ইডেনের পিচ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। প্রথম ম্যাচে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে হারের পরই অজিঙ্ক রাহানে সাংবাদিক বৈঠকে বলেছিলেন, স্পিন-সহায়ক পিচ হলে ভাল হয়। যদিও ইডেনের পিচ প্রস্তুতকারক সুজন মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, কলকাতা নাইট রাইডার্সের তরফে তাঁর কাছে কোনও আবেদনই করা হয়নি।
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের নিয়ম অনুযায়ী আইপিএলে কোনও দলই পিচ কেমন হবে তা নির্ধারণ করতে পারে না। ইডেনের পিচ প্রস্তুতকারক জানিয়েছেন, তাঁর কাছে কেকেআর কোনও আবেদনও করেনি। আনন্দবাজার ডট কম-কে সুজন বললেন, “পিচ নিয়ে কেন বিতর্ক হচ্ছে বুঝতে পারছি না। কেকেআর তো আমাকে কিছু বলেনি। কেমন পিচ হবে তা নিয়েও কথা হয়নি। রাহানে আমার ছেলের মতো। ওর সঙ্গে কথা হচ্ছিল। বলছিল পিচ থেকে স্পিনারেরা আরও সাহায্য পেলে ভাল হয়। তবে সেটা নিছকই মজা করে।”
২২ মার্চ ইডেনে খেলা ছিল। কলকাতা বনাম বেঙ্গালুরু ম্যাচ দিয়েই শুরু হয়েছিল এ বারের আইপিএল। সেই ম্যাচে হেরে যায় কলকাতা। প্রথমে ব্যাট করে কেকেআর ১৭৪ রান করেছিল। আরসিবি-র স্পিনার ক্রুণাল পাণ্ড্য নিয়েছিলেন তিন উইকেট। কেকেআরের হয়ে খেলে যাওয়া স্পিনার সূযশ শর্মা আরসিবি-র হয়ে একটি উইকেট নিয়েছিলেন। তাঁদের দাপটে ১৭৪ রানে আটকে গিয়েছিল কলকাতা। আরসিবি-র স্পিনারেরা দাপট দেখালেও কেকেআরের বরুণ চক্রবর্তী, সুনীল নারাইনেরা সে ভাবে দাগ কাটতে পারেননি।
আরও পড়ুন:
ইডেনে কলকাতার পরের ম্যাচ ৩ এপ্রিল। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে রয়েছে সেই ম্যাচ। বুধবার গুয়াহাটিতে রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে খেলেছিল কেকেআর। বৃহস্পতিবার তারা চলে যাবে মুম্বইয়ে। সেখানে সোমবার মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে খেলবে কেকেআর। ওই ম্যাচ খেলে মঙ্গলবার কলকাতায় ফিরবেন রাহানেরা। খেলতে নামবেন বৃহস্পতিবার। সুজন বললেন, “কেকেআর ফিরলে পিচ নিয়ে কথা বলব। যদিও তখন খুব বেশি সময় থাকবে না পিচে বদল করার জন্য।”
বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে হারের পর সাংবাদিক বৈঠকে এসে রাহানে বলেছিলেন, “অবশ্যই চাইব ঘরের মাঠের পিচ স্পিন-সহায়ক হোক। তবে কোনও অভিযোগ নেই। গত দু’দিন ধরে আচ্ছাদনের নীচে ছিল পিচ। আর্দ্রতা ছিল পিচে, যা খুব ভাল কাজে লাগিয়ে গেল (জস) হেজ়লউড। আমাদের দলের শক্তি যখন স্পিনারেরা, তখন অবশ্যই চাইব ভবিষ্যতে যেন পিচ থেকে ওরা সাহায্য পায়।”

(বাঁ দিকে) ইডেনের পিচ প্রস্তুতকারক সুজন মুখোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
২০২৩ সালেও ইডেনের পিচ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। সেই বছর কেকেআরের অধিনায়ক ছিলেন নীতীশ রানা। তিনিও স্পিন-সহায়ক পিচ চেয়েছিলেন। কিন্তু সুজন সেই দাবি মানতে চাননি। তিনি ইডেনের পিচ পেস সহায়কই রেখেছিলেন। ব্যাটারেরাও সাহায্য পেয়েছিলেন সে বার। একাধিক বার ২০০-র উপরে রান উঠেছিল। এ বারের পিচেও রান হবে বলে দাবি সুজনের। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে ইডেনের পিচ নিয়ে কেকেআর খুশি হতে না পারলেও ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের তরফে আইপিএলে সেরা মাঠের পুরস্কার পেয়েছিল ইডেন।
ইডেনের পিচ নিয়ে বিতর্ক উস্কে দিয়েছেন ধারাভাষ্যকার সাইমন ডুল এবং হর্ষ ভোগলে। যদিও তাঁদের বক্তব্যকে গুরুত্ব দিতে নারাজ সুজন। ডুল বলেছিলেন, “যদি পিচ প্রস্তুতকারক কথা শুনতে না চায় তা হলে কেকেআরের উচিত ইডেন থেকে কেন্দ্র সরিয়ে ফেলা। পিচ প্রস্তুতকারকের কাজ নিজের মতামত দেওয়া নয়। দলের চাহিদা মেনে কাজ করা। সেই জন্য তাকে টাকা দেওয়া হয়। মতামত দেওয়ার জন্য হয় না।” ভোগলে বলেছিলেন, “যদি আমি কেকেআরে থাকতাম, তা হলে খুব হতাশ হতাম। আমি তো ১২০ রানের পিচ চাইছি না। আমি চাইছি এমন একটা পিচ যেখানে আমার বোলারেরা ম্যাচ জেতাতে পারবে। আমি যেমন ১২০ রানের পিচ চাইছি না, তেমনই ২৪০ রানেরও পিচ চাইছি না। কিন্তু আমার মনে হয়, আইপিএলে প্রতিটা দল ঘরের মাঠের সুবিধা নেয়। এটা তাদের পরিকল্পনার অঙ্গ। কিন্তু কেকেআর সেটা পাচ্ছে না।” সুজন বলেন, “আমি সমাজমাধ্যমে খুব একটা সক্রিয় নই। কে কী বলছে জানি না। তবে ধারাভাষ্যকারেরা কেউ কিছু বললে সেটা নিয়ে ভাবার কোনও প্রয়োজন নেই। কেকেআর ফিরলে ওদের সঙ্গে কথা বলব।”
- ১৮ বছরের খরা কাটিয়ে ট্রফি জিতেছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। প্রথম বার আইপিএল জেতার স্বাদ পেয়েছেন বিরাট কোহলি। ফাইনালে পঞ্জাব কিংসকে ছ’রানে হারিয়েছে বেঙ্গালুরু।
- ট্রফি জেতার পরের দিনই বেঙ্গালুরুতে ফেরেন বিরাট কোহলিরা। প্রিয় দলকে দেখার জন্য প্রচুর সমর্থক জড়ো হয়েছিলেন চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে। সেখানে হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১১ জনের। আহত ৫০-এরও বেশি। ঘটনাকে ঘিরে দায় ঠেলাঠেলি শুরু হয়েছে।
-
১১ মৃত্যুর জের, আইপিএল জয়ের উৎসবে কী কী করা যাবে না, শনিবার ঠিক করবে বোর্ড, আর কী কী নিয়ে আলোচনা?
-
‘লক্ষ লক্ষ মানুষের ভিড় হবে’! বেঙ্গালুরুতে কোহলিদের উৎসবের আগে সতর্ক করেছিল পুলিশই, তবু কেন এড়ানো গেল না দুর্ঘটনা
-
আইপিএলের শেষ পর্বে ছিলেন না, ভারত-পাক সংঘাত, না কি ‘বিশেষ’ কারণে খেলতে আসেননি স্টার্ক?
-
‘ভিড়ের চাপে স্ত্রীয়ের হাত ছুটে যায়’, পদপিষ্টে প্রিয়জন হারিয়ে কথা বলার ভাষা নেই পরিবারের
-
অফিসে খোলা পড়ে ল্যাপটপ, আরসিবি-র অনুষ্ঠান দেখেই ফিরবেন বলেছিলেন, ফিরে এল তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী কামাক্ষীর দেহ