পৃথ্বী শ। —ফাইল চিত্র।
গত সাত বছর দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে আইপিএল খেলেছেন পৃথ্বী শ। এ বার তাঁকে ধরে রাখেনি দিল্লি। আইপিএল নিলামেও তাঁকে কেনেনি কোনও দল। ফলে আগামী মরসুমে আইপিএলে থাকছেন না মুম্বইয়ের ব্যাটার। পৃথ্বীকে ফিরিয়ে না নেওয়ার সিদ্ধান্তে ভুল নেই বলেই মনে করেন দিল্লির অন্যতম কর্ণধার পার্থ জিন্দল। তাঁর বক্তব্য, পৃথ্বীর একটা ধাক্কা দরকার ছিল। পৃথ্বীকে নিয়ে তাঁর আক্ষেপ থাকলেও আফসোস নেই।
এক সময় দেশের অন্যতম প্রতিভা ব্যাটার হিসাবে মনে করা হত পৃথ্বীকে। তাঁর নেতৃত্বে ২০১৮ সালে অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়নও হয়েছিল ভারত। দেশের হয়ে পাঁচটি টেস্ট, ছ’টি এক দিনের ম্যাচ, একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন। টেস্ট অভিষেকেই শতরান করেছিলেন পৃথ্বী। ভাল শুরু করার পরেও ক্রমশ খেলা থেকে হারিয়ে গিয়েছেন মুম্বইয়ের ২৫ বছরের ব্যাটার। এ বার আইপিএলেও দল পাননি প্রতিভাবান ক্রিকেটার।
কেন পৃথ্বীর মতো ব্যাটারকে রাখল না দিল্লি? দলের অন্যতম কর্ণধার জিন্দল বলেছেন, ‘‘জুনিয়র স্তরে পৃথ্বী খুব ভাল ক্রিকেটার ছিল। কিন্তু ও নিজেকে ভুল পথে চালিত করেছে। আমার মনে হয়, আমাদের ঠিক ভাবে বেড়ে ওঠার জন্য একটা ঝাঁকুনি বা ধাক্কার দরকার হয়। সেই ঝাঁকুনি বা ধাক্কাটা আমাদের ঘুম ভাঙায়। কারও কারও কিছুটা বড় হওয়ার পরও ঝাঁকুনি প্রয়োজন। কেউ যখন ছোট থেকে বার বার শুনতে থাকে, সে বিশেষ এক জন খেলোয়াড়, সেই সেরা প্রতিভা, তখন কিছু সমস্যা তৈরি হয়। একটি সংস্থা সচিন তেন্ডুলকর এবং বিরাট কোহলির ছাড়া শুধু ওকেই স্পনসর করে। এটা থেকেই বোঝা যায় ওর সম্পর্কে সকলের ধারণা কেমন ছিল।’’ জিন্দল হতাশার সঙ্গে আরও বলেছেন, ‘‘কেউ ওকে ব্রায়ান লারার সঙ্গে তুলনা করত। কেউ তুলনা করত সচিনের সঙ্গে। ওকে ভবিষ্যতের সেরা ব্যাটার হিসাবে চিহ্নিত করা হত। এমন একটা পরিবেশে বেড়ে উঠেছে পৃথ্বী। মুম্বইয়ের সকলে ওকে নিয়ে ভীষণ আশাবাদী ছিল। এই বিষয়গুলোই সমস্যা তৈরি করেছে। আমার মনে হয় পৃথ্বীর এই ধাক্কাটা দরকার ছিল। গত বছর পর্যন্ত আইপিএলে দল ছিল। মুম্বইয়ের হয়ে সব ধরনের ক্রিকেট খেলছিল। আইপিএল খেলার শুরু থেকেই পৃথ্বী দিল্লিতে ছিল। কিন্তু সেই জায়গাটা ধরে রাখতে পারেনি।’’
জিন্দল অবশ্য মনে করেন না পৃথ্বীর ক্রিকেটজীবন শেষ। বরং এখনও তিনি মুম্বইয়ের ব্যাটারকে নিয়ে আশাবাদী। তিনি বলেছেন, ‘‘পৃথ্বীকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। ক্রিকেটকে আবার ভালবাসতে হবে ওকে। নেট থেকে শুরু করতে হবে। ফিটনেস ভাল করতে হবে। ওকে বুঝতে হবে কী কী ভুল করেছে। আরও শৃঙ্খলাবদ্ধ হতে হবে পৃথ্বীকে।’’
পুরনো পৃথ্বী ফিরে এলে, দিল্লি কি তাঁকে ফিরিয়ে নিতে পারে? দলের অন্যতম কর্ণধার তিনি বলেছেন, ‘‘পৃথ্বীর প্রতিভা নিয়ে সন্দেহ নেই। সকলেই ওর প্রতিভার ঝলক দেখেছে। আমি ওকে পছন্দ করি। আশা করব ও দ্রুত প্রাথমিক বিষয়গুলোর প্রতি যত্নশীল হবে। আবার আগের মতো খেলবে। যে কারণে পৃথ্বীর পরিচিতি, সে ভাবেই ওকে আমরা দেখতে পাব।’’ উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা দিয়ে পথ্বীকে দলে নিয়েছিল দিল্লি। ২০২২ সালে ৭ কোটি ৫০ লাখ টাকায় তাঁকে ধরে রাখেন জিন্দলেরা।
একাধিক বার পৃথ্বীর বিরুদ্ধে উঠেছে বিশৃঙ্খলার অভিযোগ। মাস খানেক আগে মুম্বইয়ের রঞ্জি দল থেকে বাদ পড়েন পৃথ্বী। মুম্বই ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনকে (এমসিএ) দেওয়া রিপোর্টে বলা হয়, পৃথ্বীর শরীরে ৩৫ শতাংশই মেদ। দলে থাকতে হলে কঠোর ফিটনেস ট্রেনিং করে অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে হবে। ফিটনেসের পাশাপাশি ফর্মেও নেই পৃথ্বী। গত বছর রঞ্জি ট্রফির সময়ও তাঁর বিরুদ্ধে শঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ উঠেছিল। মুম্বই দল থেকে বাদ পড়েছিলেন। যদিও সরকারি ভাবে তাঁকে বিশ্রাম দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। এ বার ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেট মরসুম শুরু হওয়ার আগে পৃথ্বী ইংল্যান্ডে গিয়েছিলেন কাউন্টি ক্রিকেট খেলতে। নিজেকে ফিট রাখতে চেয়েছিলেন তরুণ ব্যাটার। নর্দাম্পটনশায়ারের হয়ে প্রথম কয়েকটি ম্যাচে রান পেলেও পরের দিকে আর পারফর্ম করতে পারেননি। নর্দাম্পটনশায়ার কর্তৃপক্ষ ১৫ জনের দল থেকেও তাঁকে বাদ দিয়েছিলেন। মাঠের বাইরেও একাধিক বার ঝামেলায় জড়িয়েছেন পৃথ্বী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy