তবে ধূমপান বাদ যেত না। কী কারণে ওয়ার্নের মৃত্যু হয়েছে, তা নিয়ে কোনও ধারণা নেই। আমার মনে হয়, ওর প্রবল হৃদরোগ হয়েছিল।’’
অতিরিক্ত ওজন বয়ে বেড়ানো ওয়ার্নের জীবনের একটা সমস্যা। কিন্তু তার জন্য কোনও বিশেষ কোনও খাদ্য বা ওষুধ নেওয়ার কথা সব সময়েই অস্বীকার করে এসেছেন তিনি। এখন প্রশ্ন উঠছে, তরল খাবার কী ভাবে দেহে প্রভাব ফেলে? প্রধানত তরল খাবারে জুসের সঙ্গে খনিজ পদার্থ ও ভিটামিন সমৃদ্ধ থাকে। প্রোটিন ও ফ্যাট থাকে না। এমনকি কোনও তন্তুজাতীয় পদার্থও থাকে না। পুষ্টি বিশেষজ্ঞদের মতে, যে খাবারে প্রয়োজনীয় উপাদানের ভারসাম্য থাকে না, তা দীর্ঘ সময়ের জন্য কার্যকর হয় না। খাবার অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণ করে ডায়েট করলে মহিলাদের ক্ষেত্রে রক্তাল্পতা এবং সকলের ক্ষেত্রেই পেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এমনকি দেহের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে সাধারণ সময়ের বেশি কাজ করতে হয়। হৃদপিণ্ডও একটি পেশি। যাকে শারীরবিজ্ঞানের ভাষায় হৃদপেশি বলা হয়।
এ ছাড়াও কেবল তরল খাবার খেলে মাথা ব্যথা, ঝিমুনি ভাব, সারাক্ষণ দুর্বলতা, ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হয়। সে কারণেই শারীরবিশেষজ্ঞেরা বৈচিত্র ও ভারসাম্যযুক্ত পুষ্টিগুণসম্পন্ন খাবার দিতেই পছন্দ করেন। যার কারণেই ফল, শাকসবজি, দানা শষ্য, বিনস, বাদামজাতীয় খাবার খেতে বলেন। ব্যায়ামও করতে হয়। যা উপেক্ষা করেই এই বিশেষ খাদ্যতালিকা মেনে এগোচ্ছিলেন কিংবদন্তি স্পিনার।
ওয়ার্ন জোর দিয়েছিলেন এই তরল খাবার গ্রহণে। ফলে সমস্যা তাঁর হতে পারে বলেই মনে করছেন চিকিৎসকেরা। ওয়ার্ন এর আগে বলেছিলেন করোনা সংক্রমণ হওয়ার পরে দীর্ঘদিন তিনি ভেন্টিলেটরে ছিলেন। গত বছর অগস্টে দু’ধাপে প্রতিষেধক নেওয়ার পরেও ওয়ার্নের করোনা হয়েছিল। পরে যদিও বলেছিলেন, ‘‘আমার সে সময়ে কোনও শ্বাসকষ্ট বা সে রকম কোনও সমস্যা হয়নি। ভেন্টিলেশনে ছিলাম যাতে দীর্ঘদিন করোনার ফলে পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া সইতে না হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy