বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) দল দুর্বার রাজশাহীকে ঘিরে বিতর্ক বেড়েই চলেছে। দলের বাস চালকও ক্ষুব্ধ টাকা না পাওয়ায়। পাওনা আদায় করতে ক্রিকেটারদের কিট ব্যাগগুলি বাসে আটকে রেখে দিয়েছেন। টাকা না পেলে ব্যাগগুলি ফেরত দেবেন না বলে জানিয়েছেন চালক। তিনি এক রকম পণবন্দি করে রেখেছেন সেগুলি।
দুর্বার রাজশাহী কর্তৃপক্ষের আচরণে হতাশ এবং ক্ষুব্ধ দলের বাস চালক মহম্মদ বাবুল। তাঁর অভিযোগ, ‘‘আক্ষেপ এবং লজ্জা দুই লাগছে। আমার পাওনা মিটিয়ে দিলেই ক্রিকেটারদের কিট ব্যাগগুলি দিয়ে দেব। এত দিন পর্যন্ত চুপ ছিলাম। মনে হয়েছিল, টাকা দিয়ে দেবেন রাজশাহী কর্তৃপক্ষ। আর কখনও এই দলের বাস না চালানোর সিদ্ধান্তও নিয়েছিলাম। বাসে দলের প্রায় সব ক্রিকেটারের কিট ব্যাগ রয়েছে। স্থানীয় এবং বিদেশি ক্রিকেটারদের খেলার সরঞ্জামগুলি আটকে রাখার ইচ্ছা নেই। কিন্তু বার বার অনুরোধ করেও লাভ হয়নি। চুক্তির বেশির ভাগ টাকাই বকেয়া রয়েছে। পুরো টাকা না পেলে ব্যাগগুলি ফেরত দেব না।’’
বিপিএলের সেমিফাইনালে উঠতে পারেনি রাজশাহী। আর কোনও ম্যাচ নেই তাদের। তবু দলের বিদেশি ক্রিকেটারেরা হোটেলে আটকে রয়েছেন। রবিবার তাঁরা অভিযোগ করেন, দেশে ফেরার টিকিটের ব্যবস্থা করেননি দল কর্তৃপক্ষ। যদিও পরে দলের মালিক শফিক রহমান জানান, বিদেশি ক্রিকেটারদের ফেরার টিকিটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তার পরও তাঁরা দেশে ফিরতে গিয়ে সমস্যা পড়েছেন কিট ব্যাগ না পাওয়ায়।
এর আগে রাজশাহী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্রিকেটারদের চুক্তি মতো টাকা না দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। বিপিএলের নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিযোগিতা চলাকালীন বেতনের ৭৫ শতাংশ মিটিয়ে দিতে হয়। কিন্তু ক্রিকেটারদের অভিযোগ, ২৫ শতাংশও পাননি তাঁরা। বার বার মালিককে জানিয়েও লাভ হয়নি। ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।
এর আগে টাকা না পাওয়ায় মাঠে নামতে অস্বীকার করেছিলেন রাজশাহীর বিদেশি ক্রিকেটারেরা। ফলে রংপুর রাইডার্সের বিরুদ্ধে ১১জন স্থানীয় ক্রিকেটারকে নিয়ে খেলতে হয়েছিল অধিনায়ক তাসকিন আহমেদকে। এ ছাড়া চট্টগ্রামের হোটেলের বিল না মেটানোয় শফিকের গাড়ি নিয়ে নিয়েছিলেন হোটেলের মালিক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে এবং বাংলাদেশ ক্রিকেটের সম্মানহানী ঘটছে দেখে হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কর্তারা। শফিক নাকি কর্তাদের আশ্বাস দিয়েছিলেন, যত দ্রুত সম্ভব ক্রিকেটারদের বেতন মিটিয়ে দেবেন।
দেখা যাচ্ছে, শুধু ক্রিকেটারদের বেতন বকেয়া রয়েছে এমন নয়। রাজশাহীর মালিক হোটেল, পরিবহণ সংস্থা কাউকেই চুক্তি মতো টাকা দেননি। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি বেশ জটিল। রাজশাহীকে ঘিরে একের পর এক ঘটনায় আদতে মুখ পুড়ছে বিপিএলের।