ললিত মোদী। —ফাইল চিত্র।
আইপিএল এখন বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় প্রতিযোগিতা। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) লক্ষ্মীর ভান্ডার। সেই ভান্ডারে কোপ মারার পরিকল্পনা করেছিলেন খোদ আইপিএলের জনক ললিত মোদী। যে খবরে কার্যত ঘুম উড়েছিল বিসিসিআই কর্তাদের। শেষ পর্যন্ত ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) উদ্বেগমুক্ত করেছে তাঁদের।
ইংল্যান্ডের সংবাদপত্র ‘দ্য টেলিগ্রাফ’-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেখানকার ‘দ্য হান্ড্রেড’ প্রতিযোগিতা কিনতে চেয়েছিলেন ললিত। আইপিএলের প্রাক্তন কমিশনার লোভনীয় আর্থিক প্রস্তাব দিয়েছিলেন ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডকে। ভারতীয় ক্রিকেট থেকে বিতাড়িত ললিত আইপিএলকে চ্যালেঞ্জ জানানোর পরিকল্পনা করেছিলেন ‘দ্য হান্ড্রেড’-র মালিকানা কিনে।
সংবাদপত্রটির প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, ‘‘ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের ডিরেক্টর অফ অপারেশনস বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ললিত মোদীর প্রতিনিধি। বিক্রম দ্য হান্ড্রেডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানও। প্রতিযোগিতার চিফ এক্সিকিউটিভ রিচার্ড গোল্ডের সঙ্গেও কথা বলেছেন। ১০ বছরের জন্য দ্য হান্ড্রেডের মালিকানা কেনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন মোদীর প্রতিনিধি। বেসরকারি বিনিয়োগ নিয়ে এসে প্রতিযোগিতার আকর্ষণ বৃদ্ধির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। ইসিবি কর্তারা ললিতের প্রতিনিধির প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে তাঁরা আর আলোচনা চান না বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’
‘দ্য হান্ড্রেড’ ললিত কিনলে আর্থিক ভাবে লাভবান হতে পারত ইসিবি। তবু কেন প্রস্তাব ফিরিয়ে দিলেন ইংল্যান্ডের ক্রিকেট কর্তারা? সূত্রের খবর, ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে সুসম্পর্ক নষ্ট করতে রাজি নন ইসিবি কর্তারা। ‘দ্য হান্ড্রেড’-কে আইপিএলের প্রতিযোগী করে তুলতে চাইছেন না তাঁরা। তাই ললিতের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, প্রতিযোগিতার নিয়ন্ত্রণ হাতছাড়া করতে রাজি হননি তাঁরা। এর আগে ইংল্যান্ডের ব্রিজপয়েন্ট গোষ্ঠী ‘দ্য হান্ড্রেড’-র মালিকানা কিনতে চেয়েছিল। সেই প্রস্তাবও ফিরিয়ে দিয়েছিলেন ইসিবি কর্তারা।
মোদীর প্রতিনিধি ‘দ্য টেলিগ্রাফ’কে বলেছেন, ‘‘এই প্রতিযোগিতায় বিনিয়োগ করার জন্য আমরা বেশ কয়েকটি সংস্থার সঙ্গে কথা বলেছিলাম। ১০ দলের এই প্রতিযোগিতা আর্থিক ভাবে ভাল জায়গায় পৌঁছে যেতে পারত। ১০০ বলের প্রতিযোগিতাটি তেমন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে না। তাই প্রতিযোগিতাটিকে টি-টোয়েন্টিতে পরিবর্তন করারও প্রস্তাব দিয়েছিলাম আমরা।’’
জানা গিয়েছে, ললিতের প্রস্তাব ছিল ‘দ্য হান্ড্রেড’-র দলগুলি বছরে ১ কোটি ডলার বা প্রায় ৮৩ কোটি টাকা খরচ করতে পারবে। আইপিএলের দলগুলি এখন বছরে ৯৫ কোটি টাকা পর্যন্ত খরচ করতে পারে। ১০ বছরে ‘দ্য হান্ড্রেড’-কে ১০ কোটি ডলার বা প্রায় ৮৩০ কোটি টাকার প্রতিযোগিতায় পরিণত করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন ললিত। আইপিএলের প্রাক্তন কমিশনার বলেছেন, ‘‘আমি বিলিয়ন ডলারের নিশ্চয়তা দিয়েছিলাম ইসিবিকে। বিনিয়োগে আগ্রহী বহু মানুষ আমার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। আমি ইসিবিকে প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিছু শর্ত ছিল আমার। ১০০ বলের প্রতিযোগিতা ক্রিকেটপ্রেমীরা সে ভাবে গ্রহণ করছেন না। বলেছিলাম, টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতা করা হোক, দু’টি ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি থাকুক ভারতীয় মালিকানার। বাকি ফ্র্যাঞ্চাইজ়িগুলির মালিকানা থাক ইংল্যান্ডের সংস্থাগুলির হাতে। তাতে ইংল্যান্ডের ক্রিকেটই লাভবান হোত।’’
টি-টোয়েন্টি ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি লিগকে কেন্দ্র করে বিসিসিআইয়ের সঙ্গে সংঘাতে জড়াতে রাজি নন ইসিবি কর্তারা। বিশেষ করে ললিতকে দায়িত্ব দিলে ভারতের সঙ্গে ক্রিকেটীয় সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকতই। তাই প্রস্তাব পাওয়া মাত্র ফিরিয়ে দিয়েছেন ইংল্যান্ডের ক্রিকেট কর্তারা। যা নিশ্চিত ভাবে স্বস্তি দেবে বিসিসিআই কর্তাদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy