রোহিত শর্মা। —ফাইল চিত্র
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারতের ব্যর্থতার পরেই রোহিত শর্মার নেতৃত্ব নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে। প্রাক্তনদের অনেকেই দাবি করেছেন, এ বার অন্য কোনও অধিনায়কের কথা ভাবা উচিত। সাদা বলের ক্রিকেটে রোহিতের পরে যে হার্দিক পাণ্ড্য ভারতের অধিনায়ক হবেন, তা প্রায় নিশ্চিত। কিন্তু লাল বলের ক্রিকেটে? টেস্টে ভারতের পরবর্তী অধিনায়ক কে হবেন? টেস্টে নতুন অধিনায়ক তুলে আনতে কি ব্যর্থ হয়েছে ভারত? তার দায় কি শুধুই নির্বাচকদের?
গত কয়েক বছরে রোহিতের অনুপস্থিতিতে বেশ কয়েক জনকে অধিনায়ক হিসাবে খেলিয়েছে ভারত। যেমন, ওয়েস্ট ইন্ডিজ় সফরে অধিনায়ক হয়েছেন শিখর ধাওয়ান। তেমনই আবার টেস্টে রোহিতের ডেপুটি হিসাবে কখনও লোকেশ রাহুল, কখনও যশপ্রীত বুমরা নেতৃত্ব দিয়েছেন। কিন্তু কাউকেই ধারাবাহিক ভাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। নেতৃত্বের ব্যাটন খুব সাবলীল ভাবে এক জনের হাত থেকে অন্য জনের হাতে যাওয়া উচিত। যেমনটা মহেন্দ্র সিংহ ধোনির হাত থেকে বিরাট কোহলি বা পরে কোহলির হাত থেকে রোহিত পেয়েছেন। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে হার্দিককে ধারাবাহিক ভাবে দায়িত্ব দিয়ে সাদা বলে অধিনায়কের সমস্যা তাও দূর হলেও লাল বলে সেটা থেকেই গিয়েছে।
এখানেই প্রশ্ন উঠছে জাতীয় নির্বাচকদের নিয়ে। তাঁরা কেন এত দিনে তরুণ ক্রিকেটারদের একটা পুল তৈরি করার দিকে মন দিলেন না? দিলীপ বেঙ্গসরকারের মতো প্রাক্তন ক্রিকেটার ও নির্বাচক প্রশ্ন তুলেছেন বর্তমান নির্বাচকদের ক্রিকেট জ্ঞান নিয়ে। তাঁরা আদৌ খেলাটা কতটা বোঝেন তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে বেঙ্গসরকারের। দেশের ক্রিকেটের কিসে ভাল হবে তা বুঝতে না পারলে ও সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা করতে না পারলে ক্রিকেটের উন্নতি হবে না বলেই মনে করেন তিনি।
ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটকে কতটা ব্যবহার করা হচ্ছে, সেই প্রশ্ন উঠছে। রঞ্জি ট্রফি, দলীপ ট্রফি, ইরানি ট্রফির মতো এতগুলি প্রতিযোগিতা চলছে। তাতে এতগুলি দল। সেখান থেকেও তো অধিনায়ক তৈরি করা যায়। দলীপ ট্রফিতে পশ্চিমাঞ্চলের অধিনায়ক করা হয়েছে প্রিয়াঙ্ক পাঞ্চালকে। তিনি এখনও ভারতীয় দলে সুযোগ পাননি। অথচ সেই দলেই রয়েছেন রুতুরাজ গায়কোয়াড়, যিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছেন। তা হলে কেন গায়কোয়াড়কে নেতৃত্ব দেওয়া হল না? তা হলে অন্তত এক জন ক্রিকেটারের নেতৃত্বের অভিজ্ঞতা থাকত। কিন্তু সেটা হচ্ছে না।
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় যখন বিসিসিআইয়ের সভাপতি ছিলেন, তখন তিনি বার বার ঘরোয়া ক্রিকেটের দিকে নজর দেওয়ার কথা বলতেন। জাতীয় দলের কোনও ক্রিকেটার চোট থেকে সুস্থ হয়ে উঠলে তাঁকেও ঘরোয়া ক্রিকেট খেলে ভারতীয় দলে সুযোগ পেতে হত। ঘরোয়া ক্রিকেটকে কি এখন আর ততটা গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। ক্রিকেটার তুলে আনার কারখানার দিকেই যদি নজর না দেওয়া হয় তা হলে সমস্যা তো হবেই।
ভারতে এখন যে চার নির্বাচক রয়েছেন তাঁদের মধ্যে শিবসুন্দর দাস ভারতের হয়ে ২৩টি টেস্ট ও চারটি এক দিনের ম্যাচ খেলেছেন। বাকি তিন জনের মধ্যে সলিল আঙ্কোলা ভারতের হয়ে একটি টেস্ট ও ২০টি এক দিনের ম্যাচ, সুব্রত বন্দোপাধ্যায় একটি টেস্ট ও ছ’টি এক দিনের ম্যাচ খেলেছেন। চতুর্থ নির্বাচক শ্রীধরণ শরথ ভারতের হয়ে কোনও দিন খেলেননি। অথচ নির্বাচক হওয়ার জন্য যাঁরা আবেদন করেছিলেন শোনা গিয়েছিল তাঁদের মধ্যে ভারতের হয়ে অনেক বেশি খেলা ক্রিকেটার ছিলেন। তাঁদের নেওয়া হল না কেন? তা হলে কি দায় পুরোটাই নির্বাচকদের? নাকি গোড়াতেই গলদ রয়েছে। এই ব্যর্থতার দায় কি কিছুটা হলেও বিসিসিআইয়ের নয়!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy