স্মরণীয়: ট্রেন্ট ব্রিজে সেঞ্চুরি করে সূর্যকুমার। রবিবার। পিটিআই
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ২১৬ রান তাড়া করতে নেমে ৫৫ বলে ১১৭ রানের ইনিংস উপহার দিলেন সূর্যকুমার যাদব। ট্রেন্ট ব্রিজেই জীবনের প্রথম আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি এল অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের ব্যাট থেকে। নিয়মরক্ষার ম্যাচে দল না জিতলেও সেই লড়াই অধিনায়ক রোহিত শর্মাকেগর্বিত করেছে।
মোট ১৪টি চার ও ছ’টি ছয়ের সাহায্যে ইনিংস সাজান সূর্যকুমার। যা দেখে ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এসে রোহিত বলেছেন, ‘‘অল্পের জন্য আমরা ম্যাচ জিততে না পারলেও অসাধারণ চেষ্টা ছিল ছেলেদের। বিশেষ করে, সূর্যকুমারের লড়াইয়ের তুলনা হয় না। ওকে দেখে আমি সত্যি গর্বিত।’’ যোগ করেন, ‘‘সূর্যকুমারকে বেশ কয়েক বছর ধরেই কাছ থেকে দেখছি। ও এই ফর্ম্যাটটা খুবই পছন্দ করে। ওর শটে যা বৈচিত্র আছে, তা অনেকেরই নেই। ধীরে ধীরে আরও উন্নত হয়েছে। শট নির্বাচনে আর কোনও খামতি নেই। যতই চাপ আসুক, ও নিজের খেলাটাখেলে দেয়।’’ মুগ্ধ সচিন তেন্ডুলকরও। তিনি টুইট করেছেন, ‘‘অসাধারণ ইনিংস, সূর্য। পয়েন্টের ওপর দিয়ে স্কুপ শটে ছয় মারাটা এক কথায় দুরন্ত।’’ বীরেন্দ্র সহবাগের টুইট, ‘‘সূর্যের কী তেজ! উজ্জ্বলতম লাগছে। অবিশ্বাস্য সব স্ট্রোক খেলল।’’
রোহিত মনে করেন, ইংল্যান্ডও ব্যাট হাতে ভারতকে চাপে রাখার চেষ্টা করেছে। তিনি বলেছেন, ‘‘ওরা আজ ভাল ব্যাট করেছে। আমাদের চাপে ফেলে দিয়েছিল। আমরা যদিও প্রত্যেক বোলারকে দিয়ে চার ওভার করিয়েছি। দেখে নিতে চেয়েছি, চার ওভারের মধ্যে যদি ওরা ম্যাচে ফিরে আসতে পারে। দল হিসেবে আমাদের আরও তৈরি হতে হবে। যদিও এই সিরিজ়ে দলের পারফরম্যান্সে আমি খুশি। এ রকম একটি ম্যাচ থেকে অনেক শিক্ষা পেলাম।’’
ইংল্যান্ড অধিনায়ক জস বাটলার নিজে রান পাচ্ছেন না। সিরিজ়ও হাতছাড়া হয়েছে। তবে ইংল্যান্ড অধিনায়ক হিসেবে এ দিনই প্রথম ম্যাচ জিতে তিনি কিছুটা স্বস্তিতে। বাটলার বলেছেন, ‘‘খেলে সত্যি খুব ভাল লাগল। আমি ভেবেছিলাম, অনেক বেশি রান করেছি। কিন্তু ভারত এ ভাবে লড়াই করে যাবে, আশা করিনি। সূর্যকুমার অসাধারণ একটি ইনিংস খেলে গেল।’’ এখানেই না থেমে বাটলার বলেন, ‘‘রিস টপলি এই সিরিজ়ের আবিষ্কার। উইকেটের সোজাসুজি বল করতে পারে। গ্লিসনও খুব সুন্দর জায়গায় বল রাখতে পারে। এই দু’জনকে পেয়ে আমরা সত্যি স্বস্তিবোধ করছি।’’
বাটলার জানিয়েছেন, ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বড় শক্তি তাদের অলরাউন্ডাররা। বলেছেন, ‘‘আমাদের দলে বশ কয়েক জন অলরাউন্ডার আছে। ব্যাটিংয়েও গভীরতা প্রচুর। জানি না প্রথম দু’টি ম্যাচে কেন আমরা আশা পূরণ করতে পারলাম না। শেষের আগের ওভারে কাকে বল দেব, বুঝে উঠতে পারছিলাম না। মো (মইন) নিজে বল হাতে তুলে নিয়েছিল। এ রকমই ভয়ডরহীন ক্রিকেটার একটা দলকে শক্তিশালী করে।’’
ম্যাচের সেরা বেছে নেওয়া হয় পেসার টপলিকে। সিরিজ় সেরা ভুবনেশ্বর কুমার। টপলি বলেছেন, ‘‘ব্যাট হাতে দু’দলের পারফরম্যান্সই খুব ভাল ছিল। তবে আমি খুশি হয়েছি এই পুরস্কার পেয়ে। দেশের হয়ে খেলা আমার স্বপ্ন ছিল। দলকে ম্যাচ জেতাতে পেরে আমি আপ্লুত।’’
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে একইসঙ্গে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচ ও সিরিজ় জিতে উঠে অধিনায়ক রোহিত শর্মা জানিয়েছিলেন, তাঁরা ঠিক পথেই এগোচ্ছেন। তবে তিন মাস পরে হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে কোনও ভাবেই তিনি চান না যে ভারতীয় দলে আত্মতুষ্টির মানসিকতা প্রবেশ করুক।
শনিবার এজবাস্টনে জেতার পরেই সিরিজ় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। তখনই রোহিত বলেন, ‘‘আমরা ঠিক পথেই এগোচ্ছি বলে মনে করি। ক্রিকেটের ঠিকঠাক জায়গাগুলোয় সাফল্য পাচ্ছি। এই মুহূর্তে আমার একটাই আশঙ্কা। কোনও ভাবে যেন এই দলটা আত্মতুষ্টিতে না ভোগে।’’ পাওয়ার প্লে-তে দলের আগ্রাসী মানসিকতায় সন্তুষ্ট রোহিতের মন্তব্য, ‘‘আমরা সবাই জানি যে, পাওয়ার প্লে-এর গুরুত্ব কতখানি। তা সে বল বা ব্যাট যা-ই করি না কেন। এখানে দু’টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচেই এই জায়গাটায় আমরা অসাধারণ পারফরম্যান্স করেছি। আমি চাই এই আত্মবিশ্বাস ধরে রেখেই আগামী দিনে আরও এগিয়ে যাক দল।’’
এজবাস্টনে তাঁর দলের ১৭০ রান তোলা প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘‘পিচের কথা মাথায় রেখে বলতেই হবে যে, এই রানটা মোটেই খারাপ নয়। অবশ্য যে কোনও ম্যাচ জিতলেই ভাল-ভাল কথাই শুধু বলা হয়। আমি খুশি দলের আত্মবিশ্বাস দেখে। এ বার সামনের দিকে তাকিয়ে এগোতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy